Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪,

কলারোয়ায় ইউপি নির্বাচনী সহিংসতা, আটক ৪

কলারোয়া (সাতক্ষীরা) প্রতিনিধি

সেপ্টেম্বর ৬, ২০২১, ১১:৪৫ এএম


কলারোয়ায় ইউপি নির্বাচনী সহিংসতা, আটক ৪

আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সাতক্ষীরার কলারোয়ায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ভুট্টোলাল গাইন ও তার কর্মীদের উপর হামলার ঘটনা ঘটেছে। অভিযোগের তীর সরাসরি প্রতিপক্ষ আনারস প্রতীকের প্রার্থী ও কলারোয়া উপজেলা আ’লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন হাবিল ও মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী কেঁড়াগাছি ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মারুফ হোসেনের দিকে।

রোববার (৫ সেপ্টেম্বর) রাতে উপজেলার কেঁড়াগাছি ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামের উত্তরপাড়া মাদ্রাসা মোড় এলাকায় তাদের নেতৃত্বে সংঘবদ্ধভাবে ওই হামলার ঘটনা ঘটে বলে আহতদের অভিযোগ।

হামলায় কেঁড়াগাছি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ও আসন্ন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ভুট্টোলাল গাইন ও তার কয়েকজন কর্মী-সমর্থক গুরুতর জখম হয়েছেন। আহতদের মধ্যে ৮ জনকে কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং গুরুতর আহত অপর দুইজনকে সাতক্ষীরায় প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানা গেছে।

আহতরা হলেন-মোছলেউদ্দীন গাইনের পুত্র নৌকার প্রার্থী ভুট্টোলাল গাইন (৫৫), কিতাবুদ্দীন গাজীর পুত্র সিরাজুল গাজী (৪৫) ও ফারুক গাজী (৫৭), শাহজাহান গাজীর স্ত্রী আনেছা (৫৫), রেজাউল ইসলামের পুত্র সাইদ হোসেন (২৫), আজিজুল সর্দারের পুত্র মন্টু (২৫), আব্দুল আলীর পুত্র আব্দুল বারিক (৫০), গোলাম মোস্তফা গাইনের পুত্র হাবিবুর রহমান (২৬) ও তবিবর গাজীর স্ত্রী বৃষ্টি (১৮), ইউনুস আলীর পুত্র আবু লাহাব (৩০)।

এদের মধ্যে সিরাজুল গাজী ও আনেছা বেগমকে সাতক্ষীরায় রেফার করা হয়েছে। তাদের সবার বাড়ী কেঁড়াগাছি ইউনিয়নের বোয়ালিয়া গ্রামে। সংঘর্ষের ঘটনায় ওই এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে।

এদিকে দলীয় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী ও কর্মীদের উপর ন্যাক্কারজনক হামলা, নির্বাচনী অফিস ভাংচুর এবং দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে আনারস প্রতীকের প্রার্থী ও কলারোয়া উপজেলা আ’লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আফজাল হোসেন হাবিল ও মোটরসাইকেল প্রতীকের প্রার্থী কেঁড়াগাছি ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক মারুফ হোসেনকে দল থেকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। 

কেন্দ্রীয় আ’লীগের খুলনা বিভাগীয় দায়িত্ব প্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হকের নির্দেশক্রমে সাতক্ষীরা জেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব মোঃ নজরুল ইসলাম কর্তৃক স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে এ কথা জানানো হয়েছে।

কলারোয়া উপজেলা আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক আলীমুর রহমান বলেন, উপজেলা আ’লীগের সভাপতির আশির্বাদপুষ্ট উপজেলা আ’লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও কেঁড়াগাছি ইউপি চেয়ারম্যান আফজাল হোসেন হাবিল (আনারস প্রতীকের প্রার্থী) ও অপর বিদ্রোহী চেয়ারম্যান প্রার্থী (মোটর সাইকেল প্রতীক) মারুফ হোসেন (কেঁড়াগাছি ইউনিয়ন আ’লীগের সাধারণ সম্পাদক) আওয়ামী লীগের রাজনীতি করেও তারা দলীয় প্রতীক নৌকার বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অবস্থান নিয়ে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন এবং পরাজয় নিশ্চিত জেনে নৌকার বিজয়কে ছিনিয়ে নেওয়ার জন্য এভাবে জঘন্য হামলা চালিয়েছেন। দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে কেন্দ্রীয় নির্দেশে তাদেরকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। 

স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনী প্রচারণাকে কেন্দ্র করে রোববার দুপুরের দিকে বোয়ালিয়ায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মারুফ হোসেনের কর্মীরা নৌকার কর্মীদের সাথে বাগবিতন্ডায় জড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে বিকালে মারুফ হোসেনের কর্মীরা কাকডাঙ্গা মোড়ে নৌকার নির্বাচনী কার্যালয় বন্ধ করে দেয়।

এদিকে, রাত ৮টার দিকে বোয়ালিয়া উত্তর পাড়ায় আওয়ামী লীগের আরেক বিদ্রোহী প্রার্থী ইউপি চেয়ারম্যান আফজাল হোসেন হাবিল ও নৌকার কর্মীদের মধ্যে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে তা সংঘর্ষে রূপ নেয়। খবর পেয়ে নৌকার প্রার্থী সাবেক চেয়ারম্যান ভুট্টোলাল গাইন ঘটনাস্থলে গেলে তিন চেয়ারম্যান প্রার্থী ও কর্মীরা উত্তেজিত হয়ে ত্রিমুখী সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। 

সেসময় দুই বিদ্রোহী প্রার্থী আফজাল হোসেন হাবিল ও মারুফ সংঘবদ্ধ হয়ে কর্মীদের সাথে নিয়ে নৌকার প্রার্থী ভুট্টোলাল গাইন ও তার সমর্থকদের উপর ভয়াবহ হামলা চালালে কয়েকজন রক্তাক্ত জখম হয়। ওই ঘটনায় নৌকার প্রার্থী ও দলটির ইউনিয়ন সভাপতি ভুট্টোলাল গাইনসহ তার ১০/১২ জন কর্মী সমর্থককে গুরুতর আহতাবস্থায় কলারোয়া হাসপাতালে আনা হয়।

আহত প্রার্থী ভুট্টো লাল গাইন বলেন, হাবিল ও মারুফ পরিকল্পিতভাবে আমার এবং আমার সমর্থকদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়, যাতে করে নির্বাচন বাধাগ্রস্থ হয়।

আফজাল হোসেন হাবিল বলেন, সন্ধ্যার সময় ভুট্টো লাল গাইনের লোকজনের সাথে তার লোকজনের মারপিটের ঘটনা ঘটেছে।এ ঘটনায় দু’পক্ষের লোকজন আহত হয়েছে।

কলারোয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মীর খাইরুল কবীর জানান, ‘সংঘর্ষের খবর জানতে পেরে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে। কাউকে কোনভাবেই নির্বাচনী পরিবেশ বিঘ্নিত করতে দেওয়া হবেনা। এ ঘটনায় চারজনকে আটক করা হয়েছে এবং এ ব্যাপারে মামলা দায়েরের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।

আমারসংবাদ/এআই