Amar Sangbad
ঢাকা মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল, ২০২৪,

বরিশালের সেই শয্যাশায়ী বৃদ্ধার পাশে জেলা প্রশাসক

জহির খান, বরিশাল

নভেম্বর ২, ২০২১, ০৯:২৫ এএম


বরিশালের সেই শয্যাশায়ী বৃদ্ধার পাশে জেলা প্রশাসক

ভরণপোষণ না দেয়ায় সন্তানের বিরুদ্ধে মামলা করা বরিশালের সেই অসুস্থ বৃদ্ধা মা’কে ৫০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দিয়ে পাশে দাড়িয়েছেন জেলা প্রশাসক মো. জসীম উদ্দীন হায়দার। একইসাথে অসুস্থ জাহানুর বেগমের বড় সন্তান সবুর হাওলাদার ও ছোট মেয়ে সাহিদা আক্তারের কাছে তার স্বাস্থ্যের খোঁজ খবর নেন।

সোমবার (১ নভেম্বর) সন্ধ্যায় নগরীর বৈদ্যপাড়ায় বৃদ্ধা জাহানুর বেগমের ভাড়া বাসায় গিয়ে তার সাথে দেখা করেন জেলা প্রশাসক। এ সময় তিনি ওই বৃদ্ধার সম্পত্তি বিক্রি নিয়ে অন্যান্য সন্তানের সাথে যে জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে তা দ্রুত সমাধানের জন্য ব্যবস্থা নেয়ার আশ্বাস দিয়েছেন। 

পরে সমাজসেবা অধিদপ্তরের জটিল রোগে সহায়তা কর্মসূচীর আওতায় ৫০ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করেন জেলা প্রশাসক। তখন সেখানে উপস্থিত ছিলেন-বরিশাল সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক আল মামুন তালুকদার, এনডিসি নাজমুল হুদা, প্রবেশন অফিসার সাজ্জাদ পারভেজসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা।

প্রসঙ্গত, চার সন্তানের মধ্যে ২ সন্তানের বিরুদ্ধে ভরনপোষন ও চিকিৎসার খরচ না দেওয়ার অভিযোগ এনে গত ২৮ অক্টোবর জাহানূর বেগমের পক্ষে বরিশাল অতিরিক্ত চীফ মেট্রোপলিটন আদালতে একটি অভিযোগ দায়ের করা হয়। 

ওই বৃদ্ধার বড় সন্তান আব্দুস সবুর হাওলাদারের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট আদালতে ওই অভিযোগ দায়ের করেন নগরীর বৈদ্যপাড়া এলাকার ভাড়াটিয়া বাসিন্দা জাহানুর বেগম (৭০)। অসুস্থতার জন্য বৃদ্ধা জাহানুর আদালতে আসতে না পারায় আদালতের বিচারক মোঃ মাসুম বিল্লাহ নিজে তার বাসায় গিয়ে জবানবন্দি গ্রহণ করে মামলা আমলে নিয়ে ওই দুই সন্তানের বিরুদ্ধে সমন জারির নির্দেশ দেন।

আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো. চার্চিল জানান, ৭০ বছর বয়সের বিধবা জাহানুর বেগম প্যারালাইজডসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। অভিযোগে তিনি তার অপর দুই সন্তান খুলনার শেখপাড়া পুরাতন মসজিদ রোডের বাসিন্দা মোস্তাফিজুর রহমান (৫০) ও বরিশাল নগরীর ধোপা বাড়ির মোড় এলাকার বাসিন্দা সাবিনা আক্তারকে (৪০) অভিযুক্ত করেন।

মামলায় উল্লেখ করা হয়, বাদীর স্বামী সিরাজুল ইসলাম ২০১৪ সালের ১৪ নভেম্বর মারা যান। তার স্বামীর খুলনায় রেখে যাওয়া একটি বাড়িতে এক ছেলে মোস্তাফিজুরসহ বসবাস করতেন তিনি। জাহানুর ব্রেইন স্ট্রোক, মেরুদণ্ড অচল ও প্যারালাইসিস সহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হলেও মোস্তাফিজুর চিকিৎসার ব্যয় মেটাতে অপারগ। 

পরে স্বামীর বাড়ি ছেড়ে বরিশালে এলে অপর দুই সন্তান মো. সবুর ও সাহিদা আক্তার চিকিৎসা ও ভরণপোষণের দায়িত্ব নেন। তারা তার চিকিৎসায় প্রায় ২৫ লাখ টাকা ব্যয় করেন।

বর্তমানে তারাও আর্থিকভাবে সুবিধাজনক অবস্থায় নেই। অথচ বৃদ্ধার প্রতিদিনের চিকিৎসায় অর্থের প্রয়োজন। অভিযুক্ত দুই সন্তানের কাছে চিকিৎসা ও ভরণপোষণ দাবী করলে তারা অপারগতা প্রকাশ করেন। বাধ্য হয়ে তিনি খুলনার সম্পত্তি বিক্রি করার উদ্যোগ নেন।

 সম্পত্তি কিনতে আগ্রহীরা বরিশালের বাসায় বাদীর সাথে যোগাযোগ করলে অভিযুক্ত সন্তানদ্বয় তার ভাড়া বাসায় গিয়ে খুলনার সম্পত্তি বিক্রি না করতে হুঁশিয়ারী দেন। এমনকি তাকে ভরণপোষণ এবং চিকিৎসাও দিতে পারবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন।

আমারসংবাদ/এআই