Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪,

করোনা কমলেও দক্ষিণাঞ্চলে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা

বরিশাল ব্যুরো

সেপ্টেম্বর ২৩, ২০২১, ১১:১৫ এএম


করোনা কমলেও দক্ষিণাঞ্চলে বাড়ছে ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা

করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা দক্ষিণাঞ্চলে অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আসার মধ্যেই ডেঙ্গুর প্রকোপ বেড়ে চলেছে। 

বৃহস্পতিবার (২৩ সেপ্টেম্বর) সকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘন্টায় বরিশাল বিভাগের ছয় জেলার হাসপাতালগুলোতে ২৯ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। এ সময় নতুন করে শনাক্ত হয়েছেন নয়জন। এ নিয়ে সরকারি হিসেবে বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় সর্বমোট ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ২২৭ জন। এর মধ্যে গত ২২ দিনে ১৫৫ জন আক্রান্ত হয়েছেন। বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। 

বরিশাল শেবাচিম হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ইতোমধ্যে এ হাসপাতালে ৬১ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী ভর্তি হয়েছেন। যারমধ্যে সুস্থ হয়ে ঘরে ফিরেছেন ৫০ জন। এছাড়া পটুয়াখালী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেও ডেঙ্গু আক্রান্ত ২৯ জন রোগীর মধ্যে ইতোমধ্যে ২৮ জনই সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরেছেন। বিভাগের ছয় জেলায় এ পর্যন্ত ১৪০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগী হাসপাতালে ভর্তি হবার পর চিকিৎসা নিয়ে ১১১ জন সুস্থ্য হয়েছেন। বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত বিভাগের ছয় জেলার হাসপাতালে ২৯ জন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগী চিকিৎসাধীন রয়েছেন। অপর আক্রান্তরা নিজ নিজ বাড়িতে থেকেই চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ্য হয়েছেন।

সূত্র মতে, গত এক সপ্তাহে আক্রান্তের সংখ্যা ছিলো ৫১ জন। তবে দক্ষিণাঞ্চলে এখনো ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে কারো মৃত্যু হয়নি বলে বিভাগীয় স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। যদিও গত ১৩ সেপ্টেম্বর মাওলানা আব্দুর রাজ্জাক জিহাদী নামের এক ব্যক্তি ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে বরিশাল ইসলামী ব্যাংক হাসপাতালে ভর্তি হন। পরবর্তীতে তার রক্তের প্লাটিলেট ২০ হাজারে নেমে আসায় উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে তার মৃত্যু হয়েছে।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে আরও জানা গেছে, ইতোমধ্যে ঢাকার আইডিসিআর’র একটি পরিদর্শক দল বরিশালসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন হাসপাতাল পরিদর্শন করে চিকিৎসাধীন ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের পরীক্ষাসহ তাদের বক্তব্য গ্রহণ করেছেন। চিকিৎসাধীন রোগীর প্রায় সকলেই ঢাকা থেকে জ্বর নিয়ে এ অঞ্চলে এসে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন বলে জানিয়েছেন। আক্রান্তদের মধ্যে শুধুমাত্র একজন রোগী নিজ এলাকার বাহিরে যাবার কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। এ সব রোগীর রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে অধিকতর পরীক্ষা নিরিক্ষার জন্য ঢাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। তবে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে বরিশাল নগরীসহ দক্ষিণাঞ্চলের সর্বত্র মশক নিধনের পাশাপাশি মশার বংশ বিস্তাররোধে জরুরী পদক্ষেপ গ্রহনের তাগিদ দিয়েছেন। একইভাবে সবাইকে যেকোন ধরনের মশার হাত থেকে রক্ষায় সতর্ক থাকারও পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।

চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের মতে, পুরো অক্টোবর জুড়েই ডেঙ্গুর বিস্তার অব্যাহত থাকতে পারে। এডিস মশা ও তার লার্ভা ধ্বংশে বিশেষ পদক্ষেপ গ্রহনের কোন বিকল্প নেই বলেও চিকিৎসকগণ মত দিয়েছেন।

অপরদিকে বরিশাল বিভাগের ছয় জেলায় করোনায় আক্রান্ত হয়ে গত ছয়দিনে কোন মৃত্যুর সংবাদ নেই। আক্রান্ত ও মৃত্যুর এ হার গত মাসের একই সময়ের তুলনায় আশাব্যঞ্জক উন্নতি ঘটেছে। গত ৪৮ ঘন্টায় ছয় জেলায় নতুন করে মাত্র ৪৫ জন করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তবে বিভাগের ছয় জেলায় করোনা শনাক্তের হার ইতোমধ্যে ৫% এর নিচে নামলেও তা নিয়ে আত্মতৃপ্তির অবকাশ নেই বলে মনে করছেন চিকিৎসা বিশেষজ্ঞগণ। তাদের মতে, কঠোর স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণের কোন বিকল্প নেই। কিন্তু পরিস্থিতির উন্নতি হলেও এসব জেলায় এখন আর নুন্যতম স্বাস্থ্যবিধি কেউ অনুসরন করছেন না। ৫% মানুষও রান্তাঘাটে ফেসমাস্ক ব্যবহার করছেন না। বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগ ও প্রশাসনেরও এখন আর কোন হেলদোল নেই। তবে স্বাস্থ্য বিভাগের দাবি তারা স্বাস্থ্যবিধি অনুসরণে যতটুকু প্রচারণা সম্ভব তা করে যাচ্ছেন। এক্ষেত্রে গাইড লাইনও দিচ্ছেন তারা।

আমারসংবাদ/কেএস