Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

জেলা মডেল মসজিদের নির্মাণ কাজ দীর্ঘদিন বন্ধ, দুর্ভোগে মুসল্লিরা

অক্টোবর ১০, ২০২১, ০১:২৫ পিএম


জেলা মডেল মসজিদের নির্মাণ কাজ দীর্ঘদিন বন্ধ, দুর্ভোগে মুসল্লিরা

বঙ্গবন্ধু কন্যা দেশরত্ন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত দেশব্যাপী প্রতিটি জেলা ও উপজেলায় একটি করে মোট ৫৬০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র স্থাপন প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ চলছে। কিন্তু দীর্ঘ কয়েক মাস থেকে নোয়াখালী মডেল মসজিদের কাজ বন্ধ থাকায় চরম দুর্ভোগে রয়েছে মুসল্লিরা। ঠিকাদার বলেন নিউজ করবেন না, আপনার বাসা কোথায়? আমি যুবলীগ করি!!

২০ এপ্রিল ২০১৮ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্স এর মাধ্যমে নোয়াখালী জেলা মডেল মসজিদের নির্মান কাজের উদ্ভোধন করেন। এর প্রেক্ষিতে বায়তুল আমান কোর্ট মসজিদটি ভেঙ্গে পৌর ঈদগাহ মাঠে একটি অস্থায়ী মসজিদ নির্মাণ করা হয়। জেলা শহরের প্রাণ কেন্দ্রে অস্হায়ী মসজিদে মুসল্লিদের নামাজে সংকুলান না হওয়ায় অনেক সময় খোলা আকাশের নিচে নামাজ পড়তে অনেকেই দুর্ভোগে পড়তে দেখা যায়।

মডেল মসজিদটি নির্মাণ কাজের উদ্ভোধনের পর প্রথম প্রথম পুরো দমে কাজ চললেও করোনাকালীন সময়ের পূর্ব থেকে নির্মাণ কাজ বন্ধ হয়ে যায়। এরপর থেকে নির্মাণ কাজ খুড়িয়ে খুড়িয়ে চল্লেও অনেক দিন থেকে নির্মাণ কাজ পুরো দমে বন্ধ রয়েছে।

প্রায় ১৫ কোটি টাকা ব্যয়ে এই মডেল মসজিদ নির্মাণ কাজটি ২০২১ সালের আগস্ট মাসে শেষ হওয়ার কথা থাকলেও ২০২১ সালের সেপ্টেম্বর মাস অতিবাহিত হতে চলছে কিন্তু এখনও ৪০ শতাংশ নির্মাণও কাজ শেষ হয়নি।

মডেল মসজিদের নির্মাণকাজের দীর্ঘসূত্রতার কারণে মুসল্লিদের সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। অস্থায়ীভাবে নির্মিত মসজিদটিতে স্থান সংকুলানের অভাবে মুসল্লিগণ রোধ-বৃষ্টি উপেক্ষা করে খোলা আকাশের নিচে দাড়িয়ে নামাজ পড়তে হচ্ছে। 

ইসলামী ফাউন্ডেশনের উপপরিচালক রেজ্জাকুল হায়দার বলেন, মডেল মসজিদ আমাদের হলেও মসজিদের বাস্তবায়ন কারী সংস্হা গণপূর্ত অধিদপ্তর। তবুও আমরা মসজিদের কাজের বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও গণপূর্তের নির্বাহী প্রকৌশলীকে কাজ শেষ করে আমাদের বুঝিয়ে দেয়ার জন্য অনুরোধ করেছি।

নোয়াখালী গণপূর্ত বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী কামরুল হাসানের নিকট মডেল মসজিদ নির্মাণ কাজে ধীরগতির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারকে বার বার তাগিদ দেওয়ার পরও কাজের কোনো অগ্রগতি না হওয়ায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি অবহিত করেছি। 

ঠিকাদার কত শতাংশ কাজ সম্পূর্ণ করেছেন এবং কত টাকা বিল উত্তোলন করেছে এই বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলীর সাথে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেন। 
 
উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী এমদাদুল হকের নিকট জানতে চাইলে তিনি জানান, আমার থেকে যিনি ভালো বলতে পারবেন তিনি অফিসে নেই। 

পরবর্তীতে মডেল মসজিদ প্রকল্পটির তধারকির দায়িত্বে থাকা উপ-সহকারী প্রকৌশলী (৩) মোঃ আবুল হাচান এর সাথে যোগাযোগ করলে,কাজ বন্ধ থাকার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন,  প্রকল্পটির কাজের মেয়াদ এখনও শেষ হয়নি। এটা জেলা প্রশাসকের নলেজে আছে।

তবে আমরা ঠিকাদার কে কাজটি শেষ করার জন‍্য বার বার বলেছি,ঠিকাদার অগ্রিম টাকা চাচ্ছে,আমরা না করে দিয়েছি। ঠিকাদার আগামী ৫ অক্টোবরের মধ‍্যে পুনরায় কাজ শুরু করবে বলে জেলা প্রশাসকের সামনে লিখিত বন্ড দিয়েছে।

যদি ঠিকাদার না করে সে ক্ষেত্রে আমরা অন‍্য ঠিকাদার কে বলে রেখেছি,তাকে দিয়ে কাজ শেষ করবো। কিন্তু ঠিকাদার ৫ তারিখের  মধ‍্যে ৪-৫ গাড়ী ভিটি বালু পেলেছে মাত্র আর কোন কাজ করতে দেখা যায় নি।

নোয়াখালী জেলা মডেল মসজিদ নির্মাণ প্রকল্পটির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কর্ণধার জাহাঙ্গীরকে নির্মাণ কাজ বন্ধের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি অসুস্থ ছিলাম। কিছু সমস্যা আছে ভাই, গণপূর্ত কিছু বিল দিতে বলেছি তারা দিচ্ছে না। 

কতো শতাংশ কাজ করে কতো টাকা বিল নিয়েছেন জানতে চাইলে ঠিকাদার বলেন,  ৫ কোটি নিয়েছি। আরো পাবো। এছাড়াও কিছু অগ্রিম দেওয়ার বিধান আছে, তারা দিচ্ছে না।

ভাই আপনি নিউজ করবেন না, আপনার বাসা কোথায়? আমি যুবলীগ করি। ডিসি সাহেবের সাথে কথা হয়েছে। আমাকে কাজ করার সময় দিয়েছে।

বর্তমানে মডেল মসজিদ নির্মাণ কাজ দীর্ঘদিন বন্ধ থাকায় ঝোঁপ জঙ্গলে পরিণত হয়ে আছে। অথচ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুজিববর্ষ উপলক্ষে নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলা মডেল মসজিদ সহ প্রকল্পের আওতায় প্রাথমিক পর্যায়ে ৫০টি মডেল মসজিদ ও ইসলামিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র উদ্বোধন করেছেন। কিন্তু ৩য় ধাপের জেলা মডেল মসজিদ নির্মাণ কাজ কবে শেষ হবে এর সদোত্তর পাওয়া যাচ্ছে না? সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি খতিয়ে দেখে দ্রুত জেলা মডেল মসজিদটি নির্মান কাজ সম্পূর্ণ করার জন্য মুসল্লিগণ ও জেলাবাসী জোর দাবি জানান।

আমারসংবাদ/এআই