Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

গর্ভবতী নারীদের ওপর সূর্যগ্রহণের প্রভাব! সত্য নাকি কল্পিত?

আমার সংবাদ ডেস্ক

জুন ২০, ২০২০, ০৯:৩৩ এএম


গর্ভবতী নারীদের ওপর সূর্যগ্রহণের প্রভাব! সত্য নাকি কল্পিত?

পৃথিবীর সব শক্তির আধার সূর্য। সূর্যগ্রহণের সময় সূর্য ও পৃথিবীর মাঝামাঝি চলে আসে চাঁদ। যে কারণে সূর্য ঢেকে যায়। এটি একটি বিরল ঘটনা। রোববার (২১ জুন) আবারো সেই বিরল ঘটনা বলয়গ্রাস সূর্যগ্রহণ ঘটবে। আকাশ পরিষ্কার থাকলে দুপুরে বাংলাদেশ থেকে আংশিক সূর্যগ্রহণ দেখা যাবে।অনেকের আগ্রহ থাকে সূর্যগ্রহণ দেখার।

সূর্যগ্রহণ হচ্ছে স্রষ্টার রাগ এবং আসন্ন মৃত্যু ও ধ্বংসের পূর্বাভাস। চীনের লোকেরা বিশ্বাস করতো, স্বর্গীয় ড্রাগন সূর্যকে গ্রাস করে নেয়ার ফলে সূর্যগ্রহণ হয়। ভিয়েতনামের বাসিন্দারা ভাবতো, বিশাল আকারের একটি ব্যাঙ সূর্যকে গিলে ফেলার কারণে সূর্যগ্রহণ হয়।

সূর্যগ্রহণ মানেই একাধিক বাড়তি কাজ। সঙ্গে নানা কুসংস্কার। এই ‘করতে নেই’ বা ‘করতে হবে’র মধ্যে এমনই সব প্রথা প্রচলিত রয়েছে গ্রহণকে কেন্দ্র করে। মনে করা হয়, গ্রহণের সময় বিশেষ কিছু নিয়ম মেনে না চললে, গর্ভবতী নারীদের ক্ষতি হতে পারে নানা ভাবে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই ভ্রান্ত ধারণার কোনো বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা পাওয়া যায় না।

বহু যুগ ধরে চলে আসা মুখের কথাই রয়ে গিয়েছে শুধুমাত্র। আয়ুর্বেদ শাস্ত্র সূর্যগ্রহণ চলাকালীন খাবার খেতে বারণ করেছে। একমাত্র বৃদ্ধ, অসুস্থ ও গর্ভবতী নারীরা হালকা খাবার নিতে পারবেন বলে বলা আছে।

কিছু মানুষ মনে করেন, গর্ভবতী নারীর গর্ভে থাকা বাচ্চার জন্য সূর্যগ্রহণ অত্যন্ত বিপদজনক। তাই সে সব নারীদের গ্রহণ চলাকালীন ঘরের বাইরে যাওয়ার অনুমতি দেয়া হতো না।

তবে বিশেষজ্ঞরা বলেন, খালি চোখে সূর্যগ্রহণ দেখা অত্যন্ত ক্ষতিকর। এছাড়া এক্স-রে ফিল্ম, নেগেটিভ, ভিডিও এবং অডিও ক্যাসেটের ফিতা, সানগ্লাস, ঘোলা বা রঙিন কাচেও সূর্যের ক্ষতিকর অতিবেগুনি ও অবলোহিত রশ্মি আটকে না। তাই কোনোক্রমেই এগুলো দিয়ে সূর্যগ্রহণ দেখা উচিত নয়।

সে সব গ্লাস ব্যবহারের আগে অবশ্যই ব্যবহার নির্দেশিকা পরে নিতে উপদেশ দিয়েছেন বিজ্ঞানীরা। কোনোভাবে সেই গ্লাস ভাঙা বা দাগ থাকলে ব্যবহার করতে না করেছে তাঁরা। এই গ্রহণকে ঘিরে রয়েছে নানান সংস্কার। এমনকি রয়েছে নানান ধরণের কুসংস্কার। অনেকেই গ্রহণকে অপবিত্র বলে মনে করেন।

তাদের মতে, চন্দ্রগ্রহণ কিংবা সূর্যগ্রহণ নাকি অপবিত্রতা। এই সময়ে অশুভ শক্তির প্রভাব বেড়ে যায় বলে মনে করেন। আর তাতে নাকি বাড়ি, মন্দির সর্বত্রই এর প্রভাব পড়ে। ফলে গ্রহণের সময় পূজা-অর্চনাও বন্ধ রাখা হয়। গ্রহণ শেষ হলে ঘরবাড়ি পরিষ্কারও করেন অনেকে। এছাড়াও অনেকে গ্রহণ চলাকালীন বাড়ির রান্না ফেলে দেন। গ্রহণ শেষ হওয়ার পরে শুরু করেন রান্নাবান্ন।

শুধু তাই নয় অনেকে বলেন, গ্রহণ চলাকালীন প্রচুর বিকিরণ পৃথিবীতে চলে আসে। যা নাকি মানব দেহের জন্যে খারাপ। তাই গ্রহণের সময় চাঁদের দিকে নাকি সরাসরি তাকানো উচিত নয়।

তবে সুর্যগ্রহণ অপেক্ষা চন্দ্রগ্রহণে বিকিরণ অনেক কম। কিন্তু বিকিরণ তো হয়। একটি এক্সরের চেয়ে অনেক বেশী বিকিরণ ঘটে চন্দ্রগ্রহণে। এখানেই শেষ নয়, গর্ভবতী নারীদের জন্যেও নাকি ক্ষতির কারণ আছে সূর্যগ্রহণ।

কুসংস্কার বলছে, গর্ভবতী নারীদের উপর নাকি সবথেকে বেশি পড়ে গ্রহণের এফেক্ট। যদিও অনেকে বিষয়টিকে উড়িয়ে দেয়। যে বা যাহারা এমন ভাবে, সেটা তাদের অজ্ঞতা।

আমারসংবাদ/এআই