Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

১৩২টি অবৈধ আবাসন প্রকল্প

প্রিন্ট সংস্করণ॥ফারুক আলম

নভেম্বর ২৭, ২০১৯, ০৬:৪৭ পিএম


১৩২টি অবৈধ আবাসন প্রকল্প
  • ফাঁদে পড়ে সর্বস্বান্ত হচ্ছেন সাধারণ মানুষ
  • যত্রতত্র আবাসনের সাইনবোর্ড
  • লোভনীয় অফারের ছড়াছড়ি
  • কৃষিজমিতে বালু ভরাট
ঢাকায় আবাসন সংকট দীর্ঘ হওয়ায় প্রতি বছরই বাড়ছে লাগামহীন বাড়িভাড়া। ভাড়ার অভিশপ্ত আগ্রাসন থেকে মুক্তি পেতে সরকারি-বেসরকারি চাকরিজীবী মানুষ মাথাগোঁজার ঠাঁই খুঁজতে ঢাকার আশপাশে প্লট কেনার দিকে ঝুঁকছেন। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে স্বল্প আয়ের মানুষদের আকৃষ্ট করে কৃষিজমি কিংবা নদীর পাড়ে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে লোভনীয় অফার দেখাচ্ছেন অবৈধ আবাসন ব্যবসায়ীরা। এর ফাঁদে পড়ে শেষ সম্বলটুকু হারিয়ে নিঃশেষ হচ্ছেন শতশত গ্রাহক। এসব আবাসন প্রকল্পের কর্মকাণ্ডে বিপাকে পড়েছে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (রাজউক)। এই অবস্থায় রাজউক এ পর্যন্ত ১৩২টি অবৈধ আবাসন প্রকল্পের তালিকা করেছে। সরেজমিন দেখা গেছে, কৃষিজমি, খালে বালু ভরাট করে ব্যাঙের ছাতার মতো আবাসন প্রকল্পের সাইনবোর্ডে ছেয়ে গেছে উত্তরখান ও দক্ষিণখান, গাবতলী, আমিনবাজার, রূপগঞ্জ এবং পূর্বাচলসহ ঢাকার আশপাশের এলাকা। কৃষিজমিতে সাইনবোর্ড টাঙিয়ে গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণা করছে তারা। প্রতারকদের নিত্যনতুন কৌশল ঠেকাতে উচ্ছেদ অভিযানে নামে রাজউক। তবে এই অভিযানের পরবর্তী সময়ে মনিটরিংয়ের ব্যবস্থা না থাকায় ফের সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে নিজেদের আখের গোছাচ্ছে চক্রটি। জানা গেছে, কতিপয় বেসরকারি হাউজিং কোম্পানি/রিয়েল এস্টেট ডেভেলপার বেসরকারি আবাসিক প্রকল্পের ভূমি উন্নয়ন বিধিমালা, ২০০৪ (সংশোধিত ২০১২ ও ২০১৫) এর আওতায় যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমোদন ব্যতীত তাদের প্রকল্পে রাজউক কর্তৃক প্রণীত মহাপরিকল্পনার ব্যত্যয় করে মাটি ভরাট করছে। রূপগঞ্জ এলাকার ‘ওয়েলকেয়ার কনসোর্টিয়াম লিঃ’-এর ‘ওয়েলকেয়ার সিটি’ প্রকল্পের সাইনবোর্ড ও গেট অপসারণ করে প্রকল্প অফিস তালাবদ্ধ দেয় রাজউক। অবৈধ আবাসন প্রকল্পের উচ্ছেদ অভিযানের দায়িত্বে থাকা রাজউকের নগর পরিকল্পনাবিদ মাহফুজা আক্তার আমার সংবাদকে বলেন, দীর্ঘদিন ধরে কিছু অসাধু চক্র ঢাকার আশপাশে কৃষিজমি, খাল ও নদীর পাড় দখল করে আবাসন প্রকল্পের সাইনবোর্ড টাঙিয়ে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছে। যার ফলে অনেক মানুষ সর্বস্বান্ত হয়েছেন। এসব অবৈধ আবাসন প্রকল্পের বিরুদ্ধে নিয়মিত উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করবে রাজউক। রাজউকের তথ্যমতে, পূর্বাচল প্রকল্প এলাকায় অনুমোদনবিহীন ‘ছায়াকুঞ্জ আবাসিক এলাকা’ ‘মাসকো গ্রুপ’, ‘নর্থ টাউন আবাসিক প্রকল্প’ ও ‘উত্তরা প্রবর্তন সিটি’ প্রকল্পের সাইনবোর্ড টাঙিয়ে মানুষের সঙ্গে প্রতারণা করে আসছিল। পরে ‘প্রবর্তন সিটি’র অফিস সিলগালাসহ দুই লাখ টাকা জরিমানা করে রাজউক। একই অবস্থা রাজউকের জোন ৪ এলাকায়। অনুমোদন ছাড়া ‘মালুম সিটি’ প্রকল্পের সাইনবোর্ড টাঙিয়ে বালু ভরাটের কাজ শুরু করলে তা বন্ধ করে দেয় রাজউকের ভ্রাম্যমাণ ম্যাজিস্ট্রেট। একই অবস্থা রূপগঞ্জ এলাকায়ও। সেখানে ‘ওয়েলকেয়ার কনসোর্টিয়াম লিঃ’-এর ‘ওয়েলকেয়ার সিটি’ প্রকল্পের সাইনবোর্ড টাঙিয়েছে। রাজউকের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট আশরাফ হোসেন ও উপ-নগর পরিকল্পনাবিদ কামরুল হাসান সোহাগের যৌথ নেতৃত্বে উক্ত মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়। বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব প্লানার্সের সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. আদিল মোহাম্মদ খান আমার সংবাদকে বলেন, ঢাকার আশপাশে যারা কৃষিজমিতে বালু ভরাট করে অবৈধ আবাসন প্রকল্প তৈরি করছেন তাদের বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করে না। ফলে ভূমিদস্যুরা নিজেরা আইন লঙ্ঘন করে বারবার সাইনবোর্ড টাঙিয়ে মানুষের সাথে প্রতারণার সুযোগ পাচ্ছে। এসটিএমএ