Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

বাজারে দাম বৃদ্ধির হিড়িক

রেদওয়ানুল হক

রেদওয়ানুল হক

মে ১৯, ২০২২, ১২:৫৬ এএম


বাজারে দাম বৃদ্ধির হিড়িক

বেশ কিছুদিন ধরে অস্থিরতা চলছে ভোজ্যতেলের বাজারে। রাশিয়া-ইউক্রেনের পর গম আমদানিতে বন্ধ হয়ে গেছে ভারতের দরজাও। দেশটি রপ্তানি বন্ধের ঘোষণার পর দেশের বাজারে লাফিয়ে বাড়ছে গম-আটার দাম। সাথে নতুন করে কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে চাল ও পেঁয়াজ। 

শুধু তাই নয়, বাজারে বেড়েছে সব ধরনের ভোগ্যপণ্যের দাম। চাল, ডাল, চিনি, আটা-ময়দা, আদা-রসুন, আলু, সব ধরনের গোশত, ডিম ও গুঁড়াদুধসহ সব ধরনের খাদ্যপণ্যের দাম বেড়েছে। একই সাথে বেড়েছে সাবান, ডিটারজেন্ট, হ্যান্ডওয়াশ, টয়লেট টিস্যু, ফেসিয়াল টিস্যু, হারপিক,  টুথপেস্টের মতো নিত্যব্যবহার্য পণ্যের দাম। 

ভোক্তারা বলছেন, আয় বাড়ছে না বরং ব্যয় প্রতি সপ্তাহেই বাড়ছে। বাজারসংশ্লিষ্টরা বলছেন, দাম বাড়াতে বাহানার অভাব নেই। বিশ্ববাজারের অজুহাতে সক্রিয় সিন্ডিকেট। অবৈধ মজুত করে বাজারে কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে, বাড়াচ্ছে দাম। কঠোর তদারকি ছাড়া স্বস্তির ফিরবে না বলে মত বিশ্লেষকদের। ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ের অভিযোগ, ঈদের পর আরো কয়েক দফা বেড়েছে সব ধরনের পণ্যের দাম।

বাজার ঘুরে দেখ গেছে, ঈদের আগে যে মসুর ডাল (ছোট দানা) ১২০ টাকা বিক্রি হয়েছে তা এখন ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। বড় দানার মসুর ডাল কেজিতে ৫-১০ টাকা বেড়ে ১১০-১১৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি প্রতি কেজি খোলা চিনি মানভেদে চার থেকে ছয় টাকা বেড়ে ৮৪-৮৬ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি খোলা আটা পাঁচ-সাত টাকা বেড়ে ৪৫-৪৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। খোলা ময়দা কেজিতে পাঁচ থেকে আট টাকা বেড়ে ৬০-৬৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

এছাড়া খুচরা বাজারে প্রতি কেজি আলুর দাম পাঁচ টাকা বেড়ে ২৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৫২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৩৫ টাকা। আমদানি করা পেঁয়াজ কেজিতে পাঁচ টাকা বেড়ে ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি কেজি দেশি ও আমদানি করা আদা ১০ টাকা বেড়ে ১৫০ ও ১৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি প্রতি কেজি দেশি রসুন ২০ টাকা বেড়ে ১০০-১১০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দাম বাড়ার তালিকায় যোগ হয়েছে শুকনা মরিচও। 

কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে বিক্রি হয়েছে ২২০-২৪০ টাকা। বাজারে নতুন করে মুরগি ও গরুর গোশতের দামও বেড়েছে। কেজিতে ২০ টাকা বেড়ে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগির দাম এখন ১৮০ টাকা। ঈদের আগে ৭০০ টাকা কেজি দরে প্রতি কেজি গরুর গোশত বিক্রি হলেও এখন সর্বোচ্চ ৭২০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। বাজারে ডিমের দামও বেড়েছে। প্রতি হালি ফার্মের ডিম এক সপ্তাহ আগে ৩৬ টাকা বিক্রি হলেও এখন ৪০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। 

কোম্পানিভেদে প্রতি কেজি গুঁড়াদুধ ৬৫০-৬৯০ টাকা বিক্রি হলেও খুচরা বাজার ও পাড়া-মহল্লার মুদি দোকানে এখন বিক্রি হচ্ছে ৬৯০-৭৫০ টাকা। আর রাজধানীর খুচরা বাজারে প্রতি লিটার বোতল সয়াবিন বিক্রি হয়েছে ২০০-২১০ টাকা। বাজার বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বোরো মওসুমের চাল বাজারে আসা শুরু করতেই দেশের প্রধান এই খাদ্যশস্যের দাম বেড়ে গেছে। ঢাকা, কুষ্টিয়া ও নওগাঁর পাইকারি বাজারে চালের দাম ধরনভেদে কেজিতে দুই থেকে পাঁচ টাকা বেড়েছে। এর প্রভাব পড়েছে খুচরা বাজারেও। সেখানে দাম বেড়েছে কেজিতে এক থেকে দুই টাকা। ঢাকার খুচরা দোকানে মোটা চাল ৪৫ থেকে ৪৮, মাঝারি চাল ৫০ থেকে ৫৫ ও সরু চাল ৬০ থেকে ৭০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। কোনো কোনো দোকানে সরু নাজিরশাইল চাল প্রতি কেজি ৮০ টাকা দরেও বিক্রি হচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন, চালকলমালিকরা ধানের দাম বেশি বলে চালের দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। সরু চালের দাম বেশি হারে বেড়েছে। কোনো কোনো ক্ষেত্রে তা কেজিতে ছয় থেকে সাত টাকা। 

বাজার বিশ্লেষকরা বলছেন, বোরোতে দেশের মোট চালের প্রায় ৫৫ শতাংশ উৎপাদিত হয়। তাই সাধারণত বোরো মওসুম শুরু হলে চালের দাম অনেকটাই কমে যায়। এতে অনেকটা স্বস্তি পায় মানুষ। কিন্তু এবার দেখা যাচ্ছে বিপরীত চিত্র। নতুন মওসুমের চাল বাজারে এসে যখন দাম কমার কথা, তখনই সরবরাহ কম এবং দাম বাড়ছে। 

দোকানিরা জানান, প্রতি বছর বোরো মওসুম শুরুর পর চালের দাম প্রতি বস্তায় (৫০ কেজি) ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা পর্যন্ত কমে যায়। এবার হয়েছে উল্টো। প্রতি বস্তায় ১৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গেছে।

খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার গত রোববার সুনামগঞ্জে এক মতবিনিময় সভায় বলেছিলেন, নির্বাচন সামনে রেখে সরকার চালের দাম বাড়তে দেবে না। কিন্তু বাজারে উল্টো চিত্র দেখা যাচ্ছে। সরকারি গুদামে যথেষ্ট পরিমাণে চাল মজুত আছে জানিয়ে খাদ্যসচিব মোছাম্মৎ নাজমানারা খানুমও  বলেন, চালের দাম বাড়ার কোনো কারণ নেই। বিশ্বজুড়ে খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার সুযোগে ব্যবসায়ীরা চালের দাম বাড়িয়ে দিলেন কি-না, তা অনুসন্ধান করে দেখা হবে।

এদিকে অস্থির গমের বাজার। ভারত গম রপ্তানি বন্ধের পর পাইকারি বাজারে এক লাফে গড়ে প্রায় সাড়ে ৮ শতাংশ বেড়েছে। খুচরা বাজারে বেড়েছে প্রায় ২৫ শতাংশ। কেজি হিসাবে পাইকারি বেড়েছে তিন থেকে সাড়ে চার টাকা আর খুচরায় বেড়েছে প্রায় ১৫ টাকা। ভারত এমন সময় গম রপ্তানিতে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে, যখন বাংলাদেশের গম আমদানির ৬৩ শতাংশ দেশটি থেকে আসছিল। ব্যবসায়ীরা জানান, পাইকারি বাজারে মানভেদে ও সরবরাহের স্থানভেদে কেজি প্রতি ভারতীয় গম বিক্রি হয় ৪০ থেকে ৪২ টাকা ৭৩ পয়সা।

 রপ্তানি বন্ধের আগে এই গম বিক্রি হয়েছিল সাড়ে ৩৭ থেকে ৩৯ টাকা ৩৯ পয়সা। কেজি প্রতি দাম বেড়েছে তিন টাকার কম-বেশি। বাজারে সবচেয়ে বেশি বেড়েছে কানাডার উচ্চ আমিষযুক্ত গমের দাম। রপ্তানি বন্ধের আগে এই গম প্রতি কেজি ৫১ টাকা ৭১ পয়সায় বিক্রি হয়েছিল। যা এক দিনের ব্যবধানে গত সোমবার সাড়ে চার টাকা বেড়ে ৫৬ টাকা ২৭ পয়সায় ওঠে। 

অস্ট্রেলিয়ার গমের দাম প্রতি কেজিতে চার টাকা ২৯ পয়সা বেড়ে হয়েছে ৫৩ টাকা ৫৯ পয়সা। সরকারি তথ্যমতে, বাংলাদেশে বছরে গমের চাহিদা প্রায় ৭৫ লাখ টন। এই চাহিদার ৬৫-৬৭ লাখ টনই আমদানি করতে হয়। বড় শিল্প গ্রুপ যাদের নিজস্ব আটা-ময়দার কারখানা আছে, তারা সরাসরি আমদানি করে। আবার গম এনে স্থানীয় বাজারে বিক্রিও করে। পাইকারি বাজার থেকে গম কেনে ছোটখাটো আটা-ময়দার কারখানাগুলো।

বাজারে ভোজ্যতেলের মূল্যবৃদ্ধির যে মিছিল চলছে, তাতে যোগ দিয়েছে সূর্যমুখী তেল বা সানফ্লাওয়ার অয়েল। সর্বশেষ খবর হলো, বাজারে এখন এই তেলের সরবরাহেই টান পড়েছে। অনেক ক্ষেত্রে দোকানে গিয়ে ফিরে যেতে হচ্ছে ক্রেতাদের। 

যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগের (ইউএসডিএ) তথ্য অনুযায়ী, বিশ্বে সূর্যমুখী তেলের ৫৮ শতাংশ উৎপাদিত হয় রাশিয়া ও ইউক্রেনে। গত ফেব্রুয়ারিতে রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা শুরুর পর দেশ দুটি থেকে তেল আমদানি প্রায় বন্ধ হয়ে যায়। বাংলাদেশে সূর্যমুখী তেলের ভোক্তা মূলত মধ্যম ও উচ্চমধ্যম আয়ের মানুষ। বাজারে এখন পাঁচ লিটারের এক বোতল সূর্যমুখী তেলের দাম ব্র্যান্ডভেদে এক হাজার ৮৭৫ থেকে দুই হাজার ২০০ টাকা, যা গত বছরের শুরুতে ৯৫০ থেকে এক হাজার ২৫০ টাকা ছিল। 

বিক্রেতারা জানিয়েছেন, তেলটির দাম দফায় দফায় বেড়েছে। রোজার মধ্যেও বেড়েছে লিটারপ্রতি ৪৫ থেকে ৫০ টাকা। ব্যবহার্য পণ্যবাজারে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ঈদের পর আরও এক দফা বেড়েছে সাবান, শ্যাম্পু, টুথপেস্টসহ বিভিন্ন ধরনের নিত্যব্যবহার্য পণ্যের দাম। বাজারের সুপরিচিত একটি ব্র্যান্ডের এক কেজি ওজনের এক প্যাকেট গুঁড়া সাবানের দাম ১০ টাকা বেড়েছে। এই সাবান কিনতে কয়েকদিন আগেও লাগত ১৪০ টাকা, যা এখন ১৫০ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।

একটি ১০০ গ্রাম ওজনের সুগন্ধি সাবানের দাম ছিল ৪০ টাকা, যা নতুন করে ৪২ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। একটি ব্র্যান্ডের শ্যাম্পুর ১৮০ মিলিলিটারের বোতলের দাম ছিল ১৮০ টাকা, যা বাড়িয়ে ২০০ টাকা করা হয়েছে। একটি ব্র্যান্ডের ৪৫ গ্রামের একটি টিউবের দাম ৪২ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪৫ টাকা করা হয়েছে। বিক্রেতারা বলছেন, সাবানের দাম এখন নিয়মিত বিরতিতে বাড়ছে। কোনো পণ্যের দামই স্থিতিশীল নেই। গত বছরের শেষ দিক থেকেই একাধিকবার এসব পণ্যের দাম বেড়েছে। নতুন করে বাড়ানো হয়েছে পবিত্র ঈদুল ফিতরের আগে ও পরে। 

এর ফলে বেড়েছে ক্রেতাদের দৈনন্দিন ব্যয়। যেমন— কাপড় কাচার জন্য এক কেজি গুঁড়া সাবান, থালা-বাসন ধোয়ার জন্য আধা লিটার তরল সাবান, একটি সুগন্ধি সাবান, এক বোতল শ্যাম্পু ও টুথপেস্ট কিনতে ব্যয় হচ্ছে প্রায় ৫৫৭ টাকা, যা ঈদের আগের তুলনায় ৫০ টাকা বেশি। অর্থাৎ এ খাতে ব্যয় বেড়েছে ১০ শতাংশ। কোম্পানিগুলো বলছে, দাম বাড়ার বেশ কিছু কারণ রয়েছে। 

নিত্যব্যবহার্য পণ্য খাতের শীর্ষস্থানীয় কোম্পানি ইউনিলিভার বাংলাদেশের কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স, পার্টনারশিপস অ্যান্ড কমিউনিকেশনের প্রধান শামীমা আক্তার বলেন, বিশ্ববাজারে কাঁচামালের মূল্যবৃদ্ধি, পণ্যের ঘাটতি, আমদানি খরচ ও উৎপাদন ব্যয় অনেক বেড়েছে। এ কারণে মূল্য সমন্বয় ছাড়া আর উপায় ছিল না। তিনি বলেন, যতটা সম্ভব ছাড় দিয়ে মূল্য সমন্বয় করা হয়েছে।

পরিস্থিতি মোকাবিলায় ভোক্তাদের সাশ্রয়ী হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশি। তিনি বলেন, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী হলে খাদ্যপণ্যের দাম আরও বাড়তে পারে। গত সোমবার সচিবালয়ে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত সংলাপে তিনি জনগনকে এ পরামর্শ দেন। 

মন্ত্রী বলেন, গম আমদানির জন্য পাঁচটি বিকল্প উৎস খোঁজা হচ্ছে। 

এদিকে গত সোমবার দাম নিয়ন্ত্রণে ব্যবসায়ীদের নিয়ে আয়োজিত এক সেমিনারে এফবিসিসিআই সভাপতি জসিম উদ্দিন বলেন, ব্যবসায়ীদের চাপ দিয়ে বাজারে দাম কমানো সম্ভব নয়। অন্যদিকে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, বড় কোম্পানিগুলো আগ্রাসীভাবে ব্যবসা করছে, এখান থেকে বের হয়ে আসতে হবে। বাজারে প্রতিযোগিতা থাকবে। কিন্তু সুষ্ঠু প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে ভূমিকা রাখতে পারে ব্যবসায়ী সংগঠনগুলো। 

এ বিষয়ে কনজুমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সভাপতি গোলাম রহমান আমার সংবাদকে বলেন, পণ্যের দাম বাড়ার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক বাজার প্রভাব ফেললেও কিছু কিছু পণ্যের দাম কারসাজির মাধ্যমে বাড়ানো হচ্ছে। সরকার কঠোরভাবে তদারকি না করলে ভোক্তা কখনো সুফল পাবে না।

বাজার নিয়ন্ত্রণে সরকারের ব্যর্থতাকে দায়ী করছে বিরোধী রাজনীতিকরা। ব্যর্থতার অভিযোগ তুলে বাণিজ্যমন্ত্রী টিপু মুনশির অপসারণের দাবি জানিয়েছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য বন্ধ করে গ্রাম-শহরে রেশনিং চালু করারও দাবি জানিয়েছেন জোটটির নেতারা। 

গত মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের দাম কমানোর দাবিতে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ঘেরাওয়ের আগে বিক্ষোভ সমাবেশে এসব কথা বলেন বাম জোটের নেতারা। সরকারি তথ্য অনুযায়ী, ১৫ মে পর্যন্ত সরকারের কাছে ১১ লাখ ২৮ হাজার টন খাদ্যশস্য মজুত আছে। 

এরমধ্যে এক লাখ ১২ হাজার টন আছে গম এবং চাল ও ধান আছে ১০ লাখ ১৫ হাজার টন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, খাদ্যশস্যের সরকারি মজুত ১০ লাখ টনের নিচে গেলে তা বাজারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং দাম বাড়তে শুরু করে। সরকার স্থানীয় বাজার থেকে ১৮ লাখ টন বোরো সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে। এর মধ্যে ১১ লাখ ৫০ হাজার টন চাল এবং ছয় লাখ ৫০ হাজার টন ধান। 

গত বছর সরকার ১১ লাখ ৫০ হাজার টন চালের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে ১০ লাখ ৬০ হাজার টন সংগ্রহ করতে পেরেছিল এবং সাড়ে ছয় লাখ টন ধানের লক্ষ্যমাত্রার বিপরীতে তিন লাখ টন সংগ্রহ করতে পেরেছিল। কিন্তু এবারের পরিস্থিতি ভিন্ন।

বিশ্ববাজারের একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দিচ্ছে বিভিন্ন দেশ। তাই এখনই আমদানির উদ্যোগ নেয়া দরকার। কিন্তু সরকার এখনই আমদানিতে নারাজ। খাদ্য সচিব জানান, লক্ষ্যমাত্রা পূরণ না হলে চাল আমদানির বিষয়ে বিবেচনা করা হবে।

Link copied!