Amar Sangbad
ঢাকা মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪,

চাটমোহরে আশার আলো ছড়াচ্ছে পাট কাঠি

শিমুল বিশ্বাস, চাটমোহর (পাবনা)

সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২১, ০৮:৪৫ এএম


চাটমোহরে আশার আলো ছড়াচ্ছে পাট কাঠি

পাবনার চাটমোহরে আশার আলো ছড়াচ্ছে সোনলী আঁশের রুপালী পাট কাঠি। সোনালী আঁশ পাট এবার ভিন্ন সম্ভাবনা নিয়ে এসেছে কৃষকের কাছে। তবে শুধু পাট আঁশ নয়, পাঠকাঠিও দেখাচ্ছে আশার আলো। পাঠকাঠি কখনো জ্বালানি, ঘরের বেড়া, চাতাল, জাংলা সহ বিভিন্ন কাচে ব্যবহৃত হতো। 

কিন্তু এখন বিশ্ববাজারে পাঠকাঠির চাহিদা বেড়েছে। তাইতো কৃষক সোনালী আঁশের রূপালি কাঠিতে আশার আলো দেখছে। বিগত সময় পাট চাষিরা চাহিদা অনুযায়ী পাটের দাম না পেয়ে এই মৌসুমে সোনালী আঁশে ও কাঠিতে তা পুষিয়ে নিতে চেষ্টা করছেন।

সরজমিনে উপজেলার হরিপুর, মূলগ্রাম, মথুরাপুর, বিলচলন, ছাইকোলা, হান্ডিয়াল ও পৌরসভাসহ বিভিন্ন এলাকায় ঘুরে দেখা যায় চাষিরা পাট ঘরে তোলার পাশাপাশি পাঠের কাঠি আগের মতো অবহেলায় ফেলে না রেখে যত্ন করে শুকিয়ে রাখছেন। কেউ কেউ আবার পাট আঁশ ছড়ানোর জাগায় থেকেই পাট কাঠি বিক্রি করছেন।

চাটমোহর পৌরসভার ৩ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মোঃ এখলাছুর রহমান আমার সংবাদকে জানান, গত কয়েক বছর আগেও পাট কাঠির তেমন চাহিদা ছিল না। কিন্তু এখন পাট কাঠির বেশ চাহিদা। এলাকার গৃহিনীরা জ্বালানির জন্য পাটকাঠি কিনছেন। 

বিভিন্ন এলাকার দূর দূরান্তের ব্যবসায়ীরাও এসে পাটকাঠি কিনছেন, দামও ভালো পাওয়া যাচ্ছে। একশ মোটা পাটকাঠি বিক্রি হচ্ছে সাড়ে ৩০০শত থেকে ৪০০শত টাকা করে। মিডিয়েম পাটকাঠি বিক্রি হচ্ছে ৩০০শত থেকে সাড়ে তিনশত টাকা করে। তিনি আরো বলেন, শুধু পাট বিক্রি করেই নয় এবার পাটের এই কাঠিও আমাদের আশা জাগিয়েছে।

গুনাইগাছা ইউনিয়নের চরপাড়া গ্রামের পাট চাষি মোঃ নজরুল ইসলাম আমার সংবাদকে জানান, উপজেলা কৃষি অফিসের সহযোগিতা নিয়ে প্রতি বছরেই পাট চাষ করেন। এ বছরে পাঁচ বিঘা জমিতে পাট চাষ করেছেন। পাট আঁশ ছড়ানো শেষ এখন পাটকাঠি নিয়ে ব্যস্ত আছে তিনি। 

তিনি আরো জানান, পাটকাঠি এক সময় রান্নার জ্বালানি, ঘরের বেড়া, ছাউনির কাজে ব্যবহার হতো। কিন্তু এখন এই পাটকাঠি দেশের পার্টিকেল বোর্ড তৈরিতে না-কি ব্যবহার হচ্ছে। পাটকাঠির ছাই বিদেশে না-কি রপ্তানী হচ্ছে তাই হয়-তো আমরা পাটকাঠির ভালো দাম পাচ্ছি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এএ মাসুম বিল্লাহ আমার সংবাদকে বলেন, সরকার কৃষি পণ্যকে শিল্পে রূপান্তরের জন্য কৃষি ক্ষেত্রে নানা উদ্যোগ নিয়েছেন। বিগত কয়েক বছরের তুলনায় পাট ও পাটকাঠি বিক্রি করে কৃষক এবার বেশি লাভবান হচ্ছেন। এখন দেশের বিভিন্ন এলাকায় পার্টিকেল বোর্ড কারখানায় পাটকাঠি ব্যবহার হচ্ছে। 

বর্তমানে কৃষকরা জমি চাষের অনেক কৌশল শিখেছেন। কৃষকরা এখন পাটকাঠির ছাই জমিতে সার উৎপাদনের কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহার করছেন। বিভিন্ন দেশে পাটকাঠির ছাই থেকে কার্বন পেপার, দাঁত পরিষ্কারের ঔষধ, কম্পিউটার ও ফটোকপিয়ারের কালি তৈরি করছেন। যে কারণেই প্রতিনিয়ত পাটকাঠির চাহিদা বেড়ে যাচ্ছে। এটা আমাদের জন্য অনেক ভালো বিষয়।