Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

নোয়াখালীতে সরকারি অস্ত্র দিয়ে প্রতিপক্ষকে হত্যার হুমকি

সেপ্টেম্বর ৪, ২০২১, ০৯:৩৫ এএম


নোয়াখালীতে সরকারি অস্ত্র দিয়ে প্রতিপক্ষকে হত্যার হুমকি

নোয়াখালী সদর উপজেলার পশ্চিম চরউরিয়া গ্রামে ভূমি বিরোধের জের ধরে সরকারি অস্ত্র ব্যবহার করে প্রতিপক্ষ মরহুম মফিজুর রহমানের ছেলে মো. জাকের হোসেনের পরিবারের সদস্যদের প্রাণে হত্যা করে লাশ গুমের হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পুলিশ কন্সটেবল হারুনুর রশিদের বিরুদ্ধে। এ ব্যাপারে ওই কন্সটেবলের বিরুদ্ধে থানায় সাধারণ ডায়েরি করে উল্টো বিপাকে পড়েছেন ভুক্তভোগী পরিবারটি।

ভুক্তভোগী পরিবারের প্রধান মো. জাকের হোসেন জানান, দীর্ঘদিন যাবৎ বড় ভাই আবুল কাশেমের সাথে ভূমির মালিকানা ও বসত ঘরের জায়গা নিয়ে বিরোধ চলে আসছে। সাম্প্রতিক জাকের হোসেনের বতস ঘরের আংশিক জোরপূর্বক কেটে তার ওপর বিল্ডিং নির্মাণ করেন কাশেম ও তার ছেলেরা। 

এ নিয়ে স্থানীয়ভাবে একাধিকবার শালিসি বৈঠক হয়। শালিস বৈঠকের সিদ্ধান্ত না মেনে উল্টো আবুল কাশেম তার বসতঘর চুরি এবং পুত্রবধূ জলি আক্তারকে শ্লীলতাহানীর অভিযোগে ছোট ভাই আবুল কালাম আজাদ, জাকের হোসেনসহ তিনজনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। 

আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য সুধারাম থানা পুলিশকে নির্দেশ দেয়। পুলিশ মামলার তদন্ত শেষে ওই ঘটনার সত্যতা না পেয়ে অভিযুক্তদের চার্জশিটে মামলা থেকে অব্যহতির সুপারিশ করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে বিভিন্ন সময়ে আবুল কাশেমের মেঝ ছেলে পুলিশ সদস্য হারুনুর রশিদ একই বাড়ির সারওয়ার আলম বাবুলের ছেলে জহিরুল ইসলাম রবিনের ফেসবুক ম্যাসেঞ্জারে একাধিকবার চাচা মো.জাকের হোসনে, চাচাতো ভাই সাজ্জাদুর রহমান আরিফ, মিজানুর রহমান বিপ্লবকে প্রাণে হত্যা করে লাশ গুম করার হুমকি দেয়। এতে জাকের হোসেনের পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে।

পুলিশ সদস্য হারুনুর রশিদের অপর এক কল রেকর্ডে শুনা যায়, হারুনুর রশিদ কোটি টাকার মালিক বনে গেছেন। তিনি প্রতিপক্ষ চাচা জাকের হোসেন ও চাচাতো ভাইদের হত্যা করলে তার কিছুই হবে না বলে অহংকার সূচকভাব প্রকাশ করেন। 

হারুন বলেন, সঞ্চিত কোটি টাকা দিয়ে তার স্ত্রী-সন্তানরা স্বাভাবিক জীবন-যাপন করতে পারবে। প্রয়োজনে তাদেরকে (চাচা এবং চাচাতো ভাইদের) আমার ব্যবহৃত সরকারি অস্ত্র এনে হত্যা করবো। ওই কল রেকর্ড প্রকাশের পর এলাকায় চরম সমালোচনা শুরু হয়। 

এলাকাবাসীর প্রশ্ন-বাংলাদেশ পুলিশের একজন কন্সটেবল কিভাবে কোটি টাকার মালিক হয়েছেন? এবং কি করে সরকারি অস্ত্র দিয়ে ব্যক্তিগত বিরোধে মানুষকে হুমকি দেন? এলাকাবাসীর ধারণা নিশ্চয় হারুন চাকরির পাশাপাশি অবৈধ কর্মকান্ডে জড়িত রয়েছেন। তার বিরুদ্ধে প্রশাসনিক ব্যবস্থা ও দুদকের তদন্ত দাবি করেছেন স্থানীয়রা।

ভুক্তভোগী জাকের হোসেন নিজ এবং পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা চেয়ে সুধারাম থানায় গত ২২ আগস্ট সুধারাম মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি অন্তভূক্ত করেছেন। ওই সাধারণ ডায়েরি করার পর গত ২৪ আগস্ট দুপুরে হারুনুর রশিদ নিজে অবরুদ্ধ করার নাটক সাজিয়ে ৯৯৯ ফোন করে বাড়িতে পুলিশ নিয়ে প্রতিপক্ষ জাকের হোসেন ও তার পরবিারের সদস্যদের হয়রানী করার চেষ্টা করেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে হারুনুর রশিদকে অবরুদ্ধ অবস্থায় না পেয়ে তার ওপর ক্ষুব্ধ হন।

জাকের হোসেন ও তার পরিবারের সদস্যদের হত্যার অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে আবুল কাশেমের ছেলে পুলিশ সদস্য হারুনুর রশিদ বিষয়টি এড়িয়ে গিয়ে বলেন আমার কল রেকর্ড আংশিক উপস্থাপন করা হয়েছে এবং আমি কথার প্রসঙ্গে কোটি টাকার মালিকানার কথা বলেছি। আসলে আমার কাছে এত টাকা নাই।

সুধারাম থানার সহকারী পুলিশ পরিদর্শক মিজান উদ্দিন জানান, ৯৯৯ এর ফোন পেয়ে আমি ঘটনাস্থলে গিয়ে কাউকে অবরুদ্ধ পায়নি। পুলিশ সদস্য হারুনুর রশিদের ঘরের সিসিটিভি ফুটেজেও অবরুদ্ধের কোন ঘটনা দেখতে পায়নি। এটা জায়গা-জমি নিয়ে পারিবারিক একটা ধন্ধ। 

সুধারাম মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. শাহেদ উদ্দিন সাধারণ ডায়েরী অন্তভুক্তির বিষয়টি নিশ্চিত করে জানান, জিডির তদন্ত শেষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আমারসংবাদ/এআই