Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪,

মঙ্গলে গেল ‘অভিনব’, এলো প্রথম ছবি

আমার সংবাদ ডেস্ক

ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২১, ০৬:১০ এএম


মঙ্গলে গেল ‘অভিনব’, এলো প্রথম ছবি

মঙ্গলগ্রহের মাটি ছুঁয়েছে পৃথিবীর প্রথম হেলিকপ্টার ইনজেনুইটি। বাংলায় বলা যায়- ‘অভিনব’। এই হেলিকপ্টার আছে পারসেভারেন্স (বা, উদ্যম) নামের একটি রোভারের বুকের ভেতর, যা সাত মাসের যাত্রা শেষে গতকাল বাংলাদেশ রাতে লালমাটিতে নেমেছে।

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার নেতৃত্বে মার্শ ২০২০ নামের এই অভিযানে নভোযানটিতে চড়ে অন্তত ১২ বাংলাদেশির নামও ছুঁয়ে ফেলেছে মঙ্গলের মাটি। এ লেখকের নাম এ নিয়ে দুবার মঙ্গলের মাটি ছুঁল। মঙ্গলের ইয়েজেরো গিরিখাতে অভিযান চালাবে উদ্যম আর অভিনব। এই গিরিখাত ৪৫ কিলোমিটার প্রশস্ত। মঙ্গলে জীবনের ছাপ খুঁজবে এরা। পৃথিবীতে ফিরিয়ে আনার জন্য কিছু নমুনাও সংগ্রহ করবে।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, রাত আড়াইটা নাগাদ লালগ্রহের মাটিতে সফলভাবে অবতরণ করে পারসেভারেন্সটি। এরপরই সে পুথিবীতে একটি ছবি পাঠিয়েছে। বিশেষ যন্ত্রপাতিসহ রোভারটিকে পাঠানো হয়েছে মঙ্গলে। এর একটি হলো রিয়েল টাইম ছবি তুলতে পারে। অবশ্য গিয়েই একটি ছবি পাঠিয়েছে ইনজেনুইটি। রোভারটি মঙ্গলের মাটি থেকে ছবিটি তুলেছে। মঙ্গলের প্রথম ছবিটি টুইট করে নাসার পক্ষ থেকে লেখা হয়, “Hello, world. My first look at my forever home.”
 
নাসার দেওয়া তথ্যমতে, পরিভ্রামক যান উদ্যমের সঙ্গে এঁটে দেওয়া ছিল নখের সমান তিনটি মাইক্রোচিপ, যাদের ভেতরে রয়েছে সারা বিশ্বের ১০ কোটি ৯৩ লাখ দুই হাজার ২৯৫ জন মঙ্গলপ্রেমীর নাম। রোভারটির নামকরণের প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়া শীর্ষ ১৫৫ জনের রচনাও জায়গা করে নিয়েছে ওই তিন চিপে।

এই সব মঙ্গলপ্রেমীকে এ যাত্রায় নাসা ৩১ কোটি ৩৫ লাখ ৮৬ হাজার ৬৪৯ পয়েন্ট দিয়েছে। ৪৭ কোটি কিলোমিটারের পথ পাড়ি দিয়ে এদের নাম সূর্যের চতুর্থ গ্রহে পৌঁছেছে।

এ রোভারে রয়েছে টেরেন রিলেটিভ নেভিগেশন, ল্যান্ডার ভিশন সিস্টেম। এই রোভারে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে পাঠানো হয়েছে আরও একটি বিশেষ যন্ত্র। এর নাম মক্সিই। মঙ্গলের বায়ুমণ্ডলে অক্সিজেন তৈরি করা সম্ভব হলে এই যন্ত্রের সাহায্যে তা করা হবে।

অন্যদিকে জেজেরো ক্র্যাটার মঙ্গলের এমন একটি জায়গা যা মারাত্মক দুর্গম। এখানে রয়েছে গভীর উপত্যকা, সুউচ্চ পাহাড়, বালির টিলা এবং প্রচুর উঁচু নীচু পাথর, যা জায়গাটিকে অসমান করে তুলেছে। তাই এই এলাকায় আদৈ রোভার নামতে কতটা সক্ষম হয়, সেদিকে নজর ছিল সবার। মনে করা হয় একসময় এখানে নদী প্রবাহিত হতো। পরে সেটি হয়তো হ্রদে পরিণত হয়।

মঙ্গলের মাটিতে কী কী উপাদান রয়েছে এবং আদৌ সেখানে প্রাণের অস্তিত্ব আছে কীনা বা আগে ছিল কিনা ইত্যাদি অনুসন্ধান করবে নাসার এই রোভার। একই সঙ্গে লালগ্রহ থেকে মাটি ও পাথরের নমুনা সংগ্রহ করা এই রোভারের উদ্দেশ্য।

এবার বাংলাদেশ থেকে যাদের নাম মঙ্গলে নেমেছে, তাদের অন্যতম সাংবাদিক হাসান শাহরিয়ার এই প্রতিবেদককে বলেন, ‘প্রায় ১১ কোটি মানুষের আমি একজন, যার নাম মঙ্গলে পৌঁছাল। ভাবতেই অন্যরকম লাগছে। বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রায় আমিও শামিল হলাম।’

এখনো সশরীরে মঙ্গলে যাওয়ার নভোযান নেই মানুষের কাছে। তাই যারা অন্তত নাম নিবন্ধন করে নভোযানের ভেতর মাইক্রোচিপে করে মঙ্গলে যাচ্ছেন, নাসা সেসব মঙ্গলযাত্রীকে ‘মার্শিয়ান’ বা মঙ্গলবাসী বলে অভিহিত করছে।

২০১৮ সালে মার্স ইনসাইট নামের নভোযানে করে দুটো মাইক্রোচিপ পাঠানো হয় মঙ্গলগ্রহে। সেই দুটো চিপে রয়েছে ২৪ লাখ ২৯ হাজার ৮০৭ জন পৃথিবীবাসীর নাম। এদের মধ্যে এই লেখকসহ অন্তত ১৪ বাংলাদেশির নাম রয়েছে। ওই বছর নভেম্বরে এসব নাম মঙ্গলের মাটি ছুঁয়েছিল। নামগুলো এখন মঙ্গলের এলিসিয়াম প্লানিশিয়া সমতলে রয়েছে।

আমারসংবাদ/কেএস