মেয়েকে পতিতাবৃত্তিতে বাধ্য করতেন মা-বাবা

কিশোরী মেয়েকে (১৪) অমানুষিক নির্যাতন করে দেহ ব্যবসায় বাধ্য করেন তার মা ও বাবা। শুধু তাই নয়; গত পাঁচ মাসে ওই কিশোরীর ওপর প্রায় ১২৫ বার যৌন নির্যাতন করা হয়েছে। যে ঘটনার সাথে সরাসরি জড়িত ছিলো নির্যাতিতা কিশোরীর মা ও বাবা। বরিশাল নগরীর ১৫ নম্বর ওয়ার্ডস্থ নিউ সার্কুলার রোডের গাজী বাড়ি এলাকার এমন ঘটনায় অভিযুক্ত মা-বাবা ও যৌন হয়রানি চালানো এক ব্যবসায়ীকে গ্রেপ্তারের পর আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে।

তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে কোতয়ালী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ নুরুল ইসলাম বলেন, নির্যাতিতা কিশোরীর জবানবন্দি গ্রহণের পর তার বড় বোনের দায়ের করা লিখিত অভিযোগটি মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত তিন জনকে গত রোববার শেষ কার্যদিবসে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে প্রেরণের পাশাপাশি নির্যাতিত কিশোরীকে ভিকটিম সাপোর্ট সেন্টারে রাখা হয়েছে।

সূত্র মতে, গত শনিবার সন্ধ্যায় ঘর থেকে পালিয়ে ওই কিশোরী মহানগর পুলিশ কমিশনারের কার্যালয়ে এসে পুলিশ কমিশনার মোঃ শাহাবুদ্দিন খানকে বিস্তারিত জানালে তিনি তৎক্ষণিক আইনী পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য কোতয়ালী মডেল থানার ওসিকে নির্দেশ প্রদান করেন। পরে কোতয়ালি মডেল থানা পুলিশ ওইদিন রাতেই অভিযান চালিয়ে কিশোরীর মা নাসরিন বেগম, বাবা সামসুল সিকদার ও মধু ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন হাওলাদারকে গ্রেপ্তার করেন। 

থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, নির্যাতিতা কিশোরীর মা নাসরিন বেগম ও বাবা সামসুল সিকদার বাসায় বসে মাদক ও নারীদের দিয়ে দেহ ব্যবসা করেন। তাদের বিরুদ্ধে থানায় একাধিক মামলা রয়েছে। বেশ কয়েকমাস ধরে ওই কিশোরীকে তার বাবা ও মা দেহ ব্যবসা করার কথা বলে আসছে। এতে কিশোরী রাজি না হওয়ায় প্রতিনিয়ত তাকে মারধর করা হতো। গত জুন মাসে নাসরিন বেগম নগরীর মুনসুর কোয়ার্টার এলাকার মিম মধুঘরের মালিক আনোয়ার হোসেন হাওলাদারের বাসায় নিয়ে ওই কিশোরীকে আনোয়ারের সাথে একটি কক্ষে আটকে রাখে। পরে আনোয়ার কিশোরীর শ্লীলতাহানি করে।

নির্যাতিতা কিশোরীর দাবি, তার বাবা ও মায়ের সহায়তায় সেই থেকে গত অক্টোবর মাস পর্যন্ত প্রায় ১২৫ বার আনোয়ারের সঙ্গে তাকে যৌনকাজে বাধ্য করা হয়। বিষয়টি ওই কিশোরী তার বড় বোন ও দুলাভাইকে জানালে তাদেরকে হাত-পা ভেঙে মাদকসহ পুলিশে ধরিয়ে দেওয়ার হুমকি দেয়া হয়।

আমারসংবাদ/কেএস