Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

পছন্দের কলেজ পায়নি ১৩ হাজার শিক্ষার্থী

আসাদুজ্জামান আজম

আগস্ট ২৬, ২০২০, ০৬:২২ পিএম


পছন্দের কলেজ পায়নি ১৩ হাজার শিক্ষার্থী

এসএসসিতে জিপিএ-৫ পেয়েও পছন্দের কলেজে স্থান হয়নি ১৩ হাজার শিক্ষার্থীর। আর কলেজ পায়নি ৬৪ হাজার শিক্ষার্থী। ১৫২ কলেজে ভর্তি হতে আবেদন করেনি একজন শিক্ষার্থীও। গত মঙ্গলবার রাতে একাদশ শ্রেণির প্রথম ধাপের প্রকাশিত ফল পর্যালোচনা করে এ তথ্য পাওয়া গেছে।  

আইরিন আক্তার সানজিদা। রাজধানীর একটি বেসরকারি স্কুল থেকে বিজ্ঞান বিভাগ থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে। একাদশে ভর্তির জন্য ভিকারুননিসা, আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজসহ প্রথম সারির পাঁচটি কলেজকে পছন্দ দিয়ে আবেদন করেন।

মঙ্গলরাত রাতে ভর্তির ফলাফলে তার পছন্দের কোনো কলেজই মনোনয়ন দেয়নি। এতে সানজিদা ও তার অভিভাবক মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন। সকালে ঢাকা শিক্ষাবোর্ডে এসে জানতে পারেন প্রথমসারির কলেজগুলো পছন্দের তালিকায় রাখায় তিনি কোনো কলেজ পাননি।

শুধু সানজিদা নয়, এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়ে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য কোনো কলেজ পায়নি ১৩ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী। তবে দ্বিতীয়বার আবার আবেদনের সুযোগ পাবেন বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, যেসব শিক্ষার্থী কলেজ পায়নি তারা প্রাপ্ত নম্বর অনুযায়ী পছন্দের কলেজে মেধাক্রমে স্থান পায়নি। এসব শিক্ষার্থী ঠিকভাবে কলেজ নির্বাচন করতে না পারায় প্রথম দফায় কলেজ পায়নি। প্রথম দফার তালিকায় যারা আছেন তাদের মধ্য থেকে যারা কলেজ নিশ্চিত করবেন না, তারা দ্বিতীয় দফায় আবেদন করতে চাইলে নতুন করে ফি জমা দিতে হবে। প্রতি বছর এ ধরনের ঘটনা ঘটে। তবে দ্বিতীয় দফায় আবেদনে তারা কলেজ পছন্দের ক্ষেত্রে প্রথম ও দ্বিতীয় সারির কলেজ পছন্দ দিলে কলেজ পেয়ে যাবেন।

ঢাকা শিক্ষাবোর্ডের কলেজ পরিদর্শক ও আন্তঃশিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক প্রফেসর মো. হারুন-অর-রশিদ বলেন, পছন্দের তালিকায় প্রথম সারির কলেজগুলো রাখায় এরকম হয়েছে। এতে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই। তারা দ্বিতীয় ধাপেও আবেদনের সুযোগ পাবে।  একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির প্রথম ধাপে সারা দেশের ১২ লাখ ৭৭ হাজার ৭২১ জন শিক্ষার্থী মনোনীত হয়েছে।

১৩ লাখ ৪২ হাজারের বেশি ভর্তিচ্ছু আবেদন করেছেন। সে হিসেবে প্রথম দফায় আবেদন করেও ৬৪  হাজার ৯৭২ জন ভর্তির জন্য কোনো কলেজে মনোনয়ন পায়নি। এর মধ্যে ঢাকা বোর্ডে তিন হাজার ৮০০ ও সারা দেশের ৯ হাজার ৩১২ জন জিপিএ-৫ প্রাপ্ত শিক্ষার্থী রয়েছে।

আর চারটি কলেজে কোনো আবেদন পড়েনি। বোর্ড কর্মকর্তারা বলছেন, যারা পছন্দের কলেজ পায়নি তাদের চিন্তার কিছু নেই। প্রথম মাইগ্রেশনের ফলে তাদের কেউ কেউ পছন্দের কলেজ পাবে। আর শিক্ষার্থীরা দ্বিতীয় দফায় পছন্দের সংখ্যা বাড়াতে হবে। তারা যদি ১০টা কলেজ পছন্দ করে, তাহলে কলেজ পেতে কোনো সমস্যা হবে না। পর্যাপ্ত আসন রয়েছে, সবাই ভর্তি হতে পারবে।

যারা কলেজ পায়নি তাদের ওয়েবসাইটে ঢুকে ফি ছাড়াই পছন্দ বাড়ানোর সুযোগ রয়েছে। প্রথম পর্যায়ে নির্বাচিতদের নিশ্চিত করতে হবে ২৬ আগস্ট থেকে ৩০ আগস্ট পর্যন্ত। নিশ্চিত না করলে আবেদন বাতিল হয়ে যাবে। দ্বিতীয় পর্যায়ের আবেদন গ্রহণ শুরু হবে ৩১ আগস্ট থেকে ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত।

এবারো ঢাকা বোর্ডের অধীনে বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) সহায়তায় এই ভর্তির কাজটি হচ্ছে। দ্বিতীয় পর্যায়ের আবেদন নেয়া হবে ৩১ আগস্ট থেকে ২ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। আর তৃতীয় পর্যায়ের আবেদন নেয়া হবে ৭ ও ৮ সেপ্টেম্বর। এরপর ভর্তির নিশ্চয়তা, মাইগ্রেশনের কাজ শেষে আগামী ১৩ থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর ভর্তির কাজটি করা হবে।

জানা গেছে, শিক্ষার্থীদের এসএমএসে ফল জানানো হচ্ছে। একইসাথে একটি সিকিউরিটি কোড পাঠানো হবে। এ কোডটি ভর্তি নিশ্চিতের জন্য সংগ্রহ করতে হবে। প্রথম দফা নির্বাচিত শিক্ষার্থীদের ভর্তির জন্য ৩০ আগস্ট রাত ৮টার মধ্যে নিশ্চিত করতে হবে। নিশ্চিত না করলে প্রথম পর্যায়ের আবেদন বাতিল হবে।

দ্বিতীয় পর্যায়ে আবেদন করা যাবে ৩১ আগস্ট থেকে ২ সেপ্টেম্বর রাত ৮টা পর্যন্ত। পছন্দক্রম অনুসারে প্রথম মাইগ্রেশনের ফল প্রকাশ করা হবে ৪ সেপ্টেম্বর রাত ৮টায়। আর দ্বিতীয় পর্যায়ের ফল প্রকাশ করা হবে একই দিন রাত ৮টায়ই। দ্

বিতীয় পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের নিশ্চিতে ৫ থেকে ৬ সেপ্টেম্বর বিকাল ৫টা পর্যন্ত চলবে। তৃতীয় পর্যায়ের আবেদন করা যাবে ৭ ও ৮ সেপ্টেম্বর। পছন্দক্রম অনুযায়ী দ্বিতীয় মাইগ্রেশন এবং তৃতীয় পর্যায়ের আবেদনের ফল প্রকাশ করা হবে ১০ সেপ্টেম্বর রাত ৮টায়।

এই পর্যায়ের নিশ্চয়তা করতে হবে ১১ থেকে ১২ সেপ্টেম্বর রাত ৮টা পর্যন্ত। আর কলেজভিত্তিক চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হবে ১৩ সেপ্টেম্বর সকাল ৮টায়। ভর্তি চলবে ১৩ থেকে ১৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত। এর আগে গত ৯ আগস্ট সকাল ৭টা থেকে ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে অনলাইন ভর্তির কার্যক্রম শুরু হয়।

২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষে একাদশ শ্রেণিতে প্রথমপর্যায়ে ১৫২টি কলেজে কোনো আবেদনই করেনি শিক্ষার্থীরা। প্রথমপর্যায়ে সাধারণ ৯ শিক্ষা বোর্ড ও মাদ্রাসা বোর্ডে ভর্তি আবেদন করেছিল ১৩ লাখ ৪২ হাজার ৭১৩ জন। এবারের এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় পাস করেছে ১৬ লাখ ৯০ হাজার ৫২৩ জন শিক্ষার্থী।

আমারসংবাদ/এসটিএম