Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪,

বিলুপ্তির পথে গ্রামবাংলার হারিকেন

মির্জাপুর (টাঙ্গাইল) প্রতিনিধি

সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২১, ০২:৪৫ পিএম


বিলুপ্তির পথে গ্রামবাংলার হারিকেন

টাঙ্গাইলের মির্জাপুরে বিলুপ্তির পথে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী হারিকেন বাতি। গ্রামীণ জীবনে রাতের অন্ধকার দূর করতে একটা সময় এ উপজেলায় মানুষের অন্যতম ভরসা ছিল হারিকেন বা কুপি-মোমবাতি। উপজেলার নানা পেশায় উচ্চপর্যায়ে থাকাদের মধ্যে খোঁজ করলে লক্ষ্য করা যাবে অনেকেই পড়ালেখা করেছেন হারিকেনের মৃদু আলোয়। গৃহস্থলি এবং ব্যবসার কাজেও হারিকেনের ব্যাপক চাহিদা ছিল। 

তবে এখন সেই হারিকেন অযন্ত আর অবহেলাসহ ঠাঁই রয়েছে জাদুঘরে। হারিকেনের স্থান দখল করেছে নানা ধরনের বৈদ্যুতিক বাতি। বৈদ্যুতিক ও চায়না বাতির কারণে হারিকেনের ব্যবহার বন্ধ হয়েছে। সেই আলোর প্রদীপ এখন গ্রাম থেকেও বিলুপ্ত হচ্ছে। হারিকেন জ্বালিয়েই বাড়ির উঠানে বা বারান্দায় পড়ালেখা করতে শিক্ষার্থীরা। রাতের বেলায় পথ চলার জন্য ব্যবহার করত হারিকেন। হারিকেনের জ্বালানি আনার জন্য প্রতি বাড়িতেই থাকত কাচের বিশেষ ধরনের বোতল। সেই বোতলে রশি লাগিয়ে ঝুঁলিয়ে রাখা হতো। হাটের দিনে সেই রশিতে ঝোঁলানো বোতল হাতে যেতে হতো গ্রামগঞ্জের হাটে। এ দৃশ্য বেশি দিনের নয়। 

পল্লী বিদ্যুতিক যুগে এখন আর এমন দৃশ্য চোখে পড়ে না। প্রাচীন বাংলার গ্রামীণ ঐতিহ্য কুপি বাতি, মোমবাতি ও হারিকেন এখন শুধুই স্মৃতি। গ্রামের অমাবস্যার রাতে মিট-মিট আলো জ্বালিয়ে মানুষের পথ চলার স্মৃতি এখনো তাড়া করে। বাংলা সাহিত্যের অন্যতম ডাক হরকরা গল্পের নায়ক তার এক হাতে হারিকেন আর অন্য হাতে বল্লভ নিয়ে রাতের আঁধারে ছুটে চলে তার কর্ম পালন। দিন দিন প্রযুক্তি মানুষকে উন্নত করছে। হারিকেন ছেড়ে মানুষ এখন বিদ্যুতের দিকে ঝুঁকছে। তাপবিদ্যু, জলবিদ্যু, সৌরবিদ্যুসহ জ্বালানি খাতে ব্যাপক উন্নয়নে ঐতিহ্যবাহী হারিকেন বিলুপ্তির পথে।

এছাড়াও প্রযুক্তির মাধ্যমে বিদ্যুকে সংগ্রহ করার ও পস্থা আবিস্কার করেছে বিজ্ঞানীরা যেমন চার্জলাইট, সৌরবিদ্যুসহ বেশ কিছু আলোর জোগান থাকায় এখন আর কেউই ঝুঁকছেন না হারিকেনের দিকে। প্রবীণদের মতে, একসময় হারিকেন দেখতে যেতে হবে জাদুঘরে। নতুন প্রজন্ম হয়তো জানবে ও না হারিকেন কী ও হারিকেনের ইতিহাস! চায়না জাপানসহ পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে খুব দ্রুত চার্জ সংরক্ষণকারী আলোর প্রযুক্তি উদ্ভাবন করছে। এভাবেই হয়তো চিরতরে হারিয়ে যাবে হারিকেন।

আমারসংবাদ/কেএস