Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

মেঘনায় জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ছে পাঙ্গাস

বরিশাল প্রতিনিধি

নভেম্বর ২, ২০২১, ০৭:৩০ এএম


মেঘনায় জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ছে পাঙ্গাস

মা ইলিশ রক্ষায় ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা উঠে যাবার পর মেঘনায় ইলিশের আকাল দেখা দিলেও জেলেদের জালে ঝাঁকে ঝাঁকে ধরা পড়ছে পাঙ্গাস মাছ। একইসাথে নদীতে ইলিশ মাছ না পেলেও ঝাঁকে ঝাঁকে পাঙ্গাস মাছ ধরা পরায় জেলেদের মুখে হাসি ফুঁটেছে। 

বরিশালের মাছের আড়তে বিপুল সংখ্যক নদীর পাঙ্গাস নিয়ে আসছেন জেলেরা। গত কয়েকদিন থেকে বরিশালের ইলিশ মোকামের আড়তগুলোতে পাঙ্গাসের অধিক্য আড়তদারদের নিষেধাজ্ঞার ক্ষতি পুষিয়ে দিচ্ছে। 

মঙ্গলবার সকালে নগরীর মৎস্য অবতরন কেন্দ্রের ঘাটে ট্রলারযোগে পাঙ্গাস মাছ নিয়ে আসা জেলে ইয়াসিন হাওলাদার বলেন, ভোলার পূূর্বপাশে ভাটি মেঘনা আর পশ্চিমের তেঁতুলিয়া নদীর ভাটিতে সাগর মোহনা থেকে এই সময়ে যে পরিমান ইলিশ উজানে উঠে আসার কথা, তার যথেষ্ঠ ঘাটতি রয়েছে। 

এরই মধ্যে নদীতে প্রচুর পাঙ্গাস মাছ ধরা পরায় জেলেদের মুখে হাসি ফুঁটেছে। গত কয়েকদিনে ধরে ভোলার উজানে চাঁদপুরের ভাটিতে হিজলা সংলগ্ন মেঘনা ও তার শাখা নদ-নদীগুলোতে প্রচুর পাঙ্গাস মাছ ধরা পড়ছে।

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, তিন থেকে দশ কেজি ওজনের এসব মাছ নদীতে তিন থেকে পাঁচশ’ টাকা কেজিতে বিক্রি হলেও আড়তে আসার পর দুই-তিন হাত ঘুরে খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে আটশ’ টাকা কেজি দরে। মৎস্য বিজ্ঞানীদের মতে, শীতের সময় মেঘনা ও তার শাখা নদ-নদীসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন নদীতে প্রচুর পাঙ্গাস মাছ ধরা পরে। 

এবার তা কিছুটা আগেই মেঘনা ও তেঁতুলিয়া নদীর ভাটি থেকে উজানে চলে এসেছে। এমনকি গবেষনায় ২০১৯ সালে ইলিশের মূল প্রজননকালীন ২২ দিনে দেশের প্রধান ইলিশ প্রজননক্ষেত্র সমুহে পরীক্ষামূলক নমুনায়নে ৮৩% ইলিশের রেনুর সাথে ১৭% অন্যান্য মাছের রেনু পোনাও পাওয়া যায়। ফলে ইলিশ আহরন নিষিদ্ধকালীন ২২ দিনে উপকূলে অন্যান্য মাছেরও নিরাপদ প্রজনন স¤পন্ন হচ্ছে। 

যা দেশে অন্যান্য প্রজাতির মাছের উৎপাদন বৃদ্ধিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে বলে জানিয়েছে মৎস্য অধিদপ্তর। এবার নদ-নদীতে গত কয়েকদিনের পাঙ্গাসের আগাম বিচরনকে অত্যন্ত ভাল লক্ষ্যন মনে করে সহনীয় আহরনের উপর গুরুত্ব দিতে চান মৎস্য বিজ্ঞানীগণ।

এ ব্যাপারে জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, ইলিশ প্রজননের ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞার সময় অন্যান্য মাছেরও নিরাপদ প্রজনন বৃদ্ধি পাওয়ায় নদ-নদীতে শুধু পাঙ্গাস নয়; বিভিন্ন মাছেরও প্রাচুর্য লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এটা অত্যন্ত ভাল লক্ষ্যন বলেও তিনি মনে করেন।

জেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ইলিশ) বিমল চন্দ্র দাস বলেন, অভিপ্রয়াণী মাছ ইলিশ জীবনচক্রে স্বাদু পানি থেকে নোনা পানিতে এবং সেখান থেকে পুনরায় স্বাদু পানিতে অভিপ্রয়ান করে। উপকূলের সাত হাজার বর্গ কিলোমিটারের মূল প্রজনন ক্ষেত্রে মুক্ত ভাসমান অবস্থায় ডিম ছেড়ে বেশীরভাগ ইলিশই আবার সাগরের নোনা পানিতে বিচরন করে। সুতরাং প্রজননের এ সময়ে দেশের অভ্যন্তরীন নদ-নদীতে ইলিশের বিচরন অনেকটা সীমিত থাকা স্বাভাবিক।