Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

সেই শিক্ষককে জেলে পাঠিয়ে ফায়দা নিলেন ইউপি চেয়ারম্যান

সাফায়াত সাকিব, লক্ষ্মীপুর সদর

অক্টোবর ১১, ২০২১, ১১:৪০ এএম


সেই শিক্ষককে জেলে পাঠিয়ে ফায়দা নিলেন ইউপি চেয়ারম্যান

গত ১৮ সেপ্টেম্বর লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার হামছাদী কাজির দিঘীরপাড় আলিম মাদরাসায় শৃঙ্খলা ও নৈতিক শিক্ষায় শাস্তিমূলকভাবে কয়েকজন ছাত্রের বখাটে স্টাইলের চুল কেটে দেন শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির। এ ঘটনার ১ মিনিট ১০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও গত শুক্রবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ভাইরাল হয়। প্রায় ২০ দিন আগের এই ঘটনায় শুক্রবার রাতেই ওই শিক্ষককে আটক করে রায়পুর থানা পুলিশ। পরে মাদ্রাসার এক অভিভাবকের লিখিত অভিযোগের ভিত্তিতে শিশু আইনের ৭০ ধারায় শিক্ষক মঞ্জুরুল কবিরকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।

এদিকে চুল কেটে দেয়া একাধিক শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা বলেন, বখাটে স্টাইলের চুল প্রকাশ্যে কেটে দিয়ে শিক্ষক মঞ্জরুল কবির কোনো অপরাধ করেননি। এটা অপরাধ হলে ঘটনার পর ২০দিন পর্যন্ত আমরা চুপচাপ থাকতাম না। স্যারকে ষড়যন্ত্রমূলকভাবে ফাঁসানো হয়েছে। 

একজন অভিভাবক বলেন, স্যারকে ছাড়িয়ে আনার জন্য আমরা গত শুক্রবার রাতেই থানায় গিয়েছিলাম। কিন্তু পুলিশ আমাদের ভুল বুঝিয়ে অভিযোগ নিয়েছে। যেকোনো একজন অভিভাবক লিখিতভাবে চুল কাটার ঘটনা বর্ণনা করলে স্যারকে ছেড়ে দেয়া হবে বলে পুলিশ অভিযোগ লিখে নেয়। 

তবে এ মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও রায়পুর থানার উপপরিদর্শক শেখ কামাল বলেন, শাহাদাত হোসেন নামে এক শিক্ষার্থীর মা বাদী শিশু আইনের ৭০ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন। পরে এ মামলায় গত শনিবার আদালতের মাধ্যমে শিক্ষক মঞ্জুরুল কবিরকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

তবে স্থানীয় অনেকেই মনে করছেন আসন্ন নির্বাচনে শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে উঠতে পারে এই আশঙ্কায় পরিকল্পিতভাবে লক্ষ্মীপুরের সেই শিক্ষক মঞ্জুরুল কবিরকে ফাঁসিয়ে দিয়েছেন লক্ষ্মীপুরের রায়পুর উপজেলার বামনী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা তাফাজ্জাল হোসেন। একটি ভিডিওকে পুঁজি করে শিক্ষক ও ছাত্র সমাজকে বিতর্কিত করার মাধ্যমে তিনি এই হীন চক্রান্ত হাসিল করেন বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও স্থানীয়দের এই অভিযোগকে ভিত্তিহীন বলে উড়িয়ে দিয়েছেন ইউপি চেয়ারম্যান তাফাজ্জল।

হামছাদী কাজীর দীঘিরপাড় আলিম মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা বালাকাত উল্লাহ বলছেন, শিক্ষক মঞ্জুরুল কবির এই মাদরাসার শৃঙ্খলা ও নৈতিক কমিটির সদস্য। তিনি শৃঙ্খলা ও নৈতিকতা শিক্ষার অংশ হিসেবে এবং অভিভাবকদের অনুরোধে ছাত্রদের বখাটে স্টাইলের চুল কেটে দেন। তবে যিনি ভিডিওটি করেছেন এবং ২০দিন পর সোশ্যাল মিডিয়ায় ছেড়ে দিয়েছেন, সেই শিক্ষকের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি তিনি। তাছাড়া ওই শিক্ষকের সাথে কথা বলার সুযোগও দেননি অধ্যক্ষ বালাকাত উল্যাহ।

আমারসংবাদ/কেএস