Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪,

হ্যাকার চেনার পাঁচ উপায়

এপ্রিল ২৭, ২০১৫, ০৭:৫৬ এএম


হ্যাকার চেনার পাঁচ উপায়

 ইন্টারনেট এখন আমাদের প্রতিদিনের জীবনযাপনের অংশ। এটি ব্যবহার করে আমরা এখন একে অপরের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করি। একই সঙ্গে তথ্য খোঁজা এবং আর্থিক লেনদেন এখন ইন্টারনেটের মাধ্যমে হচ্ছে। এসব করতে গিয়ে প্রায়ই আমাদের হ্যাকারদের কবলে পড়তে হয়। হ্যাকাররা ইন্টারনেটে অজস্র ফাঁদ পেতে রাখে। না জেনে এসব ফাঁদে পা দিলেই ব্যক্তিগত তথ্য চুরি হওয়ার পাশাপাশি আর্থিক ভাবেও ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু একটু সর্তক হলে সহজেই হ্যাকারদের শনাক্ত করা সম্ভব। আসুন হ্যাকারদের হাত থেকে রক্ষার পাঁচটি উপায় জেনে নেই।

১. অনাকাঙ্খিত ই-মেইল থেকে সাবধান
ইন্টারনেটের দুনিয়ায় তথ্য আদান-প্রদানের জন্য ই-মেইল খুবই জনপ্রিয়। এই জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে হ্যাকাররা ই-মেইলে ফাঁদ পাতেন। ব্যবহারকারীদের কাছে প্রায়ই ই-মেইল আসে যে তিনি লটারিতে কোটি টাকা জিতেছেন। এই টাকা নেয়ার জন্য কিছু তথ্য চায় হ্যাকাররা। এসব তথ্যের মধ্যে থাকে ই-মেইল আইডি, পাসওয়ার্ড, ব্যাংক হিসাব, ক্রেডিট কার্ড এবং মোবাইল নম্বর। হ্যাকারদের কাছে এসব তথ্য কোনো ভাবেই সরবরাহ করা যাবে না।

এছাড়া, প্রায়ই মেইলে বিভিন্ন দেশের রাজকন্যার নাম ভাঙ্গিয়ে মেইল আসে। তার বরাত দিয়ে লেখা হয়, সে খুব বিপদে পড়েছে। তাকে উদ্ধারের জন্য কিছু অর্থের প্রয়োজন। কিংবা বলা হয়, স্বর্ণের খনির মালিকের কন্যা বিপদে পড়েছেন। তাকে এখনি উদ্ধার করতে হবে। এজন্য ব্যবহারকারীর ব্যাংক হিসাব দরকার। এসব করে হ্যাকারারা। হ্যাকারদের হাত থেকে নিরাপদে থাকতে হলে অনাকাঙ্খিত মেইল থেকে সাবধান থাকতে হবে। একই সঙ্গে এসব মেইল এবং অ্যাটাচমেন্ট কোনো ভাবেই খোলা যাবে না।

২. বেনামি ওয়েবসাইট/অ্যাপস
বেনামি ওয়েবসাইট কিংবা অ্যাপস ভিজিট করতে গিয়ে হ্যাকারদের চক্করে পরতে পারেন। অনেক সময় ব্যবহারকারীর ব্যাংকের ওয়েবসাইটের মত হুবহু নকল ওয়েবসাইট বানিয়ে হ্যাকররা লগ ইন করতে উৎসাহিত করে। এসব ওয়েবসাইটে পাসওয়ার্ড দিয়ে লগ ইন করা হলে ব্যাংকে রক্ষিত অর্থ হাতিয়ে নেবে হ্যাকাররা। ভূয়া ওয়েবঅ্যাড্রেস শনাক্ত করার একটি সহজ উপায় আছে। যে ওয়েব অ্যাড্রেসটিকে সন্দেহজনক বলে মনে হয় সেটির অ্যাড্রেসবার চেক করতে হবে। ব্রাউজারের অ্যাড্রেস বারে গিয়ে ওয়েবসাইটের নামের আগে ‘http:’ আগে কি না সেটা খতিয়ে দেখতে হবে। অ্যাড্রেসের আগে ‘http’ থাকা মানে এটি নিরাপদ।

ইন্টারনেট থেকে অ্যাপস ডাউনলোডের ক্ষেত্রে ডেভেলপারের যাবতীয় তথ্য দেখে নেয়া ভালো। অ্যাপসের আড়ালে হ্যাকাররা ওঁৎ পেতে থাকতে পারে। কিছু না জেনে স্মার্টফোনে অ্যাপস ডাউনলোড এবং ইনস্টল দেয়া মাত্রই ফোনের অ্যাডমিনিস্ট্রেশন থেকে ব্যবহারকারীর তথ্য হ্যাক করা হতে পারে।

৩. ওয়েব অ্যাডে না বুঝে ক্লিক নয়
ওয়েব সাইট ভিজিট করতে গিয়ে প্রতিদিন হাজারো অ্যাড চোখে পরে। এসব অ্যাডের মধ্যে হয়তো হ্যাকারদের তৎপরতা থাকতে পারে। এই ধরুন আপনি দেখলেন মাত্র ২০ ডলারে আইফোন পাওয়া যাচ্ছে। সস্তায় আইফোন কিনবেন বলে যেই না অ্যাডে ক্লিক করলেন ওমনি হ্যাকারদের ফাঁদে পা দিলেন। ঐ অ্যাড থেকে আপনি যখন ব্যাংকের আইডি এবং পাসওয়ার্ড দিয়ে পণ্য কেনার ফরমায়েশ দেবেন তখনি আপনার ব্যাংক অ্যাকাউন্ট হ্যাক করা হবে।

৪. কি লগার
কি লগার হলো একটি সফটওয়্যার। যেটি কম্পিউটারে ইনস্টল করলে ব্যবহারকারী কিবোর্ড দিয়ে যতটি অক্ষর কিংবা সংখ্যা টাইপ করেন সবই সংরক্ষিত হয়। অনেক সময় হ্যাকাররা সাইবার ক্যাফেতে এই সফটওয়্যার ইনস্টল করে রাখে। যাতে করে ব্যবহারকারীর উপর নজরদারি করতে পারে।

কম্পিউটারে কি লগার ইনস্টল করা আছে কিনা সেটা বোঝা দুস্কর । এই সমস্যার সমাধানে ক্যাফেতে ইন্টারনেট ব্যবহারের সময় কিবোর্ড থেকে ইউজার নেম এবং পাসওয়ার্ড না টাইপ করাই ভালো। এক্ষেত্রে ভার্চুয়াল কি-বোর্ড ব্যবহার করা যেতে পারে। উইন্ডোজ অপারেটিং সিস্টেমে অন স্ক্রিন কি বোর্ডের সুবিধা রয়েছে।

৫. ক্রেডিট কার্ডের তথ্য
হ্যাকারদের প্রধান লক্ষ্য থাকে ক্রেডিট কার্ড। ক্রেডিট কার্ডের গোপন নম্বর হাতিয়ে নেয়ার জন্য ব্যাংকের কর্মী পরিচয় দিয়ে হ্যাকাররা হিসাবধারীকে ফোন করে থাকে। তারা ক্রেডিট কার্ডের ইউজার নেম এবং পাসওয়ার্ড জানতে চেষ্টা করে। এক্ষেত্রে কোনো ভাবেই ক্রেডিট কার্ডের ইউজার নেম কিংবা পাসওয়ার্ড ফোনে বলা যাবে না।