Skip to main content
  • জানুয়ারি ২৭, ২০২১
  • ১৪ মাঘ ১৪২৭
  • ই-পেপার
Amar Sangbad
  • বাংলাদেশ
  • সারা বাংলা
  • আন্তর্জাতিক
  • রাজনীতি
  • মতামত
  • অর্থ-বাণিজ্য
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • জীবনযাপন
  • অন্যান্য
  • ই-পেপার
  • আজকের পত্রিকা
  • প্রচ্ছদ
  • বাংলাদেশ
  • সারা বাংলা
  • আন্তর্জাতিক
  • রাজনীতি
  • মতামত
  • অর্থ-বাণিজ্য
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • জীবনযাপন
  • বিশেষ প্রতিবেদন
  • শিক্ষা
  • শিল্প-সাহিত্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • পরবাস
  • ধর্ম
  • হরেক রকম
  • চাকরি
  • আজকের পত্রিকা
  • আর্কাইভ
  • ছবি
  • ভিডিও
  • প্রচ্ছদ
  • বাংলাদেশ
  • সারা বাংলা
  • আন্তর্জাতিক
  • রাজনীতি
  • মতামত
  • অর্থ-বাণিজ্য
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • জীবনযাপন
  • বিশেষ প্রতিবেদন
  • শিক্ষা
  • শিল্প-সাহিত্য
  • বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি
  • পরবাস
  • ধর্ম
  • হরেক রকম
  • চাকরি
  • আজকের পত্রিকা
  • ই-পেপার
  • আজকের পত্রিকা
  • আর্কাইভ
  • ছবি
  • ভিডিও
  • আমার সংবাদ
  • বিশেষ প্রতিবেদন
শরিফ রুবেল ও কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি
প্রিন্ট' সংস্করণ
মার্চ ১৬, ২০২০, ০০:৫৪
আপডেট: মার্চ ১৬, ২০২০, ০১:২৫

ডিসিকাণ্ডে বিব্রত মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ

সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম। অনলাইন নিউজ পোর্টাল বাংলাট্রিবিউনের কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি। গত শুক্রবার মধ্যরাতে বাড়িতে হানা দিয়ে তাকে তুলে নিয়ে যায় জেলা প্রশাসনের মোবাইল কোর্ট।

এদিন রাতে ডিসি অফিসের দুই-তিন জন ম্যাজিস্ট্রেট ১৫-১৬ জন আনসার সদস্যকে নিয়ে দরজা ভেঙে তার বাসায় প্রবেশ করে। এ সময় আরিফুলের বাসায় আধা বোতল মদ ও ১৫০ গ্রাম গাঁজা পাওয়া গেছে বলে দাবি করা হয়।

পরে তাকে গ্রেপ্তার করে ডিসি অফিসে নিয়ে চোখ বেঁধে বিবস্ত্র করে বেধড়ক পেটানো হয়। অবৈধ মাদক পাওয়ার অপরাধে আরিফুলকে এক বছরের সাজা দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়।

বিপত্তি ঘটে ওখানেই, বেআইনিভাবে সাংবাদিককে কারদণ্ড দেয়ায় আলোচনা-সমালোচনার ঝড় বইতে থাকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে শুরু করে মন্ত্রী, এমপি, প্রশাসন এমনকি উচ্চ আদালতও।

এতে বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়ে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকে শুরু করে প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিরাও। প্রতিবাদে ফুঁসে উঠেছে দেশের সাংবাদিক সংগঠন ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিরা।

গণমাধ্যমে এ ঘটনা জানার পর থেকে গত শনিবার দিনভর দেশের বিভিন্ন স্থানে এ ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে এবং আরিফের মুক্তিসহ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের শাস্তি দাবি করে মানববন্ধন ও সমাবেশ অব্যাহত রয়েছে।

অনৈতিকভাবে গ্রেপ্তারের বিষয়টি বাংলাট্রিবিউন কর্তৃপক্ষ তাৎক্ষণিকভাবে আইনমন্ত্রী আনিসুল হক ও জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনকে অবহিত করার পরই নড়েচড়ে বসে প্রশাসন।

এরপরই সাংবাদিককে সাজার ঘটনায় রংপুরের বিভাগীয় কমিশনার কে এম তারিকুল ইসলামকে তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়।

প্রাথমিক তদন্তে অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় গতকাল দুপুরে ডিসি সুলতানা পারভীনকে প্রত্যাহার করে নেন। এদিকে আরিফুল গ্রেপ্তারের পর থেকেই দায় নিচ্ছে না কেউ।

মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর ও ডিসি অফিস একে অপরের ওপর দায় চাপাচ্ছে। এদিকে আরিফুলের জামিন পাওয়ার ব্যাপারেও কিছুই জানে না তার পরিবার।

কে বা কারা জামিন আবেদন করেছে সেটা নিয়েও এক প্রকার ধোঁয়াশার সৃষ্টি হয়েছে। সাংবাদিক গ্রেপ্তারের ঘটনাটি আইনসিদ্ধ হয়নি বলেও দাবি করছে বিভিন্ন মানবাধিকার সংগঠন ও আইনজীবীরা।

আইন বিশেজ্ঞদের বলেন, ‘কুড়িগ্রামের বিষয়টি আইনের দিক দিয়েও বিব্রতকর। কোনোভাবেই মধ্যরাতে টাস্কফোর্সের অভিযান আইনসম্মত নয়। অবশ্যই টাস্কফোর্সকে সকাল না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে, আইনেও এমন সুস্পষ্ট বিধান রয়েছে। আইনের ৭ ধারায় এ বিষয়ে বিস্তর আলোচনা রয়েছে।

মধ্য রাতে অভিযান ও সাজা দেয়ার বিষয়টি প্রশাসনের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে। এ ধরনের কর্মকাণ্ড মাঠপর্যায়ে সরকার ও প্রশাসনের ওপর জনগণের আস্থা কমায় এবং পরিস্থিতি বিরূপ করে তোলে।’

জেলা প্রশাসক বলেই তিনি আইনের ঊর্ধ্বে নয়। তাকেও আইনের মধ্যে থেকেই কাজ করতে হবে। ডিসি আইন জানার পরও আইন ভঙ্গ করায় তাকেও শাস্তি পেতে হবে; বলেও জানান আইনের এই নীতিনির্ধারকরা।

জানা যায়, জেলা প্রশাসক মোছা. সুলতানা পারভীন একটি পুকুর সংস্কার করে নিজের নামে নামকরণ করতে চেয়েছিলেন। আরিফুল এ বিষয়ে নিউজ করার পর থেকেই তার ওপর ক্ষুব্ধ ছিলেন ডিসি।

এছাড়া, সমপ্রতি জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন অনিয়ম ও মুজিববর্ষের টাকা নয়-ছয় নিয়ে রিপোর্ট করতে চেয়েছিলেন সাংবাদিক আরিফ।

এ বিষয়ে জানতে পেরে জেলা প্রশাসকের অফিস থেকে তাকে বেশ কয়েকবার ডেকে নিয়ে সতর্ক করা হয়। তাই ডিসি ক্ষুব্ধ হয়েই তাকে পরিকল্পিতভাবে গ্রেপ্তার করে শাস্তি দেয়।

আরিফুলের জামিন, আবেদন কে করেছে জানে না পরিবার : ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা পাওয়া সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম জামিন পেয়েছেন। গতকাল রোববার তাকে জামিন দেন কুড়িগ্রামের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. সুজাউদ্দৌলা।

তবে এই জামিন চেয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে কোনো আবেদন করা হয়নি বা তিনি কোনো আইনজীবীও নিয়োগ দেননি বলে নিশ্চিত করেছেন আরিফুলের স্ত্রী মোস্তারিমা সরদার।

মোস্তারিমা সরদার বলেন, ‘আমি আজ জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে যাই। সেখানে গিয়ে শুনতে পাই, আরিফুলের জামিন হয়ে গেছে। কারাগারে গিয়ে শুনলাম, জামিন নিয়ে হাসপাতালে চলে গেছেন আরিফুল। কে আবেদন করলো, কখন করলো, কিছু জানি না।’

অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. সুজাউদ্দৌলা মুঠোফোনে বলেন, ২৫ হাজার টাকার মুচলেকায় আরিফুলের জামিন হয়েছে। আবেদন কে করেছেন— এমন প্রশ্নের জবাবে সুজাউদ্দৌলা বলেন, ‘কাগজপত্র না দেখে বলতে পারবো না।’

এদিকে আরিফুলের জামিনের পরে তার শরীরে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। শরীরিকভাবে অসুস্থ হওয়ায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

তবে ‘মাদকবিরোধী অভিযান’-এর উদ্যোগ জেলা প্রশাসন নাকি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কুড়িগ্রাম জেলা কার্যালয় নিয়েছিল, তা নিয়ে কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক ও জেলা মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ কার্যালয়ের সহকারী পরিচালকের পরস্পরবিরোধী বক্তব্য পাওয়া যায়।

রাতে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে সাজা, দায় নিচ্ছে না কেউ : আরিফুল ইসলাম রিগানকে ভ্রাম্যমাণ আদালত (মোবাইল কোর্ট) বসিয়ে সাজা দেয়া হলেও সেই আদালত বসানোর দায়িত্ব নিচ্ছেন না কেউ। সবাই এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন।

এমনকি কুড়িগ্রাম জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন দাবি করেছেন, মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কথা মতো মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করা হয়েছে। তবে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আবু জাফর বলছেন, তারা কোনো মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেননি।

এদিকে ঘটনার সময় থেকেই পুলিশ জানিয়েছে, তারা কোনো মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করেনি। বরং নিরাপত্তা সাহায্যের জন্য আরিফের ফোন পেয়ে কুড়িগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (এএসপি) উৎপল রায় ও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহফুজুর রহমান দ্রুত তার বাড়িতে যান।

পরে বিষয়টি র‍্যাবকেও জানান তারা। কুড়িগ্রাম সদর সার্কেলের দায়িত্বে থাকা সহকারী পুলিশ সুপার উৎপল রায় বলেন, ‘ডিসি অফিস মোবাইল টিম বা টাস্কফোর্স করার জন্য চিঠি দিয়ে থাকে।

সেই আলোকে আমরা নিয়মিত পুলিশ দিয়ে থাকি। কিন্তু এই ঘটনা সম্পর্কে আমাদের সিনিয়র কেউই কোনো কিছু জানতেন না। আপনারা ভালো করে খোঁজখবর নিয়ে দেখতে পারেন।’

কুড়িগ্রাম পৌরমেয়র আবদুল জলিল জানান, নিয়মানুযায়ী মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করতে মেয়রের অনুমতির প্রয়োজন হয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে তাকে কিছু অবহিত করা হয়নি।

সাংবাদিক আরিফ তার জানামতে, কোনো অনৈতিক কাজের সঙ্গে জড়িত নন বলে জানান তিনি। তাকে অধূমপায়ী মানুষ হিসেবে চেনেন বলেও জানান মেয়র।

প্রতিশোধ নিতেই আইনের অপপ্রয়োগ দাবি আইনজীবীর : সাংবাদিক আরিফুলের ওপর পরিকল্পিতভাবে প্রতিশোধ নিতেই আইন বহির্ভূতভাবে মধ্যরাতে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার মাধ্যমে তাকে শাস্তি দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

টাস্কফোর্সের অভিযান চালিয়ে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে মধ্যরাতে আদৌ কোনো কার্যক্রম চালানো যায় কি-না, প্রশ্ন তুলে আইনজীবী ও মানবাধিকারকর্মীরা বলছেন, যাদের হাতে আইন সুরক্ষিত থাকার কথা; তারাই এর অপপ্রয়োগ করেছেন। ঘটনা বিশ্লেষণে মনে হয় না, যারা সাংবাদিক আরিফুলকে নির্যাতন করেছেন; তারা আইন না জেনে করেছেন।

এদিকে জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীন বলেছেন, মধ্যরাতে ধরে এনে সাজা দেয়াকে ‘আইন মেনেই করা’ হয়েছে।

এ বিষয়ে মানবাধিকারকর্মী নূর খান বলেন, জনগণের খেদমতকারী, সেবাপ্রদানকারী যখন জনগণের ওপর চড়াও হয়, তখন রাষ্ট্রের চরিত্র বুঝতে বাকি থাকে না। ডিসি সাহেব যেটা করলেন প্রতিশোধস্পৃহা কেবল নয়, জনগণকেও বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানো হয়েছে।

সমাজের প্রতিচ্ছবি যারা তৈরি করেন, স্বচ্ছতার সঙ্গে দেখার চেষ্টা করেন— সেই সাংবাদিককে যখন বেআইনিভাবে রাত ২টায়, পরিবারে অন্য কোনো পুরুষ মানুষের অনুপস্থিতিতে, প্রতিবেশীকে সাক্ষী না করে জেলা প্রশাসকের অফিসে তুলে আনা হয়; তখন এর মধ্য দিয়ে ডিসি জনগণকে ভয়ভীতি দেখাচ্ছেন এটা প্রমাণিত।

এটি জনগণের প্রতি তার হিংস্রতার বহিঃপ্রকাশ। কেবল তদন্ত নয়, ডিসিকে সরিয়ে তদন্ত করে বিচারের আওতায় আনতে হবে।

তাকে পদে বহাল রেখে সুষ্ঠু তদন্ত করা অসম্ভব। অ্যাডমিন ক্যাডারের সদস্যরা একজোট থাকেন, তারা নিজেদের ত্রুটি খুঁজে পান না। তারপরও এ ক্ষেত্রে আমরা সুষ্ঠু বিচার দেখতে চাই।

ভ্রাম্যমাণ আদালতের সাজা, আইনে যা আছে : ভ্রাম্যমাণ আদালত (মোবাইল কোর্ট) হলো একটি সংক্ষিপ্ত বিচার পদ্ধতি। এই আদালতে বিচারক ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে তার বিচারিক এখতিয়ার অনুযায়ী উপস্থিত সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে তাৎক্ষণিকভাবে দোষীকে দণ্ড দিয়ে থাকে।

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার শিহাব উদ্দিন খান বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালতের এখতিয়ার নিয়ে কয়েকদিন আগে হাইকোর্টও একটা রুপরেখা দিয়েছেন।

আর আইন মোতাবেক ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা পদ্ধতি সম্পর্কে আইনের ৭ ধারায় বলা আছে— ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনার সময় কোনো ব্যক্তির বিরুদ্ধে অপরাধ আমলে গৃহীত হওয়ার পরপরই আদালত পরিচালনাকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সংক্ষিপ্ত অভিযোগ লিখিতভাবে গঠন করে তা অভিযুক্ত ব্যক্তিকে পাঠ ও ব্যাখ্যা করে শোনাবেন এবং অভিযুক্ত ব্যক্তি গঠিত অভিযোগ স্বীকার করেন কি-না তা জানতে চাইবেন।

অভিযুক্ত স্বীকার না করলে তিনি কেন স্বীকার করেননি তার বিস্তারিত ব্যাখ্যা জানতে চাইবেন। এরপর অভিযুক্ত ব্যক্তি অভিযোগ স্বীকার করলে তার স্বীকারোক্তি লিপিবদ্ধ করে অভিযুক্তের স্বাক্ষর নিতে হবে এবং ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনাকারী নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট বা জেলা ম্যাজিস্ট্রেট তার বিবেচনায় যথোপযুক্ত দণ্ড আরোপ করে লিখিত আদেশ দেবেন। ‘আইনত যেখানে অপরাধীকে পাওয়া যাবে সেখানেই সাজা দিতে হয়।

কিন্তু বাসা থেকে ধরে নিয়ে গিয়ে যদি ডিসি অফিসে সাজা দেয়া হয় তাহলে তা অবৈধ হবে। ভ্রাম্যমাণ আদালতের বিচার মানে তাৎক্ষণিক অপরাধের স্থানেই বিচার দিতে হয়। রাতে ভ্রাম্যমাণ আদালতের কোথাও যাওয়ার কোনো সুযোগ নেই।

প্রশাসন ভ্রাম্যমাণ আদালত রাতের বেলা পরিচালনা করতে পারে না। কোথাও ঘরের দরজা ভেঙে ঢুকতে পারবেন না। তবে ভ্রাম্যমাণ আদালত চাইলে সিলগালা করে দিয়ে আসতে পারেন।

এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলে ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল এ কে এম আমিন উদ্দিন মানিক বলেন, ‘আসলে আইনে নেই কাউকে বাসা থেকে তুলে নিয়ে শাস্তি দেয়া, এটা আইন বহির্ভূত কাজ।

বাসা থেকে জোর করে তুলে নিয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত (মোবাইল কোর্ট) সাজা দিতে পারেন না। এ ঘটনাটি উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে করা হয়েছে। আইন এসব গর্হিত কাজ সমর্থন করে না।’

আরিফুলের ঘটনায় নজর দিয়েছেন হাইকোর্ট, নথি তলব : সাংবাদিক আরিফুলকে কোন আইনে এবং কি অপরাধে সাজা দেয়া হয়েছে এবং ভ্রাম্যমান আদালতের সাজা দেয়ার সেই নথি তলব করেছেন হাইকোর্ট।

একই সঙ্গে ওই সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মোবাইল কোর্ট না টাস্কফোর্সের মাধ্যমে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে তা জানতে চেয়েছেন আদালত। আজ সোমবারের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষকে তা জানাতে বলা হয়েছে। এ ছাড়া, রাষ্ট্রপক্ষের কাছে কয়েকটি প্রশ্নের জবাব চেয়েছেন আদালত।

সেগুলো হলো— মধ্যরাতে অভিযান পরিচালনার কারণ কী? অভিযান পরিচালনার তথ্য কীভাবে পাওয়া গেছে? কে দিয়েছে? এ সংক্রান্ত ডকুমেন্ট চেয়েছেন আদালত। কার সামনে মাদক পাওয়া গেছে সে তথ্যও দিতে বলা হয়েছে।

গতকাল রোববার বিচারপতি মো. আশরাফুল কামাল ও বিচারপতি সরদার মো. রাশেদ জাহাঙ্গীরের সমন্বয়ে গঠিত হাইকোর্ট বেঞ্চ এক রিট আবেদনের শুনানি নিয়ে এ আদেশ দেন।

আদালতে রিটের পক্ষে শুনানি করেন ব্যারিস্টার সৈয়দ সায়েদুল হক সুমন ও অ্যাডভোকেট ইশরাত হাসান। রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল দেবাশীষ ভট্টচার্য।

এর আগে, আজ সকালে সাংবাদিক আরিফুল ইসলামকে কারাদণ্ড দেয়ার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে হাইকোর্টে রিট করা হয়। কুড়িগ্রামের ডিসি সুলতানা পারভীনসহ সংশ্লিষ্ট ম্যাজিস্ট্রেটদের তলব চাওয়ার পাশাপাশি ৫০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ চাওয়া হয়। অনলাইন পত্রিকাটির নির্বাহী সম্পাদক হারুন উর রশীদের পক্ষে আইনজীবী ইশরাত হাসান জনস্বার্থে রিট দায়ের করেন।

হাসপাতালের বিছানায় আহত সাংবাদিক যা বললেন : জামিনের পর আহত অবস্থায় আরিফুলকে হাসপাতালে নেয়া হলে বিছানায় শুয়ে সাংবাদিকদের আরিফ বলেন, শুক্রবার মধ্যরাতে আমার ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে আমাকে মারধর করা হয়। প্রথম আঘাত করেন আরডিসি (সহকারী কমিশনার, রাজস্ব) নাজিমুদ্দিন।

এরপর আমাকে টেনেহিঁচড়ে বাইরে বের করে নিয়ে আসে। এরপর মাইক্রোতে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে আমার হাত ও চোখ বেঁধে ফেলা হয়। এ সময় আমাকে এনকাউন্টার দেয়া হবে বলে একটি অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে যায়। আমি অনেক অনুরোধ করার পরও আমাকে অকথ্য ভাষায় গালি দিতে থাকে মাইক্রোবাসের অন্যরা। তারা আমাকে বারবার কালেমা পড়ে নিতে বলছিল।’

আরিফ আরও বলেন, ‘আমি অনেক কাাকুতি মিনতি করি। আল্লাহর ও আমার সন্তানের কসম দিয়ে তাদের কাছে প্রাণভিক্ষা চাই আমি। এরপরও তারা ক্ষ্যান্ত হচ্ছিল না। আমাকে বারবার বলছিল— কালেমা পড়ে নে এবং আমাকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন আরডিসি।

তিনি বলেন, ‘এরপর সেই স্থান থেকে ঘুরিয়ে আমাকে ডিসি অফিসে নিয়ে আসা হয়। সেখানে অনেক কষ্টে বুঝতে পারি আমাকে ডিসি অফিসে নিয়ে আসা হয়েছে। পরে সেখানে একটি রুমে নিয়ে আবার আমাকে গালি দিতে থাকেন আরডিসি নাজিমুদ্দিন। তারা আমাকে মারধর করে ও বিবস্ত্র করে ভিডিও ধারণ করে।’

সাংবাদিক আরিফ বলেন, ‘সবশেষে আমার চোখবাঁধা অবস্থায় চারটি স্বাক্ষর করিয়েছে। যেহেতু চোখ বাঁধা ছিল, তাই কোথায় স্বাক্ষর করেছি আমি জানি না। এরপর তারা আমাকে কারাগারে রেখে আসে। তারা যে আমাকে নির্যাতন করেছে তার চিহ্ন আমার সারা শরীরে আছে।’

মধ্যরাতে তুলে নিয়ে দণ্ডিত করা বেআইনি দাবি টিআইবির : মধ্যরাতে ঘর থেকে তুলে আনার পর মোবাইল কোর্টে বিচার করে কারাদণ্ড দেয়ার পুরো ঘটনাকেই বেআইনি বলে আখ্যায়িত করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

গত শনিবার এক বিবৃতিতে জড়িতদের বিচার ও দৃষ্টান্তমূলক জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা জরুরি বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।

বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, আইনের এমন যথেচ্ছ অপপ্রয়োগ আইনের শাসনের সাংবিধানিক অঙ্গীকারের পরিপন্থি এবং গণমাধ্যমের স্বাধীনতার প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখানোর নামান্তর।

এমন ন্যক্কারজনক ঘটনায় দ্রুত তদন্ত এবং জড়িতদের বিচার ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা না গেলে প্রশাসন তথা সরকারের ওপরই জনগণ আস্থা হারিয়ে ফেলবে।

টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘দেশে মোবাইল কোর্ট পরিচালনার জন্য সুনির্দিষ্ট আইন আছে, সর্বোচ্চ আদালতের নির্দেশনা আছে। সে অনুযায়ী রাতের বেলা কোনো নাগরিককে ঘর থেকে তুলে এনে মোবাইল কোর্টের কার্যক্রম পরিচালনা করাটা অবৈধ।

যে সাংবাদিককে কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে, তিনি যদি সন্দেহের তালিকায় থাকতেন, তাহলে তাকে নজরদারিতে রাখা যেতো; কিংবা ‘অপরাধের গুরুত্ব বিবেচনায়’ পুলিশ অভিযান চালাতে পারতো।

আরও গুরুতর মনে হলে ম্যাজিস্ট্রেট তার বাসা সিলগালা করে দিয়ে আসতে পারতেন। কিন্তু, ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে মধ্যরাতে ‘দরজা ভেঙে’ একজন নাগরিককে তুলে আনা এবং পরে মোবাইল কোর্ট বসিয়ে কারাদণ্ড দেয়াটা অবশ্যই প্রশ্নবিদ্ধ।

আমরা যতটুকু বুঝি, তাতে মোবাইল কোর্টের ঘটনাস্থলে উপস্থিত থাকার কথা, কিন্তু তা না করে ওই সাংবাদিককে তুলে আনার পর কোর্টের কার্যক্রম পরিচালনা থেকে পুরো ঘটনাটির পেছনেই যে অপরাধ দমন নয়, বরং অন্য কোনো বিবেচনা কাজ করেছে তা স্পষ্ট।’

ডিসির কর্ম অনুযায়ী শাস্তি হবে —জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী : জেলা প্রশাসক সুলতানা পারভীনকে প্রত্যাহার করা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। গতকাল রোববার দুপুরে জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন গণমাধ্যমকে এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, এ ঘটনায় কঠোর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আরিফকে দায়মুক্ত করতে কাজ করা হচ্ছে। এর মধ্যে তার জামিন হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী সই করলে ডিসি সুলতানাকে প্রত্যাহার করা হবে এবং তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা হবে। মামলা করার পর অল্প সময়ের মধ্যে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে।

তিনি বলেন, স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে ওই ঘটনার তদন্ত করে ডিসির বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পাওয়া গেছে। কর্ম অনুযায়ী তার শাস্তি হবে।

আমারসংবাদ/এসটিএমএ

আপনার মতামত জানান :

বিশেষ প্রতিবেদন - সর্বশেষ
  • বিদ্যুতে কোনো ঘাটতি নেই
  • সংকটে দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল
  • আসবে আজ চসিক পিতা
  • প্রতীক্ষার টিকা প্রয়োগ আজ
  • ভয় এখন আ.লীগের বিদ্রোহীরা!
বিশেষ প্রতিবেদন - জনপ্রিয়
ছাত্রনেতা থেকে জননেতা টোটন
সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প রুখছে কে-ফোর্স
রাজস্বের প্রধান উৎস আয়কর মেলা
আগামী মাস থেকে মাস্টার ট্রেইনারদের প্রশিক্ষণ শুরু
ঝুলছে অর্পিত সম্পত্তির মামলা
  • বাংলাদেশ
  • সারা বাংলা
  • আন্তর্জাতিক
  • রাজনীতি
  • মতামত
  • অর্থ-বাণিজ্য
  • খেলাধুলা
  • বিনোদন
  • জীবনযাপন
  • অন্যান্য

সম্পাদক ও প্রকাশক: হাশেম রেজা

বার্তা ও বাণিজ্যিক কার্যালয়:
৭১, মতিঝিল, বা/এ (২য় তলা) ঢাকা-১০০০।
ফোন: পিএবিএক্স- ০২-৯৫৯০৭০২, ৯৫৯০৭০৩
নিউজ রুম: ০১৯১১-১২৫৭১২
ই-মেইল: dailyamarsangbad@gmail.com
online@amarsangbad.com

Daily Amar Sangbad is one of most circulated  newspaper in Bangladesh. The online portal of Daily Amar Sangbad is the most visited Bangladeshi and Bengali website in the world.

Amar Sangbad
  • About Us
  • Privacy Policy
  • Terms and conditions
  • Copyright Policy

কপিরাইট © 2021 এইচ আর মিডিয়া লিমিটেড এর সকল স্বত্ব সংরক্ষিত। Powered by: RSI LAB