Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

জাল বুনে সময় কাটছে জেলেদের

বরগুনা প্রতিনিধি

অক্টোবর ৫, ২০২১, ১১:১০ এএম


জাল বুনে সময় কাটছে জেলেদের

ইলিশ ধরা, পরিবহন ও বিক্রিতে চলছে ২২ দিনের সরকারি নিষেধাজ্ঞা। এরফলে জেলেরা ইলিশ শিকারে যাচ্ছেন না। যতদূর চোখ যাচ্ছে নদীতে কোনো মাছ ধরা নৌকা নেই। জেলেরা উঠে এসেছেন ডাঙায়। ডাঙায় এসেও তাদের কোন বিরাম নেই। জাল বুনে ব্যস্ত সময় পার করছেন জেলেরা।

বরগুনায় প্রায় এক লাখ জেলের বসবাস। জেলার পাথরঘাটা, তালতলী ও সদর উপজেলার জেলেরা মাছ আহরণ করেই জীবিকা চালায়। এখানকার জেলেদের বিকল্প কোন কাজ নেই। মাছ শিকার করাই তাদের একমাত্র পেশা। ইলিশ ধরা, পরিবহন ও বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা চলায় বরগুনার জেলেরা এখন জালের রশি বদলানো, ছেঁড়া জাল মেরামত ও মাছ ধরার নৌকা সংস্কার করে বেকার সময় পার করছেন।

মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) বিকেলে সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের পোটকাখালী এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে, মাছ ধরতে না পারায় স্থানীয় জেলেরা ডাঙায় মাছ ধরার সব উপকরণ ঠিকঠাক করে নিচ্ছেন। জেলেরা দলবেঁধে জাল বুনছেন। কেউ কেউ নৌকা মেরামত করছেন। 

কথা হলে জেলে রফিকুল ইসলাম বলেন, এবার কাঙ্খিত ইলিশ ধরা পড়েনি। বৈরী আআবহাওয়ায় আহরণে গিয়ে জাল-নৌকার অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মহাজনের দাদনের টাকাও শোধ হয়নি। নতুন করে জাল কেনার পুঁজি নেই। তাই ছেঁড়া জাল সেলাই করে রাখছি। নিষেধাজ্ঞা শেষ হলে এ জাল দিয়ে মাছ আহরণ করা হবে।  

জেলে সহিদুল ইসলাম বলেন, ইলিশের ডিম ছাড়ার উপযুক্ত সময়ের কুড়ি দিন আগে থেকেই ২২ দিনের অবরোধ আরোপ করা হয়েছে। এটি ইলিশসহ সব মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিতে কোন সুফল বয়ে আনবেনা। তারপরও সরকারের নিষেধাজ্ঞার প্রতি আমরা সম্মান জানাই। নিষেধাজ্ঞা মানতে আমরা ডাঙায় উঠে এসেছি। কিন্তু ভারতীয় জেলেরা ঠিকই সাগরে মাছ ধরছে। নিষেধাজ্ঞা দিলে দুই দেশেই একসাথে দেয়া উচিৎ। 

বরগুনাসহ দেশের উপকূলীয় সাগর-নদীতে রোববার (৪ অক্টোবর) মধ্যরাত থেকে শুরু হয়েছে ২২ দিনের ইলিশ মাছ আহরণ, পরিবহন, মজুদ, বিক্রির উপর নিষেধাজ্ঞা। এ নিষেধাজ্ঞা চলবে আগামী ২৫ অক্টোবর মধ্যরাত অবধি। 

এ ২২দিন প্রজনন ক্ষেত্রে মাছ ধরা যাবে না। এসময় মাছ আহরণ, পরিবহন, মজুদ, বাজারজাতকরণ ও বিক্রি নিষিদ্ধ। এ আইন আমান্য করলে জেল অথবা জরিমানা এবং উভয় দণ্ডের বিধান রয়েছে। 

জেলা মৎস্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, বিষখালী, বুড়ীশ্বর (পায়রা) বলেশ্বর নদীর ৪০টি পয়েন্ট নির্ধারণ করা হয়েছে। এই সকল পয়েন্টে নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে কেউ মা ইলিশ ধরলে কিংবা, মজুদ, বিক্রি করলে তাৎক্ষণিক ভ্রাম্যমাণ আদালতের আওতায় নিয়ে আসা হবে।

বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা বিশ্বজিৎ দেব বলেন, ২২ দিনের ইলিশ সংরক্ষণের বিষয় সকল ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। জেলে সংগঠন, মৎস্যজীবী, আড়তদারসহ ওয়ার্ড পর্যায়ে সচেতনতামূলক সভা করা হয়েছে। জেলা ও উপজেলা টাস্কফোর্সের সভা করে করনীয় বিষয় সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। অতিরিক্ত দায়িত্ব পালনে ইতোমধ্যে যে সকল এলাকায় ইলিশ সংরক্ষণের কার্যক্রম নেই ঐ সকল এলাকার কর্মকর্তা বরগুনায় পদায়ন দেয়া হয়েছে।