রেকর্ড তাপমাত্রা মহাসাগরে, গলছে বরফ

করোনা মহামারীকালের দীর্ঘ লকডাউন বিশ্ব প্রকৃতিতে পরিবর্তন আনতে শুরু করেছিলো। বিশ্ব জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী গ্রিন হাউস গ্যাসের নির্গমন অনেকটাই কমেছিলো এ সময়। কিন্তু পৃথিবী আবারো ক্রমাগত উত্তপ্ত হচ্ছে।

সারাবিশ্বের পানির তাপমাত্রা নির্ণয় করে দেখা গেছে, ২০২০ সালে মহাসাগরে পানির তাপমাত্রা ১৯৫৫ সালের পর থেকে সবচেয়ে বেশি। গত ১৩ জানুয়ারি অনলাইনে 'অ্যাডভান্স ইন অ্যাটমোসফেরিক সায়েন্স’ নামে একটি রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়। সেখানে বিষয়টি উল্লেখ করা হয়। রিপোর্টে বলা হয়, সমুদ্রে তাপমাত্রা বাড়ার ফলে গ্রীনল্যান্ড ও আন্টার্টিকায় বরফ গলতে শুরু করেছে। একইসাথে এই উষ্ণতা গ্রীষ্মকালীন ক্রান্তীয় ঝড়কেও গতি দিচ্ছে।

গবেষকরা মুর সেন্সর, আর্গো ফ্লোটস, আন্ডার ওয়াটার রোবট এবং অন্যান্য যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে ডাটা সংগ্রহ করে। এই ডাটা বিশ্লেষণ করে সমুদ্রের উপরের ২,০০০ মিটারের উপরে কতটা তাপশক্তি রয়েছে তা অনুমান করেছেন। দেখা গেছে, ১৯৮১ থেকে ২০১০ সালের গড়ের নিরিখে ২০২০ সালে মহাসাগরের উপরিভাগের পানিতে ২৩৪ সেক্সটিলিয়ন তাপশক্তি রয়েছে। ২০১৯ সালে এটি ছিল ২০ সেক্সটিলিয়ন। মহাসাগরের উষ্ণতা ১.৩ বিলিয়ন কেটলি গরম পানির সমান।

এদিকে তাপমাত্রা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ফাটল ধরছে বিশাল হিমবাহগুলোতে। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ১৯৯০ সাল থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ২৮ লাখ কোটি টন বরফ গলে গেছে। হিমবাহের এই গলনের প্রভাব সরাসরি দেখা গেছে। আন্টার্টিকার বিশাল হিমবাহ থেকে খসে পড়া হিমশৈল ভেসে প্রায় সাউথ জর্জিয়া দ্বীপের কাছে চলে এসেছে।

বিজ্ঞানীরা বলছেন, সাদা রংয়ের কারণে বরফ ব্যাপক বিচ্ছুরণ ঘটায়। সাধারণত বরফে ধাক্কা লেগেই আলো ও তাপ মহাকাশে ফিরে যায়৷ বরফ গলে গেলে ওই তাপ সমুদ্রের পানি শুষে নেবে।

আমারসংবাদ/এমএ