Amar Sangbad
ঢাকা মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল, ২০২৪,

কৃষকের সবুজ স্বপ্নে ছেয়ে গেছে মাঠের পর মাঠ

জহির খান, বরিশাল

অক্টোবর ৩১, ২০২১, ০৯:৫০ এএম


কৃষকের সবুজ স্বপ্নে ছেয়ে গেছে মাঠের পর মাঠ

দেশের অন্যতম খাদ্য ভাণ্ডার বরিশালের সর্বত্র বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে সমুদ্রের ছোট ছোট ঢেউয়ের মতো সবুজ সমুদ্রের ঢেউয়ে দুলে উঠেছে কৃষকের স্বপ্ন। কৃষকের সবুজ স্বপ্নে ছেয়ে গেছে বিস্তীর্ণ মাঠ। চোখ যতদূর যায় দৃষ্টিজুড়ে এখন সবুজ রোপা আমন ধান বাতাসে দোল খাচ্ছে। প্রতিটি মাঠ এখন কৃষকের সবুজ স্বপ্নে ভরা। রোপা আমন ধানের ভালো ফলনের আশায় কৃষকের মুখে ফুঁটেছে হাসি। চলতি মৌসুমে বাম্পার ফলনের আশা করছেন এ অঞ্চলের চাষিরা।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, জেলায় লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এবার ৬৯৫ হেক্টর বেশি জমিতে রোপা আমনের আবাদ হয়েছে। রোপা আমনের মধ্যে দুটি জাত রয়েছে। এরমধ্যে একটি উফশী, অপরটি স্থানীয় জাতের আমন ধান। জেলার ১০টি উপজেলায় মোট ১ লাখ ২৪ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এরমধ্যে আবাদ হয়েছে ১ লাখ ২৪ হাজার ৮৪৫ হেক্টর। যা লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৬৯৫ হেক্টর বেশি।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, চলতি বছর বরিশাল সদর উপজেলায় রোপা আমন আবাদের মোট লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৫ হাজার ৪০০ হেক্টর, আবাদ হয়েছে ১৫ হাজার ৪৩০ হেক্টরে। বরিশাল মেট্রোপলিটন এলাকায় লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৬২৫ হেক্টর জমি, আবাদ হয়েছে ৫১০ হেক্টরে। 

বাবুগঞ্জ উপজেলায় রোপা আমন আবাদে মোট লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯ হাজার ৫৫৫ হেক্টর। আবাদ হয়েছে ৯ হাজার ৬০০ হেক্টর। উজিরপুর উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৭ হাজার ৭০০ হেক্টর। আবাদ হয়েছে ৭ হাজার ৬৮৫ হেক্টর। বাকেরগঞ্জ উপজেলায় মোট লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৭ হাজার ১০০ হেক্টর। 

আবাদ হয়েছে মোট ২৭ হাজার ৭০০ হেক্টর। গৌরনদী উপজেলায় মোট লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ছয় হাজার ৯০০ হেক্টর। আবাদ হয়েছে ৬ হাজার ৮৫০ হেক্টরে। আগৈালঝাড়া উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ৭১০ হেক্টর, আবাদ হয়েছে ৬০০ হেক্টর। মুলাদী উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল ১৪ হাজার ২০০ হেক্টর, আবাদ হয়েছে ১৪ হাজার ২৫০ হেক্টর। 

হিজলা উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১৩ হাজার ৪৩০ হেক্টর, আবাদ হয়েছে ১৩ হাজার ৬২০ হেক্টর। মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ২৩ হাজার ১২০ হেক্টর, আবাদ হয়েছে ২৩ হাজার ১০০ হেক্টর। বানারীপাড়া উপজেলায় লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল পাঁচ হাজার ৪১০ হেক্টর, আবাদ হয়েছে পাঁচ হাজার ৫৫০ হেক্টর। 

বাবুগঞ্জ উপজেলার চাঁদপাশা ইউনিয়নের ঘটকেরচর গ্রামের কৃষক বাবুল হাওলাদার জানান, ২০ শতক জমিতে রোপা-আমন ধান চাষ করেছেন। সার, বীজ, কীটনাশক, ক্ষেত প্রস্তুত ও বিবিধ খরচ মিলিয়ে তার প্রায় চার হাজার টাকা খরচ হয়েছে। দুর্যোগের কবলে না পড়লে তিনি প্রায় দশ মণ ধান ঘরে তুলতে পারবেন বলে জানিয়েছেন। বর্তমান বাজারে প্রতি মণ ধান এক হাজার টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

বরিশাল কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপ-পরিচালক (শস্য) সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এবার ৬৯৫ হেক্টর বেশি জমিতে রোপা আমনের আবাদ হয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে এবার কৃষক বেশ লাভবান হবেন।

তিনি আরও বলেন, আমরা কৃষকদের যেন কোনো সমস্যায় পড়তে না হয় সেজন্য সার্বক্ষণিক মাঠ পর্যায়ে যোগাযোগ রক্ষা করে চলছি। কৃষকদের মাত্রাতিরিক্ত সার, কীটনাশক প্রয়োগে নিষেধ ও সচেতন করে আসছি। বিপরীতে আলোক ফাঁদ পদ্ধতিতে পোকামাকড় দমনে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে।

আমারসংবাদ/এআই