Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

দর্শনা চেকপোস্টে নমুনা না নিয়েই মিলছে করোনার নেগেটিভ সনদ!

চুয়াডাঙ্গা প্রতিনিধি

জানুয়ারি ১৫, ২০২২, ০৪:১৫ এএম


দর্শনা চেকপোস্টে নমুনা না নিয়েই মিলছে করোনার নেগেটিভ সনদ!

চুয়াডাঙ্গা দামুড়হুদা উপজেলার দর্শনার জয়নগর আন্তর্জাতিক চেকপোস্টে ভারত-বাংলাদেশের যাত্রীদের করোনার নমুনা পরীক্ষা না করেই নেগেটিভ সনদ দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। সেই করোনা পরীক্ষার নেগেটিভ সনদ দেখিয়ে দেশে প্রবেশের অনুমতিও দেয়া হচ্ছে। 

চেকপোস্টে সব যাত্রীদের করোনার র‌্যাপিড এন্টিজেন টেস্ট করা বাধ্যতামূলক। প্রত্যেকের কাছ থেকে সে অনুযায়ী ১০০ টাকা নেয়ার কথাও রয়েছে। তবে, অনেকের কাছ থেকেই টাকা নিয়ে রশিদ দেয়া হচ্ছে না, আবার নমুনা না নিয়েও করোনার নেগেটিভ সনদ দেয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। 

চুয়াডাঙ্গার দর্শনা চেকপোস্ট দিয়ে বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে ভারত থেকে দেশে আসেন বাংলাদেশি নাগরিক রেখা রানী সাহা। চেকপোস্টে ঢুকেই স্বাস্থ্য বিভাগের হেলথ স্ক্রিনিং বুথে স্বাস্থ্য পরীক্ষার কথা ছিল তার। কিন্তু তা করা হয়নি। 

তিনি বলেন, ‘আমি দর্শনা চেকপোস্টে ঢোকার পর আমার নিকট থেকে ১০০ টাকা নেয়া হয়। কোন নমুনা ছাড়ায় আমাকে নেগেটিভ রশিদ ধরিয়ে দেয় তারা। পরে ওনারা চলে যেতে বললো।’

বাংলাদেশের আসা অপর দুই নারী যাত্রী বলেন, আমাদের দুজনের থেকে ২০০ টাকা নেয়া হয়েছে। নমুনাও নিয়েছে। তবে আমাদের টাকা নেয়ার রশিদ দেয়নি তারা। 

এদিকে দর্শনা চেকপোস্টের হেলথ স্ক্রিনিং বুথের রেজিস্ট্রার খাতায় দেখা যায়, তালিকায় নমুনা না নেয়া রেখা রানী সাহার নামই নেই। তাহলে কিভাবে পেলেন করোনার নেগেটিভ সনদ, এই প্রশ্নের জবাবে দামুড়হুদা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল টেকনোলজিস্ট (স্যানিটারী ইন্সেপেক্টর) হেলথ স্ক্রিনিং বুথে দায়িত্বরত কর্মকর্তা জামাত আলী বলেন, ঘটনাটি ভুল বোঝাবুঝি হয়েছে। অতিরিক্ত যাত্রীদের ভীড়ে তিনি নমুনা না দিয়েই চলে গেছেন। আবার কোন কোন সময় ভীড়ের কারণে অনেক সময় রসিদ দেয়া সফল হয় না আমাদের। আবার দু’একটা মিসও হতে পারে। 

তিনি আরও বলেন, ক্যান্সার, স্কিন হার্ট ডিজিস রোগী এবং ১২ বছরের নিচে যারা আসেন তাদের ইমিগ্রেশনের সুবিধার্থে নেগেটিভ রিপোর্ট দিতে হয় বলে স্বীকার করেন তিনি।

দর্শনা ইমিগ্রেশনের ইনচার্জ এসআই আব্দুল আলীম বলেন, দেশত্যাগ বা দেশে ঢোকার সময় অবশ্যই করোনা পরীক্ষা করাতে হবে। ভারতের কোন যাত্রীদের করোনা পজিটিভ হলে তাদেরকে ফেরত পাঠানো হয়। দেশের কোন যাত্রীর পজিটিভ হলে তাদেরকে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের আইসোলেশনে পাঠানো হয়ে থাকে। তবে দেশত্যাগ বা দেশে ঢোকার সময় করোনা নেগেটিভ সনদ থাকতেই হবে। এখানে কোন দুর্নীতির সুযোগ নেই।

চুয়াডাঙ্গা সিভিল সার্জন ডা. সাজ্জাৎ হাসান বলেন, ‘ভারতে আসা-যাওয়া প্রত্যেক যাত্রীদের করোনা পরীক্ষা বাধ্যতামূলক। যদি এমন ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে এটা স্পর্শকাতর ঘটনা। আমি খোঁজ নিয়ে দেখছি। ঘটনার সত্যতা পেলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

দর্শনা ইমিগ্রেশন সূত্রে জানা গেছে, ১ জানুয়ারি থেকে ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত ভারত থেকে ১ হাজার ৮০৪ বাংলাদেশি নাগরিগ, ১ হাজার ১২৬ ভারতীয় নাগরিক বাংলাদেশ প্রবেশ করেছেন। বাংলাদেশ থেকে ১ ঞাজার ৩৩৭ বাংলাদেশি নাগরিক ও ১ হাজার ৭২৫ ভারতীয় নাগরিক ভারতে গিয়েছেন। এর মধ্যে ১১ বাংলাদেশি এবং ১৩ ভারতীয় নাগরিকের দেহে করোনা শনাক্ত হয়েছে। করোনা আক্রান্ত বাংলাদেশি নাগরিকদের দেশে প্রবেশের অনুমতি মিললেও ভারতীয় নাগরিকদের প্রবেশের অনুমতি দেয়া হয়নি। তাদেরকে ভারতে পাঠানো হয়েছে।

আমারসংবাদ/জেআই