Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪,

সচেতনতার অভাবে নষ্ট হচ্ছে সৌন্দর্য

প্রিন্ট সংস্করণ॥ফারুক আলম

মার্চ ২৯, ২০১৯, ০৮:০০ পিএম


সচেতনতার অভাবে নষ্ট হচ্ছে সৌন্দর্য

হাজার হাজার দর্শনার্থীর পদচারণায় হাতিরঝিল প্রকল্প এখন মুখরিত। কিন্তু উদ্বোধনের সময় যে পরিবেশ ছিল, আর এখনকার যে পরিবেশ তা সম্পূর্ণই ভিন্ন। পুরো হাতিরঝিল এলাকাই এখন নোংরা-আবর্জনায় ভরে গেছে। আগতদের মধ্যে সচেতনতার অভাব লক্ষ্য করা গেছে। যে যেখানে পারছেন সেখানেই খাবারের উচ্ছিষ্ট অথবা ময়লা ছুড়ে ফেলছেন। নতুন এ প্রকল্পের বিভিন্ন জায়গায় উচ্ছিষ্ট ও ময়লা ফেলার ডাস্টবিন থাকলেও সেটি ব্যবহার করছেন না কেউই। প্রকল্প এলাকায় আসা দর্শনার্থীদের মতে, এভাবে চলতে থাকলে এ প্রকল্প শিগগিরই একটি ভাগাড়ে পরিণত হবে। গত বুধবার সরেজমিন হাতিরঝিল প্রকল্পে দেখা গেছে, সকাল থেকে রাত ৮-৯টা পর্যন্ত শত শত মানুষ প্রকল্প এলাকা ঘুরে বেড়াচ্ছেন। সব বয়সি মানুষের উপস্থিতি দিন দিনই বাড়ছে। দর্শনার্থীদের ঘিরে বিভিন্ন পয়েন্টে অস্থায়ীভাবে ঝালমুড়ি, বাদাম, চানাচুর, চাটনি বিক্রেতারা বসছে। দর্শনার্থীরা এসব খোলা খাবার কিনে প্যাকেট কিংবা উচ্ছিষ্ট ফেলছে এখানে-সেখানে। উত্তরা থেকে ঘুরতে আসা দম্পতি আরিফুর রহমান ও লায়লা আক্তার আমার সংবাদকে জানান, এখানে আসা অনেকেই অসচেতনতায় প্রকল্পের সৌন্দর্য নষ্ট করছেন। দর্শনার্থীরা নির্দিষ্ট জায়গা দিয়ে না হেঁটে প্রায়ই রাস্তার পাশে লাগানো ফুল গাছ ও ঘাসের ওপর দিয়ে হাঁটছে। পাশে অবস্থিত বস্তি এলাকা ও সেখানে বসবাসরত লোকজন বিশেষ করে মহিলা ও শিশুরা খেলার ছলে নষ্ট করছে ফুল ও ঘাসগুলো। দায়িত্বে থাকা সদস্যদের বাধার পরও দর্শনার্থীরা নষ্ট করছে সৌন্দর্য। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা বলেন, তারা দর্শনার্থীদের সঙ্গে অত্যন্ত ভালো ব্যবহার করছেন। অনুরোধও জানাচ্ছেন- এ প্রকল্প তাদেরই জন্য। সৌন্দর্য রক্ষায় তাদের ভূমিকা বেশি থাকা দরকার। ঝালমুড়ি বিক্রেতা ফজলু মিয়া জানান, এখানে অনেক দর্শনার্থী আসছে, ফলে বিক্রিও ভালো হচ্ছে। ঝালমুড়ির নোংরা প্যাকেট ফেলায় সৌন্দর্য নষ্ট হচ্ছে- এমন প্রশ্নের জবাবে বলেন, এটা যারা কিনে খাচ্ছেন তাদের সচেতনতার অভাব। আশপাশে কোনো টয়লেট না থাকায় অনেকেই চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছেন। এদের মধ্যে অনেকেই বাধ্য হয়ে ঝিলের ধারেই মলমূত্র ত্যাগ করছেন।এসব বিষয়ে হাতিরঝিল প্রকল্পের সাবেক প্রকল্প পরিচালক (রাজউক) জামাল আক্তার ভূঁইয়া আমার সংবাদকে বলেন, হাতিঝিলে ময়লা-আবর্জনা না ফেলার জন্য নোটিস বোর্ড টাঙানো রয়েছে। সেখানে নাগরিক হিসেবে দর্শনার্থীরা সচেতন হতে হবে। সচেতনতা ছাড়া রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) একার পক্ষে হাতিঝিল পরিষ্কার রাখা সম্ভব নয়। ঢাকা উত্তর সিটি কর্পোরেশন বলছে, হাতিঝিল রাজউকের, তারা কেন আবর্জনা পরিষ্কার করবে। আবর্জনা পরিষ্কার করা সিটি কর্পোরেশনের আওতায় পড়ে। তারা ইচ্ছা করলেই ময়লা-আবর্জনা পরিষ্কার করতে পারেন। টয়লেটের সংখ্যা কম- এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, কয়েকটি টয়লেট আছে, আরও তিনটি জায়গায় টয়লেট বসানোর পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। ৮ দশমিক ৮০ কিলোমিটার সার্ভিস রোড, ফুটপাতসহ ৮ কিলোমিটার এক্সপ্রেসওয়ে, চারটি সেতু, তিনটি ছোট সেতু ও চারটি ওয়াটারপাসসহ এ প্রকল্প তৈরিতে ১ হাজার ৯৭১ কোটি টাকা ধরা হয়েছে। প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ে আড়াই হাজার আসনের দেশের বৃহত্তম উন্মুক্ত মঞ্চ, ভিউইং ডেক, ওয়াটার টেক্সি টার্মিনাল, ফুটব্রিজ এবং সাংস্কৃতিক ও ব্যবস্থাপনা ভবন নির্মিত হয়।