অক্টোবর ১৬, ২০২১, ১০:৫৫ এএম
ফরিদপুর সদরস্থ চাঁদপুর ইউনিয়নের বাঘারকান্দী গ্রামে শতাধিক ছাত্রের কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমেই একটি বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে।
কোরআন-সুন্নাহ অনুযায়ী বিয়ের সকল আয়োজনের পাশাপাশি চিরাচরিত বিয়ের নিয়ম ভেঙে গান-বাজনার পরিবর্তে বিয়েতে পবিত্র কোরআন খতমের আয়োজন করা হয়।
শুক্রবার (১৫ অক্টোবর) বাঘারকান্দী গ্রামের ওবায়দুর রহমানের ছেলে মধুখালী উপজেলার রায়পুর ইউনিয়ন ব্রাহ্মণকান্দা গ্রামের শহিদুল ইসলামের মেয়ে জাকিয়া সুলতানা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন।
এলাকাবাসী ও পারিবারিক সূত্রে জানাযায়, বর মোহাম্মদ ইয়াছিন আল আরাফাত জিহাদ (২১) চট্টগ্রাম বি এফ শাহীন কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। কনে জাকিয়া সুলতানা মধুখালী মহিলা মাদ্রাসার ছাত্রী।
বরের বাবা ওবায়দুর রহমান বলেন, আমার বড় ছেলে মোঃ ইয়াছিন আরাফাত, মেজ ছেলে আশিকুর রহমান পড়েন চট্টগ্রামের একটি মাদরাসায় এবং ছোট মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস পড়েন ফরিদপুর শহরের ফাতেমাতুজ্জজোহরা মাদরাসায়। আমার চাওয়া, আমি নিজে এবং পরিবারের সদস্যদের কোরআন-সুন্নাহকে ধারণ জীবন যাপন করতে চাই। সে অনুযায়ী বড় ছেলেকে কোরআন-সুন্নাহ অনুযায়ী বিয়ের সকল আয়োজনের পাশাপাশি চিরাচরিত বিয়ের নিয়ম ভেঙে গান-বাজনার পরিবর্তে বিয়েতে পবিত্র কোরআন খতমের আয়োজন করা হয়। আমার অন্য ছেলে-মেয়েকেও একই পদ্ধতিতে বিয়ে দেওয়ার ইচ্ছা আছে।
কনের বাবা শহিদুল ইসলাম বলেন, আমার বিয়াই ওবায়দুর রহমান একজন প্রকৃত ইসলামের আদর্শের মানুষ। তিনি বিয়ের অনুষ্ঠানটি কেমন হবে আগেই দিক নির্দেশনা দেন। সে অনুযায়ী শুক্রবার পাঁচটি মাইক্রোবাসে মোট ৬০ জন বরযাত্রিসহ বর আসেন। পরে বাড়ির পাশে ব্রাহ্মণকান্দা জামে মসজিদে জুম্মার নামাজ আদায়ের পর বিয়ের কাজ সম্পন্ন হয়। বিয়ে পড়ানোর শেষে দুপুরের ভোজের আগে সবাইকে দুধ ও খেজুর খেতে দেওয়া হয়।
চানপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি ওয়াহিদুজ্জামান সবুজ জানান, পরিবারটি কোরআন-সুন্নাহ অনুযায়ী জীবন যাপন করেন। ছেলের বিয়ে উপলক্ষে বৃহস্পতিবার বাড়ির পাশে মহিলা মাদরাসার মাঠে গায়ে হলুদের অনুষ্ঠানে স্থানীয় চারটি মাদরাসার প্রায় শতাধিক হাফেজ বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কোরআন খতম করেন। সন্ধ্যার পরে ওয়াজ মাহফিল ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে ওয়াজ নসিহত করেন ধর্মীয় বক্তা রুহুল আমীন ফারুকী, শিশুবক্তা গোলাম সালমান রাজীসহ স্থানীয় ওলামায়ে কেরাম।
এ ব্যাপারে বর ইয়াছিন আল আরাফাত জিহাদ বলেন, বিয়েতে এমন আয়োজন আমার বাবার অনুপ্রেরণা। তিনিসহ আমাদের পরিবারের সবাই চেষ্টা করি ইসলামের আদর্শ মেনে চলতে। তাই আমার পিতার এমন একটি মহতী উদ্যোগ সফল হয়েছে। আমার বাবার এমন উদ্যোগ দেখে ভবিষ্যত প্রজন্ম ইসলামী ঘরনায় ফিরে আসুক এটাই আমাদের চাওয়া।
এ বিষয়ে স্থানীয় চাঁদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শামসুন্নাহার মুহিদ বলেন, ওয়াজ মাহফিল ও কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে বিয়ের অনুষ্ঠান সত্যিই প্রশংসনীয়। ইসলাম ধর্মের মানুষ এমন বিয়ের আয়োজন দেখে শিক্ষা নেওয়ার পাশাপাশি সকলের চর্চা করা উচিৎ বলে তিনি মনে করেন।
আমারসংবাদ/এআই