Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪,

রক্তাক্ত যুবকের ছবি তুলতে ব্যস্ত সবাই, হাসপাতালে নিল পুলিশ

আমার সংবাদ ডেস্ক

জুন ২, ২০২১, ০৭:৫০ এএম


রক্তাক্ত যুবকের ছবি তুলতে ব্যস্ত সবাই, হাসপাতালে নিল পুলিশ

রাজধানীর বিজয় সরণির বঙ্গবন্ধু নভোথিয়েটারের সামনের ফুটপাতে মাথায় আঘাত পেয়ে রক্তাক্ত অবস্থায় অজ্ঞাত এক যুবক অচেতন হয়ে পড়ে ছিল। এসময় তাকে কেউ উদ্ধার না করে ছবি-ভিডিও ধারণে ব্যস্ত হয়ে পড়ে সবাই। পরে বিষয়টি পুলিশের নজরে আসলে দ্রুতই হাসপাতালে নেওয়া হয় ওই যুবককে।

মঙ্গলবার (১ জুন) সন্ধ্যায় ঘটে এ ঘটনা।

জানা গেছে, গতকাল সন্ধ্যায় অচেনা ওই যুবককে এভাবে দেখে সঙ্গে সঙ্গেই একজন পুলিশ সদস্য পাশে থাকা ট্রাফিক তেজগাঁও বিভাগের অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনারকে অবগত করেন। পরে দ্রুতই পুলিশের গাড়িতে তুলে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাকে। পরে তিনি চিকিৎসায় সুস্থ হয়ে ওঠার পর পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাকে নিজ বাড়িতে পাঠিয়ে দেয় পুলিশ।

তেজগাঁও ট্রাফিক বিভাগের অতিরিক্ত উপপুলিশ কমিশনার এস এম শামীম পুরো বিষয়টি নিয়ে ভিডিওসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে দীর্ঘ পোস্ট দিয়েছেন।

ফেসবুকে পোস্টে তিনি বলেন, ‌‌‌‘‘মঙ্গলবার সন্ধ্যার পর পর ডিউটি করছিলাম বিজয় সরণি মোড়ে ট্রাফিক তেজগাও ডিভিশনের অতিরিক্ত উপ পুলিশ কমিশনার হওয়ার সুবাদে। হঠাৎ আমার ড্রাইভার কন. শহিদ দৌড়ে এসে বললো, ‘স্যার ভাসানি নভোথিয়েটারের সামনে একজন লোক পড়ে আছে, দম যায় যায় অবস্থা’। 

আমি গিয়ে দেখলাম রাস্তার পাশে ঘাসের উপর পড়ে আছে লোকটা, দম আসলেই যায় যায় অবস্থা, হাত দিয়ে টেনে উঠিয়ে বসালাম, পানি এনে উনার মাথায় ও মুখে দেয়ার ব্যাবস্থা করলাম।সেন্স কিছুটা এসেছে, জিজ্ঞেস করলাম কেউ মেরেছে, কিছু খেয়েছো, উত্তরে ইশারায় না বুঝালো, কিন্তু আবার সেন্সলেস হয়ে মাটিতে পড়ে গেলো। ততোক্ষণে আমার ট্রাফিক ইন্সপেক্টর জনাব সুজা সাহেব, আমার বডিগার্ড দেলোয়ার হাজির, তেজগাও থানার ওসি সাহেবকে ফোন করলে সাব ইন্সপেক্টর শরিফও আসলেন, দ্রুত তাকে হাসপাতালে পাঠাতে হবে।

কিছু লোক, মানে বেশ কিছু লোক হাজির, ঘিরে দাঁড়িয়ে আছে, বানর খেলা দেখছেন, ভিডিও করছেন, ছবি তুলছেন, লোকটা পড়ে আছে এই দৃশ্যের,বললাম আসেন ধরেন লোকটাকে হাসপাতালে নিয়ে যাই, তখন দূরে সরে যায়। পরে ছবি তুলতে নিষেধ করলাম ও ভিড় করতে নিষেধ করলাম, কয়েকজন এলো অনুমতি নিতে যে তাকে একটু ছবি তুলার সুযোগ যেনো করে দেই, ভিডিও করার সুযোগ যেনো করে দেই। হায়রে আল্লাহ!

আমি ততোক্ষণে আবার ওসি সাহেবকে ফোন করলাম গাড়ির জন্য, যতো দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে পাঠানোর চিন্তায় অস্থির হয়ে, যদি লোকটার কিছু হয়ে যায়, কপালের বা পাশের অংশে রক্ত ও বেরোচ্ছে। আমরা পুলিশরা চিন্তায় মগ্ন কি করে উনাকে বাঁচাবো।

ট্রাফিক পুলিশ হওয়ার সুবাদে দ্রুত এক সাইড ফাকা করে গাড়ি আনার ব্যাবস্থা করে হাসপাতালে পাঠিয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললাম।

রাতে খবর নিলাম সাব ইন্সপেক্টর শরিফের কাছে কি অবস্থা লোকটার, উত্তরে বললো সুস্থ্য আছেন এবং তার স্বজনদের খুজে তাদের কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। শুনে আলহামদুলিল্লাহ বললাম। আর তিনি অসুস্থ হয়ে মাথা ঘুরে হঠাৎ করে ওখানে পড়ে গিয়েছিলেন, ইটের সাথে আঘাতে কপাল কেটেছে আর পারিবারিক সমস্যার কারণে এরকম হয়েছে এখানে কোন ক্রাইম হয়নি।

যাইহোক ভেবে ভালো লাগছে যে লোকটা বেচে আছে, সুস্থ আছে,পরিবারের কাছে আছে।

ধন্যবাদ ট্রাফিক তেজগাও বিভাগ পুলিশসহ তেজগাও থানা পুলিশ তথা বাংলাদেশ পুলিশকে।’’

[embed]<iframe src="https://www.facebook.com/plugins/video.php?height=476&href=https%3A%2F%2Fwww.facebook.com%2Fsheikh.m.shamim.1%2Fvideos%2F10215092996398277%2F&show_text=false&width=267&t=0" width="267" height="476" style="border:none;overflow:hidden" scrolling="no" frameborder="0" allowfullscreen="true" allow="autoplay; clipboard-write; encrypted-media; picture-in-picture; web-share" allowFullScreen="true"></iframe>[/embed]

আমারসংবাদ/জেআই