Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

চেয়ারম্যানের সহায়তায় রোহিঙ্গাদের ভোটার করার অভিযোগ 

মোহাম্মদ উল্লাহ, চকরিয়া (কক্সবাজার)

অক্টোবর ৬, ২০২১, ০৭:৪০ এএম


চেয়ারম্যানের সহায়তায় রোহিঙ্গাদের ভোটার করার অভিযোগ 

কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলার সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নে চেয়ারম্যানের সহায়তায় রোহিঙ্গাদের ভোটার করার অভিযোগ উঠেছে। এ ইউনিয়নের অন্তত ৩৫-৪০জন রোহিঙ্গা ভোটার রয়েছে। তারা এ এলাকায় এসে বসতি স্থাপন করে বসবাস করে আসছেন। তাদের মধ্যে অনেকে ওই এলাকা থেকে বিয়ে করে স্থায়ী হয়েছেন। এসব কাজে সহযোগীতা করেছেন স্থানীয় চেয়ারম্যান আজিমুল হক আজিম। 

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা রোহিঙ্গা সোলতান আহমদ ভোটার হয়েছেন বাবার নাম ছৈয়দ আলম দেখিয়ে। সে প্রকৃত পক্ষে ছৈয়দ আলমের ছেলে নয়। ছৈয়দ আলমও রোহিঙ্গা হিসেবে এসেছেন দীর্ঘকাল পূর্বে। একইভাবে ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা দেখিয়ে আবুল হাশেমও ছৈয়দ আলমের ছেলে দেখিয়ে ভোটার হয়েছেন। তার আত্মীয় হিসেবে পিতার নামবসিয়ে তারা দুইজনে ভোটার হয়েছেন। এদিকে ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা দেখিয়ে ভোটার হয়েছেন জাহেদুল ইসলাম ও মো. আবদুল্লাহ। দুইজনই রোহিঙ্গা। তারা এখন মানিকপুর বনবিটের অধীনে বনায়নের জায়গা কিনে বসতি স্থাপন করছেন।  

স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, সোলতান আহমদ এলাকায় বার্মাইয়া হিসেবে পরিচিত। সোলতান ছৈয়দ আলমের ছেলে নয়। ছৈয়দ আলমকে পিতা দেখিয়ে সে ভোটার হয়েছে। আর এ বিষয়ে জন্মনিবন্ধন দেয়াসহ যাবতীয় সহযোগীতা করেছেন স্থানীয় চেয়ারম্যান আজিমুল হক। সোলতান চেয়ারম্যান আজিমের চাচাতো ভাইয়ের মেয়ে বিয়ে করেছেন। 

একইভাবে সুরাজপুর-মানিকপুর ইউনিয়নের অন্তত ৩৫-৪০ জন বার্মাইয়া ভোটার হয়েছেন। ইতোপূর্বে তারা ভোটও দিয়েছেন। ২০০৬ সালে ছবিযুক্ত ভোটার তালিকাভুক্ত করেন নির্বাচন কমিশন। এ সময় তারা ভুঁয়া কাগজপত্র দেখিয়ে ভোটার হয়েছেন। 

বিভিন্ন মিথ্যা পরিচয় ও কথিত জন্মসনদ ব্যবহার করে রোহিঙ্গা ভোটার হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন এলাকাবাসী। তারা উর্ধ্বতন প্রশাসনের হস্তক্ষেপ পূর্বক জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। 

উল্লেখ্য, সুরাজপুর ভিলিজার পাড়ায় ইসলামিয়া মাদরাসা ও হেফজখানার তথ্য গোপন করে ৬৫জন এতিমের অর্থ আত্বসাতের অভিযোগে চেয়ারম্যান আজিমসহ ৩জনের বিরুদ্ধে আদালতে সম্প্রতি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলাটি বর্তমানে সিআইডি কক্সবাজারে তদান্তাধিন রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে চেয়ারম্যান আজিমুল হক আজিম বলেন, রোহিঙ্গা ভোটার হওয়ার বিষয়ে আমি অবগত নই। বিস্তারিত কাগজপত্র দেখলে বলতে পারবো তারা কি কারণে কিভাবে ভোটার হয়েছে। রোহিঙ্গা ভোটারের ক্ষেত্রে তার সম্পৃক্ত নে বলে জানান। এতিমের অর্থ আত্বসাতে তার সম্পৃক্ততা নেই বলেও দাবী করেন।

চকরিয়া উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো: শহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, তারা সদ্য সমাপ্ত পৌর নির্বাচন পরবর্তী আসন্ন ইউপি নির্বাচন নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন। তাই রোহিঙ্গা ভোটারের বিষয়ে বিস্তারিত বলতে পারছেন না।   

চকরিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ শামুসল তাবরীজ বলেন, রোহিঙ্গা ভোটার হওয়ার বিষয় নিয়ে তদন্ত করা হবে। এ বিষয়ে কারো সম্পৃক্ততা থাকলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। 

আমারসংবাদ/কেএস