Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪,

তিস্তায় পানি কমলেও বেড়েছে দুর্ভোগ

ডিমলা (নীলফামারী) প্রতিনিধি

অক্টোবর ২২, ২০২১, ০৯:৪০ এএম


তিস্তায় পানি কমলেও বেড়েছে দুর্ভোগ

বন্যা পরবর্তী তিস্তা পারের মানুষের দিন কাটছে চরম দুর্ভোগে। ছেলে মেয়ে পরিবার পরিজন নিয়ে বিড়ম্বনার স্বীকার হয়েছেন হাজার মানুষ।

শুক্রবার (২২ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় বিপদসীমার (৫২ দশমিক ৬০) ৫৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে বন্যার পানী প্রবাহিত হচ্ছে। 

তবে বুধবার (২০ অক্টোবর) ভারী বর্ষণ আর উজানের ঢলে ওই পয়েন্টে বিপদসীমার ৭০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে বন্যার পানি প্রবাহিত হয়। 

এসময় ডালিয়া পানি উন্নয়ন বোড (পাউবো) তিস্তা বেষ্টিত এলাকায় রেড অ্যালার্ট (লাল সংকেত) জারি করেন।

গত মঙ্গলবারে শুরু হওয়া বন্যায় উপজেলার নিম্নাঞ্চলসহ হাজার হাজার পরিবার পানী বন্দি হয়ে পড়ে। সবাই জীবন বাঁচার তাগিদে বাড়ী ঘর সরানোর কাজে ব্যস্ত হয়ে পড়ে।

এ অবস্থায় বানভাসীদের হাতে কাজ না থাকায় আয় উপার্জন বন্ধ হয়ে গেছে। বন্যার পানিতে জলবদ্ধতা তৈরী হওয়ায় রান্না ঘরে চুলা পর্যন্ত জ্বলছে না। কোনোরকমে শুকনা খাবার খেয়ে দিন যাপন করছেন হাজার হাজার পরিবার। 

অপরদিকে, শিশু খাদ্য সংকটে পড়েছে বানভাসী পরিবারের অভিভাবকরা। গবাদী পশুর খাদ্য সংকট তো রয়েছেই। এছাড়া ভেঙে পড়েছে বানভাসীদের স্বাস্থ্য সেবা। বিশদ্ধ পানীর (সুপেয়) অভাব দেখা দিয়েছে। 

নীলফামারী ডিমলা উপজেলার পূর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের তিনটি গ্রাম একবারে নদীর কড়াল গ্রাসে। ওই তিন গ্রামে বাস করেন অন্তত দশ হাজার মানুষ। নদীকে ঘিরে চলে তাদের জীবনযাত্রা। ফসলি জমি বন্যার পানীতে তলিয়ে বিপাকে পড়েছে। কাজের সন্ধ্যানে বাদ্য হয়ে উপজেলার বাহিরে গিয়ে অন্যের বাসা বাড়ীতে কাজ করে, রিকশা চালিয়ে এখন সংসার চালাতে হচ্ছে তাদের।

পুর্ব ছাতনাই কলোনি গ্রামের তোফাজ্জুল হোসেন (৫৭) বলেন, ভারতের বন্যা ও উজানের পাহাড়ী ঢল এলে তিস্তার পানী বেড়ে যায়। নিমিষেই তলিয়ে যায় এলাকার শত শত গ্রাম। রক্ষা করা যায় না বসতভিটা, গরু ছাগল, হাঁস মুরগী, জমির ফসল ও শত শত একর পুকুরের মাছ। 

তিনি বলেন, বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও দুর্ভোগ কমেনি জেলার বিশেষ করে ডিমলার ছয়টি ইউনিয়নের ১০ হাজার মানুষের। এখনো পানীতে তলিয়ে রয়েছেন নিন্মাঞ্চলসহ কিছু কিছু ঘর বাড়ী। সরকারী ভাবে যেটুকু সহযোগিতা করা হচ্ছে, সেটিও পর্যাপ্ত নয়। বন্যা পরবর্তী পুর্ণবাসনের জন্য সরকারের পক্ষে নেই কোন দির্ঘ মেয়াদি উদ্দ্যোগ। বন্যা এলে ত্রাণ সামগ্রী নিয়ে চেয়ারম্যান মেম্বারদের হুরাহুড়ি শুরু হয় কিন্ত স্থায়ী সমাধানের নেই কোন ভূমিকা।

পুর্ব ছাতনাই ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আব্দুল লতিফ খান জানান, বানভাসী মানুষের বন্যা পরবর্তী পুর্ণবাসন করা জরুরী হয়ে পড়েছে। ঘরবাড়ী স্থাপনসহ আর্থিক সহায়তার একান্ত দরকার।

জেলা প্রশাসক মো. হাফিজুর রহমান চৌধুরী বলেন, বন্যা কবলিত এলাকার প্রায় ৪৯ মেট্রিক চাল, ১০ লাখ টাকা ও প্রচুর শুকনো খাবার বিতরন করা হয়েছে। 
প্রয়োজন অনুযায়ী যেখানে যতটুকু লাগে দেওয়া হবে। তাদের পুর্ণবাসনের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নির্দেশ দেয়া হয়েছে।

আমারসংবাদ/এআই