Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪,

বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষকরা আবারো মাঠে নামছেন

প্রিন্ট সংস্করণ॥রাসেল মাহমুদ

এপ্রিল ৩, ২০১৯, ০৬:২৩ পিএম


বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষকরা আবারো মাঠে নামছেন

দেশের প্রাথমিক শিক্ষাকে যুগোপযোগী ও মানসম্মত করার লক্ষ্যে ২০১৩ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের ঘোষণা দেন। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার আগে ২০১২ সালের ২৭ মে চার হাজার ১৫৯টি বঞ্চিত বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের আবেদন করে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত বিদ্যালয়গুলো বঞ্চিতই থেকে যায়। আর বাদপড়া এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা জাতীয়করণ দাবিতে দফায় দফায় রাজপথে নেমে আন্দোলন করেছেন। জানিয়েছেন নিজেদের অসহায়ত্বের কথা। কিন্তু আশ্বাস ছাড়া শেষ পর্যন্ত তাদের ভাগ্যে কিছুই জোটেনি। তাই আবারো রাজপথে নামতে যাচ্ছেন তার। শিক্ষকরা বলছেন, এবার দাবি আদায় না করে ঘরে ফিরব না। জানা যায়, জাতীয়করণের এক দফা দাবি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষকরা। গত বছরের ২১ জানুয়ারি থেকে ৭ ফেব্রুয়ারি জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অনশন ধর্মঘট পালন করেন তারা। সে সময় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত একাধিক সচিব বিদ্যালয়গুলো জাতীয়করণের আশ্বাস দেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তা আর হয়নি। পরে একই দাবিতে ওই বছরের ৩০ জুন থেকে বর্তমান সময় পর্যন্ত নানা কর্মসূচি পালন করেছেন শিক্ষকরা। পাশাপাশি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সরকারের সাথে যোগযোগ অব্যাহত রেখেছেন। তবে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রকার আলোচনার প্রস্তাব বা সহানভূতি প্রকাশ করা হয়নি। এতে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা। তারা মনে করছেন, সরকার বঞ্চিত এসব প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণ না করলে শিক্ষকদের জীবন আরও হুমকির মুখে পড়বে। জাতীয়করণ থেকে বঞ্চিত এসব বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন বাংলাদেশ বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির ব্যানারে বিভিন্ন সময় আন্দোলন চলে আসছে। সংগঠনটির সভাপতি মা. মামুনুর রশিদ খোকন ফের আন্দোলনে যাওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি আমার সংবাদকে বলেন, আমাদের পিঠ এখন দেয়ালে ঠেকে গেছে। আমরা দীর্ঘদিন ধরে দাবি আদায়ের জন্য শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করে আসছি। কিন্তু আশ্বাস ছাড়া আমাদের ভাগ্যে কিছুই জোটেনি। তাই দাবি আদায়ের জন্য আগামী ১৬ এপ্রিল জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করা হবে। ওই কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ইতিবাচক কোনো কিছু না হলে বৃহত্তর কর্মসূচি পালনেরও চিন্তা রয়েছে। মামুনুর রশিদ খোকন আরও বলেন, বাংলাদেশে মহান স্থগতি জাতির জনক বন্ধবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি যুদ্ধবিধ্বস্ত জাতিকে সুশিক্ষায় শিক্ষিত করার লক্ষ্যে ১৯৭৩ সালের জুলাই মাসে প্রথম পর্যায়ে ৩২ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের ঘোষণা দেন। পরে চার হাজার ১৬০টিসহ মোট ৩৬ হাজার ১৬০টি বেরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের ঘোষণা দিয়ে একটি ইতিহাস সৃষ্টি করেন। তিনি বলেন, সেই ধারাবাহিকতায় ২০১৩ সালের ৯ জানুয়ারি এক ঐতিহাসিক ঘোষণার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২৬ হাজার ১৯৩টি বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের ঘোষণা দেন। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার মধ্যে ২০১২ সালের আগে চার হাজার ১৫৯টি বঞ্চিত বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের আবেদনকৃত ছিল।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে আবেদন জানিয়ে মামুন বলেন, আপনি এবং আপনার বাবা জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রাথমিক শিক্ষকদের অভিভাবক হয়ে হূদয়ের চিরস্মরণীয় হয়ে আছেন। তাই বঞ্চিত বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলো জাতীয়করণের জন্য বিনীত অনুরোধ করছি। নতুন কর্মসূচির বিষয়টি নিশ্চিত করে সংগঠনটির মহাসচিব মো. কামাল হোসেন আমার সংবাদকে বলেন, আমরা ২০১৮ সালের ২১ জানুয়ারি থেকে ৭ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে অনশন ধর্মঘট পালন করেছি। সে সময় প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত তিনজন সচিব বিদ্যালয়গুলো জাতীয়করণের আশ্বাস দেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত আর তা হয়নি। পরবর্তীতে ৩০ জুন থেকে অদ্যাবধি নানা কর্মসূচি চলাকালে বারবার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সরকারের সাথে যোগযোগ করা হলেও সরকারের পক্ষ থেকে কোনো প্রকার আলোচনা প্রস্তাব বা সহানুভূতি প্রকাশ করা হয়নি। তাই বাংলাদেশ বেসরকারি প্রাথমিক শিক্ষক সমিতি আগামী ১৬ এপ্রিল জাতীয়করণের এক দফা দাবিতে আন্দোলনের যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।