ঢাকা
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,
সেপ্টেম্বর ৬, ২০২১, ০৯:১৫ এএম
নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীতে জারি করা ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিলের চেষ্টা করায় লাঠিপেটা করে মিছিলকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে পুলিশ। এ সময় মিছিলের পাঁচজন ও বিভিন্ন স্থান থেকে আরও ছয়জনসহ ১১ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
সোমবার (৬ সেপ্টম্বর) ল৬টা থেকে ১৪৪ ধারা বাস্তবায়নে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের সঙ্গে মাঠে অবস্থান নেয় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা।
শহরের টাউন হল মোড়ে সোমবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে সাংসদ একরামের ২০-২৫ জন সমর্থক মিছিলের চেষ্টা করে। এসময় পুলিশ লাঠিপেটা করে মিছিলকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ ঘটনায় অন্তত আটজন আহত হন।
আটককৃতরা হলো- সোনাইমুড়ি উপজেলার আলোকপাড়া গ্রামের নুরুল আমিনের ছেলে জাহিদুল ইসলাম (১৯), একই এলাকার খলিলুর রহমানের ছেলে জাহিদ হোসেন (১৮), সোনাইমুড়ি গ্রামেরসুবল রবি দাসের ছেলে বিজয় রবি দাস (১৯), শিমুলিয়া গ্রামের জসিম উদ্দিনের ছেলে ইফরান আহম্মেদ (২০), সেনবাগ উপজেলার ছাতারপাইয়া গ্রামের আবুল বাশারের ছেলে হাবিবুর রহমান (১৮), সদর উপজেলার দাদপুর গ্রামের জহির উদ্দিনের ছেলে বিজয় (১৪), পশ্চিম শরীফপুর গ্রামের বাবুল চৌকিদারের ছেলে মো. রাসেল (২১), পূর্ব এওজবালিয়া গ্রামের জহিরুল হকের ছেলে মো. আরজু (২৫), মুন্সির তালুক গ্রামের আবদুল মান্নানের ছেলে মো. রাসেল (২৯), মাইজদী হাউজিং এলাকার জাহাঙ্গীর আলমের ছেলে মাহফুজুর রহমান (২১) ও চাটখিল উপজেলার দশানী টগবা গ্রামের জহির উদ্দিনের ছেলে মো. জিহাদ (২০)।
এরআগে আওয়ামী লীগের তিন গ্রুপের পাল্টাপাল্টি সমাবেশকে কেন্দ্র করে রোববার নোয়াখালী পৌরসভা এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করে প্রশাসন।
জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উপলক্ষে সোমবার সকাল ১০টায় শহরের টাউন হল মোড়ে সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের উদ্যোগে সমাবেশের ডাক দেয় উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহীন।
একই সময় জেলা আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের সামনে সমাবেশ ডাকেন স্থানীয় সাংসদ একরামুল করিম চৌধুরী। একই সময় নোয়াখালী পৌরসভায়- পৌরসভার আগামী নির্বাচন উপলক্ষে আলোচনা সভা ও র্যালির আয়োজন করেন মেয়র সহিদ উল্যাহ খান সোহেল।
আওয়ামী লীগের ত্রিমুখী সমাবেশ ও আলোচনা সভা সফল করতে রোববার বিকেলে শহরের রশিদ কলোনি থেকে শোভাযাত্রা বের করেন সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শিহাব উদ্দিন শাহীনের সমর্থিত নেতাকর্মীরা। শোভাযাত্রাটি শহরের বড় মসজিদ মোড়ে পৌঁছালে একরাম অনুসারী ও পুলিশ শাহীন অনুসারীদের বাধা দেয়। পরে শাহীন অনুসারীরা পাল্টা পুলিশ এবং একরাম অনুসারীদের ধাওয়া করলে পুলিশ লাঠিপেটা ও রাবার বুলেট ছোঁড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এসময় বেশ কয়েকটি যানবাহন ভাংচুরের ঘটনা ঘটে। শহরের দু'পাশে জটলা বাঁধে কয়েক'শ যানবাহনের।
[media type="image" fid="140597" layout="normal" caption="1" infograph="0" parallax="0" popup="1"][/media]
এদিকে রোববার বিকেলে শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ড এলাকায় মিছিল বের করে নোয়াখালী পৌরসভার মেয়র সহিদ উল্যাহ খান সোহেল অনুসারীরা। এ সময় পুলিশ এবং একরাম সমর্থকরা তাদের বাধা দিলে সেখানে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। সন্ধ্যায় শহরের পৌরবাজার থেকে রশিদ কলোনি এলাকায় প্রধান সড়কে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে শিহাব উদ্দিন শাহীনের সমর্থকরা।
দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও ইট-পাটকেল নিক্ষেপের ঘটনায় পথচারীসহ ছাত্রলীগ যুবলীগের ১৬জন আহত হয়।
পরে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রোববার সন্ধ্যা ৭টায় জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে নোয়াখালী পৌর এলাকায় সোমবার সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করা হয়।
নোয়াখালীর পুলিশ সুপার শহিদুল ইসলাম জানান, আওয়ামী লীগের একটি পক্ষ ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে মিছিলের চেষ্টা করলে পুলিশ তা পণ্ড করে দেয়। ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করায় ১১জনকে আটক করা হয়েছে।
জেলা ম্যাজিস্ট্রেট ও জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ খোরশেদ আলম খান জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে ১৪৪ ধারা বাস্তবায়নে নোয়াখালী পৌর এলাকায় দুইজন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে ১৬ জন র্যাব ও শতাধিক পুলিশ টহলে ছিলো। এছাড়া উপজেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানায়, আওয়ামী লীগের জেলা কমিটি বিলুপ্তি ও নতুন আহ্বায়ক কমিটি গঠনের খবরে উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে নোয়াখালী। পুরোনো কমিটি থেকে জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও এমপি একরামুল করিম চৌধুরী বাদ পড়ছেন এমন সংবাদ জেলায় ছড়িয়ে পড়লে দলীয় নেতাকর্মীরা নড়েছড়ে বসেন রাজনীতির হিষ্যায়।
এতে তিনগ্রুপে বিভক্ত হয়ে পড়ে নেতাকর্মীরা। দলীয় কর্মীদের বিভক্তিতে নোয়াখালীর রাজনীতি আবারো উত্তপ্ত হয়ে উঠে। দূত জেলা আওয়ামী লীগের নতুন কমিটি ঘোষণায় এই উত্তপ্ত পরিস্থিতির সমাধন হতে পারে বলে ধারণা স্থানীয়দের।
আমারসংবাদ/এআই
