Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

তালিকায় নাম থাকলেও চাল পাচ্ছেন না হত-দরিদ্ররা!

গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি

অক্টোবর ২২, ২০২১, ০৮:৩৫ এএম


তালিকায় নাম থাকলেও চাল পাচ্ছেন না হত-দরিদ্ররা!

প্রায় দশ মাস আগে আলুফা বেগমের নামটি ভিজিডির তালিকায় অন্তুর্ভুক্ত হয়েছে। তালিকায় নাম তুলতে চেয়ারম্যানকে দিতে হয়েছে টাকা। তবুও অদ্যবধি ভিজিডির চাল পাননি তিনি। তালিকায় নাম থাকলেও চাল না পাওয়ার দলে আলুফা একা নন। তার মতো অন্তত ১২টি হত-দরিদ্র পরিবার ভিজিডির এই সুবিধা বঞ্চিত হয়েছেন। 

আলুফা বেগমের বাড়ি গুরুদাসপুর উপজেলার বিয়াঘাট ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের যোগেন্দ্রনগর গ্রামে। এই ঘটনার প্রতিকার চেয়ে গতকাল শুক্রবার সকালে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগীরা। ওই অভিযোগে ভিজিডির তালিকায় নাম থাকা সুবিধা বঞ্চিত ১২ জন নারীর স্বাক্ষর রয়েছে।

ভুক্তভোগী আলুফা জানান, তিনি দিনমজুরী করে কোনমতে দিনাতিপাত করছেন। পেটের তাগিদে ভিজিডি কার্ড পেতে চেয়ারম্যানের কাছে ধর্ণা দেন। কিন্তু ভিজিডির কার্ডে নাম অন্তর্ভুক্ত করতে টাকার দাবি করেন চেয়ারম্যান। তালিকায় নাম উঠাতে করোনাকালীন অভাবের সময়ও সুদের ওপর টাকা নিয়ে বিয়াঘাট ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানকে দিলেও আজ পর্যন্ত চাল পাননি।

ভুক্তভোগিদের মধ্যে ৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা তাসলিমা বেগম, সালমা বেগম, ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পারভিন বেগম, শাপলা খাতুন ও ৬ নম্বর ওয়ার্ডের রিনা খাতুনসহ তালিকায় নাম থাকা ১২ জন নারী জানান, তারা দরিদ্র হলেও ভিজিডির জন্য প্রায় দশমাস আগে চেয়ারম্যানকে টাকা দিয়েছেন। সেসময় কার্ড দেওয়ার আশ্বাস দিলেও পরবর্তীতে বাছাইপর্বে নাম বাতিলের কথা জানান চেয়ারম্যান মোজাম্মেল। সম্প্রতি তাদের মধ্যে একজনের টাকা ফেরতও দিয়েছেন চেয়ারম্যান নিজেই।

৮ নম্বর ওয়ার্ডের ভুক্তভোগি নারী শিউলি বেগম জানান, সম্প্রতি জানতে পারেন ভিজিডির তালিকায় তাদের নাম আছে। কিন্তু ১২ জন দরিদ্রের চাল তুলে নেন চেয়ারম্যান নিজেই। একারণে তারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।

তবে চেয়ারম্যান মোজাম্মেল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আসন্ন ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা কুৎসা রটাচ্ছেন। কিছু মানুষকে প্রভাবিত করে মিথ্যা অভিযোগ দিচ্ছেন। তাছাড়া অভিযোগকারীদের নাম ভিজিডির তালিকায় রয়েছে। তারা কেন চাল পাননা তা তিনি জানেন না।

খোঁজ নিয়ে জানাগেছে, বিয়াঘাট ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের ৩ জন, ৫ নম্বর ওয়ার্ডের ৪ জন, ৬ নম্বর ওয়ার্ডের ২ জন ও ৮ নম্বর ওয়ার্ডের ১ নারীর ভিজিডি চক্র-২০২১ এর তালিকা নাম রয়েছে। কিন্তু তারা দশ মাস যাবৎ সরকারি সুবিধার এই চাল পাননা। 

গুরুদুসপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. তমাল হোসেন ভিজিডি বঞ্চিতদের অভিযোগ পাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, অভিযোগে তিনি জানতে পেরেছেন- ভিজিডির তালিকায় নাম থাকা সত্তেও চাল পাচ্ছেন না বিয়াঘাট ইউনিয়নের ১২টি হত-দরিদ্র পরিবার। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

আমারসংবাদ/এআই