Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪,

আ.লীগের মনোনয়ন চান উপজেলা বিএনপির উপদেষ্টা!

ফরিদপুর প্রতিনিধি 

সেপ্টেম্বর ২৬, ২০২১, ০৫:০৫ পিএম


আ.লীগের মনোনয়ন চান উপজেলা বিএনপির উপদেষ্টা!

নগরকান্দা উপজেলা বিএনপির সাবেক সহ-সভাপতি ও বর্তমান কমিটির উপদেষ্টা ফিরোজ খান আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন চাচ্ছেন বলে এলাকায় গুঞ্জন চলছে। জানা গেছে, নৌকার মনোনয়ন পেতে ইতোমধ্যে স্থানীয় প্রভাবশালী এক নেতার মাধ্যমে তদবির ও লবিং করেছেন তিনি। এদিকে বিএনপি নেতা ও রাজাকার পুত্র ফিরোজ খানের নৌকার মনোনয়ন চাওয়ার গুঞ্জনে উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে তীব্র অশন্তোষ ও ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

এ বিষয়ে স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতারা অভিযোগ করে বলেন, ফিরোজ খান এলাকায় বিএনপির প্রভাবশালী নেতা। তিনি কয়েকবার বিএনপির সমর্থন নিয়ে তালমা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামীলীগ থেকে মনোনয়ন পেতে জোর চেষ্টা চালাচ্ছে। এটা আওয়ামীলীগের জন্য লজ্জাজনক ও কলঙ্কজনক বলে তার বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়ারও দাবি জানান উপজেলা আওয়ামীলীগের নেতারা।

বিএনপি নেতা ফিরোজ খান রাতারাতি বিএনপির নেতা থেকে আওয়ামীলীগ বনে যাওয়ায় বিরুদ্ধে ফরিদপুরের ৪নং আমলি আদালতে একটি প্রতারনার  মামলা হয়েছে। মামলাটি এখন তদন্ত পর্যায়ে রয়েছে। মামলা দায়ের করেছেন নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যকরী সদস্য মো. বাবুল আক্তার।

জানা গেছে, ২০১৫ সালে জেলা বিএনপির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক নগরকান্দা উপজেলা বিএনপির যে কমিটি অনুমোদন দেন সেই কমিটির ৪নং উপদেষ্টা হিসেবে রয়েছেন ফিরোজ খান নাম। দল থেকে পদত্যাগ না করে অন্য দলের পরিচয় দিয়ে প্রতারণা করায় ফিরোজ খানের বিরুদ্ধে ফুঁসে উঠেছেন স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা।

সূত্র জানায়, ফিরোজ খান যুদ্ধাপরাধীর ছেলে হিসাবে এলাকায় আগে থেকেই পরিচিত। ফিরোজ খানের পিতা মকবুল খান উপজেলা শান্তি কমিটি (রাজাকার) সক্রিয় সদস্য ছিলেন। একাত্তরে উপজেলার শহিদনগরে পাক বাহিনীর চালানো তাণ্ডবে তার প্রত্যাক্ষ মদদ ও সহযোগিতা ছিলো। এছাড়া উপজেলা শান্তি কমিটির তালিকায় ১১ নাম্বারে মকবুল খানের নাম রয়েছে। অভিযোগ রয়েছে, ৪ দলীয় জোট সরকারের সময়ে ফিরোজ খান বিএনপির ক্ষমতা ব্যবহার করে নগরকান্দার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হামলা-মামলায় জর্জরিত করে রেখেছিলেন। সম্প্রতি স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি সংঘর্ষ ও হামলায় তিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন বলেও অভিযোগে জানা গেছে।

এদিকে ফিরোজ খানের বিরুদ্ধে নগরকান্দা উপজেলা আওয়ামী লীগের প্যাডে গণমাধ্যমে পাঠানো এক চিঠিতে বলা হয়, নগরকান্দা উপজেলা বিএনপির বর্তমান উপদেষ্টা, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, অর্ধডজন মামলার আসামি ফিরোজ খান। এছাড়া তিনি এলাকায় নিরীহ জনগণ, ত্যাগী আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের বিভিন্নভাবে হুমকি ও ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন। তার হামলা ও মামলার কারণে অনেক আওয়ামী লীগের কর্মী এলাকা ছাড়া। গত উপজেলা নির্বাচনে তিনি আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রচারণায় অংশ নেন। তালমা ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনেও সে আওয়ামী লীগের প্রার্থীর বিরুদ্ধে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে অংশ নিয়ে পরাজিত হন।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ফিরোজ খান বলেন, আমি আগে বিএনপি করতাম। এখন আওয়ামী লীগে যোগ দিয়েছি। আমি এখন আওয়ামী লীগ করি। তাই নৌকা প্রতিকের চেয়ারম্যান হতে চাই।

ফিরোজ খানের বিষয়ে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবল চন্দ্র সাহা বলেন, ফিরোজ খান বিএনপির লোক। তিনি কখনোই আওয়ামী লীগ করেননি।

আমারসংবাদ/এডি