Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

হঠাৎ দহগ্রামে বন্যা, পানি বন্দি প্রায় দেড় হাজার পরিবার

পাটগ্রাম (লালমনিরহাট) প্রতিনিধি

অক্টোবর ২১, ২০২১, ০২:৩০ পিএম


হঠাৎ দহগ্রামে বন্যা, পানি বন্দি প্রায় দেড় হাজার পরিবার

গুড়ি গুড়ি বৃষ্টি আর উজান থেকে নেমে আসা পানির ঢলে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম ইউনিয়নের উপর দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা নদীর পানি আকস্মিকভাবে বৃদ্ধি পেয়ে ব্যাপক বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। মঙ্গলবার রাত থেকে হঠাৎ করেই তিস্তা নদীর পানি বৃদ্ধি পেতে থাকে। 

পরদিন বুধবার (২০ অক্টোবর) বিকেল ৩ টা পর্যন্ত উজান থেকে নেমে আসা বন্যার পানিতে দহগ্রাম ইউনিয়নের তিস্তা নদী তীরবর্তী এলাকা পানিতে তলিয়ে গেছে। 

বন্যা কবলিত এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা কুদ্দুস আলী (৬০) বলেন, দহগ্রামে এ ধরণের বন্যা আগে কখনো দেখেনি তিনি। দুই দিনের বৃষ্টি আর বন্যায় দুর্ভোগে ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছেন দেড় হাজার পরিবারের প্রায় ৬ হাজার মানুষ। 

সরেজমিনে দহগ্রামের একাধিক বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বর্ষা মৌসুমে বা বন্যায় দহগ্রামের যে সকল এলাকা প্লাবিত হয় না গত মঙলবারের হঠাৎ ধেয়ে আসা পানিতে সে এলাকা গুলোতে ৩ ফিট পর্যন্ত পানি বৃদ্ধি পায়। ভারতের পশ্চিমবঙ্গের জলপাইগুড়ি মহকুমার মেখলিগঞ্জ এলাকা দিয়ে প্রবাহিত তিস্তা নদী। বাংলাদেশের পাটগ্রাম উপজেলার দহগ্রাম ইউনিয়নের কোল ঘেষে প্রবাহিত। তিস্তা নদী হয়ে বয়ে আসা প্রবল পানি আর গত দুইদিন ধরে গুড়ি গুড়ি বৃষ্টিতে দহগ্রাম ইউনিয়নের ১, ৪, ৬, ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডে বন্যা প্রবল আকার ধারণ করে। পাটগ্রাম-দহগ্রাম যাতায়াতে প্রধান আঞ্চলিক সড়কের দক্ষিণ দিকে তিস্তা নদী প্রবাহিত, এ দিকের সব গ্রাম গুলো বন্যায় প্লাবিত হয়েছে। প্রায় দেড় হাজার একর আমন ধান, চা বাগান, অন্যান্য ফসলি ক্ষেত বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। ভেসে গেছে পুকুরের মাছ। ভেঙে গেছে সেতু, রাস্তাঘাট, উপড়ে পরেছে বিদ্যুতের খুটি। প্রায় তিন থেকে চার শ বসতবাড়ি ক্ষতি হয়েছে। পাকা ও কাঁচা সড়ক বন্যায় ভেঙে চলাচল বন্ধ রয়েছে। নৌকায় যাতায়াত করছে অনেকে। বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়েছে ৩টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। পানিবন্দী পরিবার গুলো শিশু, বৃদ্ধ, গৃহপালিত পশু নিয়ে পড়েছে চরম দুর্ভোগে। বন্যা কবলিত এলাকাসমূহ ঘুরে দেখেন পাটগ্রাম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রুহুল আমীন বাবুল, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাইফুর রহমান, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা উত্তম কুমার নন্দী ও উপজেলা প্রকৌশলী মাহবুব- উল আলম। 

পানিবন্দি পরিবারগুলোর মাঝে ব্যক্তিগত উদ্যোগে শুকনো খাবার বিতরণ করেছেন দহগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান কামাল হোসেন, ওই ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান হাবিবুর রহমান হাবিব, ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য হাবিবুর রহমান হবি। তবে বৃহস্পতিবার (২১ অক্টোবর) সকাল থেকে বন্যার পানি কমতে শুরু করেছে।

এ বিষয়ে পাটগ্রাম উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মো. রুহুল আমীন বাবুল  জানান, বন্যা কবলিত এলাকার মানুষের মাঝে তাৎক্ষণিক  ৫০০ পেকেট শুকনা খাবার বিতরণ করা হয়েছে। আগামীকাল (শুক্রবার) ২ হাজার মানুষের মাঝে ২০ মে.টন চাল বিতরণ করা হবে। বন্যায় যাদের বাড়িঘর ভেঙে গেছে তাদের টিন ও অন্যান সহায়তা পরবর্তীতে দেয়া হবে। 

আমারসংবাদ/কেএস