Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪,

‘সৎমায়ের নির্যাতনেই বাবার মৃত্যু হয়েছে’

বাগাতিপাড়া (নাটোর) প্রতিনিধি

অক্টোবর ৬, ২০২১, ০১:০৫ পিএম


‘সৎমায়ের নির্যাতনেই বাবার মৃত্যু হয়েছে’

সৎমা কানিজ ফাতেমার শারীরিক নির্মম নির্যাতনের ১২ দিন পর বাবা বরাত আলীর মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ মেয়ে খালেদা আক্তারের।

নিহত বরাত আলী (৫৫) নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার তালতলা (মাঠ পাড়া) গ্রামের মৃত কিসমত আলীর ছেলে ও কাদিরাবাদ ক্যান্টনমেন্ট পাবলি স্কুলের চতুর্থ শ্রেনীর কর্মচারী ছিলেন।

পরিবার সূত্রে জানা যায়, প্রায় দুই বছর আগে বরাত আলী প্রথম স্ত্রী মারা যাওয়ার পর নাটোরের সিংড়ায় দ্বিতীয় বিয়ে করেন। সেখানে বনিবনা না হওয়ায় ৬\৭ মাস পরেই তাদের বিবাহ বিচ্ছেদ হয়। পরে গত ৬ মাস আগে জেলার লালপুর উপজেলার ধুপইল গ্রামে কানিজ ফাতেমার সাথে বিয়ে করেন বরাত আলী। সন্তানদের সাথে কোন প্রকার যোগাযোগ বা সম্পর্ক রাখা যাবে না এবং স্থাবর অস্থাবর সব কিছুই তার নামে করে দিতে হবে এমন বিষয় নিয়ে বিয়ের পর থেকেই ঝগড়া বিবাদ লেগেই থাকতো বরাত আলী ও তার তৃতীয় স্ত্রী কানিজ ফাতেমার সঙ্গে।

এরই একপর্যায়ে গত ২২ সেপ্টেম্বর বরাত আলীর সাথে তৃতীয় স্ত্রী কানিজ ফাতেমার হাতাহাতি হয়। পরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্নহত্যার চেষ্টা করে বলে কানিজ ফাতেমা তাদেরকে জানায় এবং অসুস্থ অবস্থায় চিকিৎসার জন্য কাদিরাবাদ ক্যান্টনমেন্ট সিএমএইস এ নেয়। সেখান থেকে দায়িত্বরত চিকিৎসক রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করে। রামেক এ চিকিৎসা চলাকালে বরাতের শারিরিক অবস্থার অবনতি দেখে দায়িত্ববর চিকিৎসক বাড়িতে নেয়ার পরামর্শ দেন। সে মোতাবেক লালপুরের ধুপইল সার্জিকাল হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে গত সোমার ৩ সেপ্টেম্বর প্রথম স্ত্রীর সন্তানরা তার নিজ বাড়ি তালতলাতে নিয়ে আসলে সেখানেই মঙ্গলবার (৫ অক্টোবর) বিকাল চারটার দিকে মরা যায় বরাত আলী।

আমার বাবাকে প্রায় মারধর করতো আমার সৎমা কানিজ ফাতেমা। সৎমায়ের অমানুষিক নির্যাতনের কারণে ১২ দিন মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ে আমার বাবা বরাত আলী মারা গেছেন। এর আমি সুষ্ঠু বিচার চাই। এমন দাবি নিহত বরাত আলীর মেয়ে খালেদা আক্তারের।

এ ঘটনায় নিহতের মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য বুধবার (৬ অক্টোবর) নাটোর সদর হাসপাতালে প্রেরণ করেছে বাগাতিপাড়া থানা পুলিশ।

এদিকে বাবাকে নির্যাতন করায় বাগাতিপাড়া মডেল থানায় লিখিত অভিযোগ করেন নিহতের ছেলে আলমগীর। কিন্তু বাগাতিপাড়া থানায় লিখিত অভিযোগ করার ১৫ মিনিট পরে বরাত আলী মারা যায়। এমনটি দাবি করেন নিহতের ছেলে আলমগীর।

বাগাতিপাড়া মডেল থানার ওসি সিরাজুল ইসলাম বলেন, নিহত বরাত আলীর ছেলে লিখিত অভিযোগ করায় তাৎখনিক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে লালপুর ওয়ালিয়া পুলিশ ফাঁড়িতে অভিযোগটি পাঠানো হয় এবং কানিজ ফাতেমাকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সেখানে নেওয়া হয়। মৃত্যুর সঠিক কারণ জানতে মরদেহ ময়না তদন্তের জন্য আজ বুধবার নাটোর সদর হাসপাতালে প্রেরণ করা হয়েছিল। 

তবে মৃতের শরীরের মাথায় গলায় পায়ে এবং নিতম্বে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে হত্যার কনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি। গলায় ফাঁস জনিত নিহতেন খবরের ভিত্তিতে বাগাতিপাড়া থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা করা হয়েছে।

আজ বুধবার ৫টার দিকে মৃত্যু বরাত আলীর দাফন সম্পূর্ণ করা হয় বলে পরিবার সূত্রে জানা যায়। 

আমারসংবাদ/কেএস