Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

মোবাইলের আলোতে চলে চিকিৎসা!

আল-আফতাব খান সুইট, বাগাতিপাড়া (নাটোর)

অক্টোবর ১৪, ২০২১, ০৯:২৫ এএম


মোবাইলের আলোতে চলে চিকিৎসা!

নেই জেনােরটর এর ব্যবস্থা, বিকল্প ব্যবস্থা হিসেবে সৌরবিদ্যুৎ রাখা হয়েছে। কিন্তু সেটিও নষ্ট। তাই রাতে বিদ্যুৎ চলে গেলে চিকিৎসক ও নার্চরা চিকিৎসার কাজ চালান মোবাইল ফোন আর টর্চলাইটের আলো দিয়ে। বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় রাতে লোডশেডিং হলেই হাসপাতালের পুরুষ ও মহিলা দুইটি ওয়ার্ডই ঘুটঘুটে অন্ধকার হয়ে যায়। 

এসময় চরম ভোগান্তিতে পড়তে হয় হাসপাতালের স্টাফ সহ হাসপাতালে ভর্তি রোগী ও তাদের স্বজনদের। দীর্ঘ দিন থেকেই এমন অবস্থা চলে আসছে নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার ৩১ শয্যা বিশিষ্ট স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে।

হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, জেনারেটর না থাকায় বিদ্যুৎ চলে গেলে হাসপাতালে আলোর জন্য বিকল্প হিসেবে সৌরবিদ্যুৎ ব্যবহার করা হতো। কিন্তু প্রায় তিন মাস আগে সেটিও নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এখন আর ব্যবহার করা যাচ্ছে না। তাই অন্ধকারেই থাকতে হচ্ছে রোগীদের। 

তবে রোগীর আত্নীয়-স্বজনরা মোবাইলে আলো জ্বালীয়ে বা টর্চ লাইটের আলো ব্যবহার করে থাকেন। আর নার্স ও চিকিৎসকরা টর্চ লাইটের আলো দিয়ে কাজ চালিয়ে নেন। তবে ৩১ শয্যার এই হাসপাতালটি ৫০ শয্যায় উন্নিত করনে নতুন ভবনের কাজ প্রায় শেষের দিকে। ভবনটি হস্তান্তর হলে হয়তো এই সমস্যা আর থাকবেনা।

বুধবার (১৩ অক্টোবর) রাতে সরেজমিনে গিয়ে হাসপাতালটিতে বিদ্যুৎ যাওয়ার পরে দেখা যায়, দুইটি ওয়ার্ডের কোনোটিতেই আলোর ব্যবস্থা নেই। সৌরবিদ্যুতের লাইট গুলোও জ্বলছেনা। অন্ধকারের মধ্যেই রোগী ও তাদের স্বজনরা বসে আছেন। হাসপাতালটিতে চিকিৎসা নিতে আসা পার্শ্ববর্তী উপজেলা লালপুর থেকে আসা ষাটোর্ধ্ব নূর মহাম্মদ বলেন, শ্বাসকষ্ট জনিত কারণে তিনি ৫ দিন আগে এই হাসপাতালের পুরুষ ওয়ার্ডে ভর্তি হয়েছেন।

 সেদিন থেকেই রাতে বিদ্যুৎ চলে গেলে এই হাসপাতালে আলোর বিকল্প কোনো ব্যবস্থা নেই। অন্ধকারেই থাকতে হয় তাঁদের। উপজেলার মুরাদপুর গ্রামের রাজিয়া বেগম বলেন, ৬ দিন থেকে তিনি তাঁর মাকে নিয়ে এই হাসপাতালে আছেন। দিনের বেলা বিদ্যুৎ না থাকলে গরমে অস্থির হয়ে পড়তে হয়। আবার রাতের বেলায় অন্ধকারে মোবাইলের আলো জ্বালিয়ে থাকতে হয়।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে হাসপাতালের একজন স্টাফ বলেন, হাসপাতালে জেনারেটর না থাকায় বিদ্যুত চলে গেলে বিকল্প হিসেবে সৌরবিদ্যুতের আলো জ্বালানো হতো। কিন্তু গত প্রায় তিন মাস থেকে তাও নষ্ট হয়ে যাওয়ায় এখন অন্ধকারেই থাকতে হয়। কর্তৃপক্ষকে জানিয়েও কোনো লাভ হয় না।

স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ রতন কুমার সাহা এব্যাপারে বলেন, আমি এই হাসপাতালে আসার আগে থেকেই এই অবস্থা ছিলো। আর হাসপাতালটির নতুন ভবনের কাজ চলমান থাকায় পুরাতন ভবনে কিছুটা ত্রুটি রয়েছে। নতুন ভবনটি হস্তান্তর হয়ে গেলে হয়তো এই সমস্যা আর থাকবেনা।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রিয়াংকা দেবী পাল বলেন, আমার জানা মতে বর্তমানে হাসপাতালটিতে জেনারেটরের কোনো বরাদ্দ নাই। তবে নতুন ভবনটির কাজ প্রায় শেষ, অল্পদিনের মধ্যেই হাতে পাওয়া যাবে। তখন এই সংক্রান্ত আর কোনো সমস্যা থাকবে না।

আমারসংবাদ/এআই