Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

রাজারহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা

রাজারহাট (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি

অক্টোবর ২১, ২০২১, ১১:৫৫ এএম


রাজারহাটের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত, ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা

উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ি ঢল ও ভারিবর্ষণে তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ২০সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে রাজারহাট উপজেলার ঘড়িয়াল ডাঁঙ্গা ও বিদ্যানন্দ ইউনিয়নে দুই সহস্রাধিক পরিবার পানি বন্দী হয়ে পরেছে। 

পানিতে ডুবে গেছে আলু, মরিচ, পেঁয়াজ শাক-সবজি সহ কয়েক শত হেক্টর আগাম জাতের শীতকালীন সবজি ক্ষেত।

বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) সকালে কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক মোঃ রেজাউল করিম ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরে তাসনিম চলমান বন্যা পরিস্থিতি সরেজমিনে পরিদর্শন করেছেন।

সরেজমিনে জানা গেছে, বুধবার দুপুর থেকে উপজেলার ঘড়িয়াল ডাঁঙ্গা ও বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের বেশ কিছু এলাকা প্লাবিত হতে শুরু করে। 

সন্ধ্যা থেকে হু হু করে বাড়তে থাকে পানি। আকস্মিক তীব্র পানি প্রবাহ দেখে এলাকাবাসী আতঙ্কিত হয়ে পরেন। অনেকে বাড়িঘর ছেড়ে বাঁধের রাস্তা ও আত্মীয় স্বজনের বাড়িতে আশ্রয় গ্রহণ করেন। 

এছাড়া বুধবার স্থানীয় ঘড়িয়াল ডাঁঙ্গা ইউনিয়ন পরিষদ কর্তৃপক্ষ ওই স্থানগুলোতে রেড এলার্ট জারি করেন। ভারতের গজল ডোবার সবকটি গেট খুলে দেয়ায় এবং তিস্তা ব্যারেজের ফ্লাট বাইপাস ভেঁঙ্গে যাওয়ায় পানি উন্নয়ন বোর্ড ব্যারেজের গেটগুলো খুলে দেয়ার কারণে রাজারহাট সহ পার্শ্ববর্তী জেলা ও উপজেলায় বন্যা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় বলে জানা গেছে।

বর্তমানে উপজেলার ঘড়িয়াল ডাঁঙ্গা ইউনিয়নের গতিয়াশাম, নামাভরাট, বগুড়াপাড়া মধ্যচর ও বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের চতুরা, মন্দির, রামহরি, তৈয়বখাঁ, পাড়ামৌলায় মানুষদের খাবার সঙ্কট দেখা দিয়েছে। খাদ্য সামগ্রী ঘরে থাকা সত্বেও অনেকে রান্না করে খেতে পারছেন না।

গতিয়াসাম গ্রামের মধ্য চরে পানিবন্দি পরিবারের সালেহা খাতুন জানান, তিস্তার ভাঙেন শিকার হয়ে মধ্যচরে আশ্রয় নেই। গতকাল মাগরিবের পর থেকেই বাড়তে থাকে পানি। রাত গভীর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে পানি। বাড়ীতে পানি উঠার কারণে রান্না বান্না করা সম্ভব হয়নি। পরিবারের পাচজন নিয়ে অনাহারে আছি। বিশুদ্ধ খাবার পানি সংকট। 

বগুরা পারা নিবাসী আব্দুল জলিল জানান, সকালে বাড়ীতে রান্নাবান্না করা সম্ভব হয়নি। আমার পরিবারের পাঁচ সদস্য জন্য জামাইর বাড়ী হতে খাবার পাঠিয়েছে আজ তাই খেলাম। 

একই পারার হানিফ আলি,শান্তনা রানী,লাভলী বেগম ও পুতুল রানী জানান, আমার বাড়ীতে এখনো একবুক পানি। গতকালের রান্না করা খাবার সকালে খেয়েছি আর দুপুরে শুকনো মুড়ি খাইছি।

কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল-মামুন বলেন, বৃস্পতিবার সকাল পর্যন্ত তিস্তা নদীর কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদ সীমার ৩০ সেন্টিমিটার উপর দিয়ে পানি প্রবাহিত হয়েছে। 

রাজারহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুরে তাসনিম জানান, ঘড়িয়াল ডাঁঙ্গা ও বিদ্যানন্দ ইউনিয়ন পরিষদের মাধ্যমে ইতোমধ্যে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের মাঝে ১০ মেট্রিক টন চাল বিতরণণ করা হয়েছে এবং আরো ১হাজার ২শ প্যাকেট শুকনো খাবার বিতরণের প্রস্ততি চলছে।

আমারসংবাদ/এআই