Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

ছাত্রীর সন্তানকে কোলে নিয়ে শিক্ষকের পাঠদান, ছবি ভাইরাল

আমার সংবাদ ডেস্ক

অক্টোবর ৩, ২০২১, ০৩:২০ পিএম


ছাত্রীর সন্তানকে কোলে নিয়ে শিক্ষকের পাঠদান, ছবি ভাইরাল

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় বাল্যবিয়ের শিকার এক ছাত্রীর মেয়ে শিশুকে কোলে নিয়ে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান করিয়েছেন পঙ্কজ মধু (৪৫) নামের একজন শিক্ষক। এ ঘটনার একটি ছবি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়েছে।  এরপর থেকেই প্রসংশায় ভাসছেন ওই শিক্ষক।

পঙ্কজ মধু ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার মাছিহাতা ইউনিয়নের চিনাইর আঞ্জুমান আরা উচ্চ বিদ্যালয়ের ইংরেজির শিক্ষক। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়া পৌর এলাকার দাতিয়ারা গ্রামে বসবাস করেন। 

জানা গেছে, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবের সময় বিদ্যালয় বন্ধ ছিল। এই সুযোগে বিদ্যালয়টির দশম শ্রেণির এক ছাত্রীকে তার বাবা মা বাল্যবিয়ে দেয়। এক বছর পর ওই ছাত্রী একটি মেয়ে শিশু জন্ম দেয়। ১২ সেপ্টেম্বর বিদ্যালয় খোলার পর পঙ্কজ মধু জানতে পারেন বাল্যবিয়ের শিকার হয়েছেন তার এক ছাত্রী। পরে তিনি ওই ছাত্রীকে বিদ্যালয়ে আসার জন্য খবর দেন।  

রোববার সকালে ছাত্রী তার তিন মাস বয়সী মেয়েকে কোলে নিয়ে বিদ্যালয়ে আসে। কিন্তু কোলে সন্তান থাকায় ক্লাসের পাঠে মনোযোগ দিতে পারছিলো না সে। এ সময় শিক্ষক পঙ্কজ মধু ছাত্রীর মেয়েকে কোলে নিয়ে পাঠদান করান। তখন কেউ একজন ছবিটি তুলে ফেসবুকে পোষ্ট দেন। সঙ্গে সঙ্গে ছবিটি ভাইরাল হয়।

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোশারফ হোসেন বলেন, পঙ্কজ মধু একজন ভালো শিক্ষক।  শিক্ষার্থীদের ব্যাপারে সে খুব আন্তরিক। শ্রেণিকক্ষে তিনি সব সময় শিক্ষার্থীদের প্রতি দায়িত্বপূর্ন ভূমিকা পালন করেন।

শিক্ষক পঙ্কজ মধু বলেন, ছবিটি যে ফেসবুকে ছড়িয়ে গেছে তা আমার জানা নেই। আর ভাইরাল হওয়ার জন্যও আমি এই কাজটা করিনি।

তিনি বলেন, ২১ বছর ধরে শিক্ষকতা করছি। আমি একজন শিক্ষক হিসেবেই বাঁচতে চাই। শিক্ষার্থীর সুবিধার কথা চিন্তা করে আমি তার মেয়েকে কোলে নিয়ে ক্লাশ করাই।

‘সম্প্রতি স্কুল খোলার পর আমি যখন জানতে পারি করোনাকালীন সময়ে দশম শ্রেণির ওই ছাত্রীর বিয়ে হয়ে গেছে। তখন আমার খুব খারাপ লাগছিলো। পরে আমি ছাত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ করি।  তাকে বিদ্যালয়ে আসতে বলি। রোববার সে তার বর ও মেয়েকে সঙ্গে নিয়ে বিদ্যালয়ে আসে।  আমি ছাত্রী ও তার স্বামীকে লেখাপড়া চালিয়ে যাওয়ার জন্য বুঝাই। তখন ওই ছাত্রী তার শিশু সন্তানকে কোলে নিয়ে ক্লাসে যায়।  কিন্তু শিশুটির জন্য সে ক্লাসে মনযোগ দিতে পারছিলো না। তাই আমি তার শিশুটিকে কোলে নিয়ে ক্লাস করাই।’

আমারসংবাদ/জেআই