Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

গুলিতে নিহত দুই যুবকের লাশ ১০ দিনেও ফেরত দেয়নি বিএসএফ

পাটগ্রাম (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি

সেপ্টেম্বর ৭, ২০২১, ১২:১৫ পিএম


গুলিতে নিহত দুই যুবকের লাশ ১০ দিনেও ফেরত দেয়নি বিএসএফ

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে নিহত দুই বাংলাদেশি নাগরিকের লাশ গত দশ দিনেও ফেরত পায়নি নিহতের পরিবার। সীমান্তে নিহত ছেলের মুখ এক নজর দেখার জন্য পরিবারে দিনের পর দিন চলছে কান্না আর আহাজারি। প্রতিদিন সকাল থেকে ঘুমানোর আগ পর্যন্ত লাশ পাওয়ার খবরের আশায় থাকে নিহত দুই ব্যক্তির পরিবার। নিহত ব্যক্তিদের পরিবারে সাথে কথা বলে জানা গেছে এসব কথা। 

গেল মাসের ২৯ আগস্ট ভোরে বুড়িমারী সীমান্তের ৮৪২ নম্বর মেইন পিলারের নিকট দিয়ে ভারতীয় গরু ব্যবসায়ীদের সহায়তায় গরু নিয়ে ফেরার সময় ভারতের ১৪৮ রাণীনগর বিএসএফ ব্যাটালিয়ন চ্যাংরাবান্ধা ক্যাম্পের টহল দলের সদস্যরা তাদেরকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে। এতে বুড়িমারী ইউনিয়নের ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের বুলবুল আহম্মেদের ছেলে ইউনুস আলী (২৭) ও নীলফামারী জেলার ডিমলা উপজেলার ধনবার রায়ের ছেলে জগন্নাথ রায় সাগর (৩৮) নিহত হয়। পরে মেখলিগঞ্জ থানা পুলিশের নিকট লাশ হস্তান্তর করে বিএসএফ। নিহতদের লাশ ময়না তদন্ত শেষে ভারতে হিম ঘরে রাখা হয়েছে বলে জানা গেছে।

এদিকে লাশ ফেরত চেয়ে নিহতের দুই পরিবার স্থানীয় বিজিবি ক্যাম্পে আবেদন দেয়। লাশ ফেরতের ব্যাপারে বিজিবি স্পস্ট করে কিছু না বলায় নিহতদের স্বজনেরা লাশের দাবিতে গত ৩১ আগস্ট দুপুরে প্রায় ৩০ মিনিট বুড়িমারী স্থলবন্দর বিজিবি তল্লাশি চৌকি অবরোধ করে রাখে। পরে দুই দফায় পুলিশ গিয়ে অবরোধকারীদেরকে হটিয়ে দেয়। সন্তানকে হারিয়ে উভয় নিহত ব্যক্তির বৃদ্ধ বাবা- মা, স্ত্রী, সন্তানেরা শোকে নির্বাক হয়ে লাশ পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। 

নিহত ইউনুস আলীর পিতা বুলবুল মিয়া বলেন, সন্তান হারানোর ব্যাথা নিয়ে অনেকের কাছে গিয়েও কোনো সামাধান পাচ্ছি না। 

তিনি আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আমার দাবি সীমান্তে নিহত ছেলের মুখ এক নজর দেখে দেশে যেন কবর দিতে পারি সে ব্যবস্থা করার।

ইউনুসের স্ত্রী আঞ্জুয়ারা বেগম বলেন, ৫ বছরের একমাত্র সন্তান আলিফ বাবু সারাদিন তার বাবার জন্য কাঁদে। বলে বাবা কেন আসে না। আমি বাবাকে দেখব। কি করি, সারাদিন চোখের পানি ঝরে। আমাদের জন্য কি কারও কিছু করার নেই?   

নিহত জগন্নাথ রায় সাগরের পিতা ধনবর রায় বলেন, ছেলের মুখ দেখতে অস্থির হয়ে আছি। ৪- ৫ দিন জলঢাকা থেকে বুড়িমারী গেলাম কেউ আমাদের কথা শোনে না। 

সাগরের স্ত্রী শামলী রানী বলেন, মৃত স্বামীর মুখ দেখতে চাই। কার কাছে গেলে লাশটা ফেরত  পাব।   

এ বিষয়ে বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সাঈদ নেওয়াজ নিশাত বলেন, বিজিবি ক্যাম্পে গিয়ে বেশ কয়েকবার  কথা বলেছি। বিজিবি বলে আমাদের উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত কোনো আদেশ দেয়নি। এজন্য লাশ পাওয়া যাবে কিনা সঠিক বলা যাচ্ছে না।

বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ ৬১ (বিজিবি) বুড়িমারী কোম্পানি কমান্ডার বেলাল হোসেন বলেন, লাশ ফেরতের বিষয় নিয়ে আমরা আর কিছু বলতে চাই না।

আমারসংবাদ/কেএস