Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪,

স্মার্টকার্ড নিতে এসে ফিরে গেলেন লোকজন, ভোগান্তি

হরিরামপুর (মানিকগঞ্জ) প্রতিনিধি

অক্টোবর ৫, ২০২১, ০৯:১০ এএম


স্মার্টকার্ড নিতে এসে ফিরে গেলেন লোকজন, ভোগান্তি

মানিকগঞ্জের হরিরামপুরে জাতীয় পরিচয়পত্রের স্মার্ট কার্ড নিতে এসে না পেয়ে ফিরে গেছেন কাঞ্চনপুর ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের কয়েকশ’ ভোটার। অভিযোগ, উপজেলা নির্বাচন অফিস এবং জনপ্রতিনিধিদের গাফিলতির কারণে ভোটারদের ভোগান্তি পোহাতে হয়েছে। এদের বেশিরভাগই ২০১৮ সালে দুই বছর মেয়াদী জাতীয় পরিচয়পত্র পেয়েছিলেন।

মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদে স্মার্টকার্ড নিতে এসেছিলেন তারা। এসে জানতে পারেন তাদের স্মার্টকার্ড এখনো আসেনি। এদের অনেকেই দেশের বিভিন্ন এলাকায় চাকরি করেন, স্মার্টকার্ড বিতরণের কথা শুনে ছুটি নিয়ে বাড়িতে এসেছেন। অনেক নারী ভোটার আছেন যাদের উপজেলার বিভিন্ন এলাকায়সহ উপজেলা ও জেলার বাইরে বিয়ে হয়েছে। তারাও শ্বশুরবাড়ি থেকে এসে কার্ড না পেয়ে ঘুরে যাচ্ছেন। 

তারা অভিযোগ করে বলেন, আমাদের স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানিয়েছেন আজ স্মাটকার্ড দেয়া হবে। আগেই যদি তারা বা উপজেলা নির্বাচন অফিস কাদের আইডি কার্ড এসেছে বা কাদের আসেনি বিষয়টি প্রচার করতো বা জানাতো তাহলে এই ভোগান্তি পোহাতে হতো না।

সরজমিনে জানা যায়, মঙ্গলবার বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদ থেকে বয়ড়া ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের ভোটার এবং কাঞ্চনপুর ও রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের পরিষদ থেকে বিতরণের সময় স্মার্টকার্ড না নিতে পারা ভোটারদের স্মার্ট জাতীয় পরিচয়পত্র বিতরণের দিন নির্ধারিত ছিলো।

সরজমিনে দেখা যায়, নির্ধারিত তিন ইউনিয়নের বাইরে সুতালড়ি ইউনিয়নের কিছু ভোটারদের আজ স্মার্ট কার্ড বিতরণ করা হচ্ছে। ফলে পরিষদ চত্ত্বরে ভীড়সহ অব্যবস্থাপনা তৈরি হচ্ছে। দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাড়িয়ে থেকে কার্ড না পেলেও অনেকেই লাইনে না দাড়িয়েই পরে এসে কার্ড নিয়ে যাচ্ছেন। ফলে, লাইনে দাড়িয়ে থাকা লোকজনকে উত্তেজিত হয়ে চিৎকার চেঁচামেচি করতে দেখা গেছে।

রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের আলগীরচর গ্রাম থেকে স্মার্টকার্ড নিতে আসা মো. মামুন বলেন, ‘‘আমি গাজীপুরে চাকরি করি। স্মার্ট কার্ড দেওয়ার কথা শুনে ছুটি নিয়ে বাড়িতে এসেছি। এখানে এসে শুনলাম আইডি কার্ড আসে নাই। আরও কয়েকমাস সময় লাগবে। আগেই যদি জানানো হতো যে আমাদের কার্ড আসেনি, তাহলে ভাড়া খরচসহ ভোগান্তি পোহাতে হতো না।”

কার্ড না পেয়ে ফিরে যাচ্ছিলেন আরফিনা আক্তার। তিনি বলেন, শ্বশুর বাড়ি থেকে শিশু বাচ্চা নিয়ে কার্ড নিতে এসেছিলাম। অনেকক্ষণ লাইনে দাড়িয়ে থেকে জানতে পারি কার্ড আসেনি। তাই বাড়ি চলে যাচ্ছি। শিশু সন্তান নিয়ে শুধু শুধু ভোগান্তি।

পার্শ্ববর্তী উপজেলা বান্দুরায় কাজ করেন রামকৃষ্ণপুর ইউনিয়নের আনজু বেগম। তিনি বলেন, আইডি কার্ড দেওয়ার কথা শুনে এসেছিলাম। এখন শুনলাম আইডি কার্ড আসে নাই।

সজিব নামের এক যুবক বলেন, তিনি নারায়নগঞ্জে কাজ করেন। নারায়নগঞ্জ থেকে এসেছেন স্মার্টকার্ড নিতে। স্মার্টকার্ড আসেনি। তাই বাড়ি ফিরে যাচ্ছেন।

কার্ড বিতরণ করছিলেন উপজেলা নির্বাচন অফিসের অফিস সহকারী সিদ্দিক মোল্লা। তিনি বলেন, ‘‘আমরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানদের জানিয়ে দিয়েছিলাম, ইউনিয়ন পরিষদে কার্ড বিতরণের সময় যারা এলাকায় ছিলো না বা কার্ড পায় নাই, শুধু তারা আজ পাবে। নতুন কার্ড আসে নাই। চেয়ারম্যানদের অবহেলার কারণেই এমনটি হয়েছে।”

কাঞ্চনপুর ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. ইদ্রিস বলেন, ‘‘আমাদের জানানো হয়েছিলো ৫ তারিখে বয়ড়া ইউনিয়ন পরিষদ থেকে স্মার্টকার্ড দেয়া হবে। যারা পরিষদ থেকে নিতে পারেনি এবং জন্ম সাল ২০০১ কিংবা তার আগে, তারা কার্ড পাবেন।”

বক্তব্যের জন্য রামকৃষ্ণপুর ইউপি চেয়ারম্যান মো. কামাল হোসেনের মুঠোফোনে কয়েকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি। তবে, ৬নং ওয়ার্ড সদস্য মো. কুদ্দুস আলী বেপারী বলেন, নির্বাচন অফিসের গাফিলতির কারণে লোকজনকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।

উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘‘কাদের কার্ড আসবে বা কাদের কার্ড আসেনি, এটা সেন্ট্রাল সিদ্ধান্ত। যাদের স্মার্টকার্ড এসেছে তারা পাবেন, যাদের আসেনি তারা ঘুরে যাবেন। আমাদের কিছু করার নেই।”

আমারসংবাদ/এআই