Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪,

সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প রুখছে কে-ফোর্স

আসাদুজ্জামান আজম

অক্টোবর ২৮, ২০২০, ১০:৫৬ এএম


সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প রুখছে কে-ফোর্স

তথ্য প্রযুক্তির বদৌলতে পাল্টে গেছে গোটা জনজীবন। ইন্টারনেট ছাড়া এক মুহূর্তেই যেনো থমকে যাবে সবকিছু। বৈশ্বিক মহামারি করোনা ভাইরাস সংকটে গোটা বিশ্ব সচল রেখেছে প্রযুক্তি।

প্রযুক্তির যেমন সুফল আছে, তেমনি আছে অপব্যবহার। মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে অর্জিত বাংলাদেশ এখন প্রতিনিয়ত শিকার হচ্ছে অপপ্রচারের। মুক্তিযুদ্ধের চেতনার অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণে বাংলাদেশ সরকার রুখে দিচ্ছে অপপ্রচার।

মাঠের রাজনীতিতে ব্যর্থ হয়ে ভার্চুয়াল মাধ্যমে সাম্প্রদায়িক বিষবাষ্প ছড়াচ্ছে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তি। দেশবিরোধী গুজব সন্ত্রাসের কারণে দেশজুড়ে অসন্তোষ সৃষ্টি হয়। গত ৭ বছর ধরে বাংলাদেশবিরোধী এসব গুজব রোধে ভার্চুয়াল মাধ্যমে কাজ করছে কে-ফোর্স। আওয়ামী লীগের অনুসারী এক ঝাঁক যুব সম্প্রদায়ের সমন্বয়ে সংগঠনটি কাজ করছে। সংগঠনটির বেশ কয়েকজন সদস্য আলাপকালে এমনটাই জানান।

তারা জানান, ২০১২ সালে যখন বাংলাদেশ সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করলো, তখন বিএনপি-জামায়াতের অনুসারীরা অনলাইনে অপপ্রচার চালিয়ে গোটা দেশে অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি করে।

মুক্তিযুদ্ধ এবং সরকারবিরোধী সেসব অপপ্রচারের জবাব দিতে অনলাইনে সক্রিয় থাকা কট্টরপন্থি আওয়ামী সমর্থকদের সঙ্গে যোগাযোগ করে বেশ কয়েকজন যুবক।

এরপর সবাই সম্মিলিতভাবে জাতির জনকের আদর্শকে বুকে ধারণ করে আওয়ামী লীগ সরকারের সব সাফল্যকে জনসাধারণের মাঝে তুলে ধরতে এবং স্বাধীনতাবিরোধী জোট বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের সকল প্রকার অনলাইন অপপ্রচার রুখতে তৈরি করা হয় অনলাইন গ্রুপ। ফেসবুক মেসেঞ্জারে কে-ফোর্সের একটি গ্রুপ রয়েছে।

ওই গ্রুপের সদস্য সংখ্যা কয়েক সহস্রাধিক। গঠন করা হয়েছে একটি নিয়ন্ত্রক সেল। বাংলাদেশবিরোধী কোনো গুজব পেলেই যেকোনো সদস্য গ্রুপে অবহিত করে এবং সেল কাউন্টার জবাব প্রস্তুত করে গ্রুপে দেয়। তুলে ধরা হয় ইতিহাসের সঠিক তথ্য। এরপর সেটিকে সবাই ফেসবুকসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ছড়িয়ে দেন।  সরকারবিরোধী অপপ্রচার রুখতে ইতোমধ্যে সক্ষমতা দেখিয়েছে কে-ফোর্স।

যুদ্ধাপরাধীর বিচার, কোটা আন্দোলন, শিক্ষার্থীদের নিরাপদ সড়ক আন্দোলন, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেন্দ্রিক অপপ্রচার রোধে সংগঠনটি সোচ্চার ছিলো। সংগঠনটির সদস্যরা প্রতিনিয়ত সরকারের উন্নয়ন চিত্র তুলে ধরার পাশাপাশি ইতিহাসের সত্যগুলো তুলে ধরছেন।

অপপ্রচার রোধ করতে গিয়ে জামায়াত-বিএনপির আক্রোশের শিকার হয়েছেন সংগঠনটির অনেক সদস্য। অনেকেই নিজ নিজ এলাকায় হয়েছেন নাজেহাল। অপপ্রচারকারী বিএনপি-জামায়াতের শীর্ষ গুজব ছড়ানো পেজের (বাঁশেরকেল্লা) বিরুদ্ধে ফেসবুক কর্তৃপক্ষের কাছে সমন্বিত অভিযোগ জানিয়ে কয়েকবার ডিজেবল করে সংগঠনটির সদস্যরা।

কে-ফোর্সের মেন্টর নাজমুস সাকিব বলেন, শিক্ষিত যুবসমাজকে ঐক্যবদ্ধ করে নতুন প্রজন্মকে সঠিক তথ্য জানাতে অনলাইনে সক্রিয় ভূমিকা রাখছে কে-ফোর্স। আমাদের প্রত্যেকটি সহযোদ্ধা মুক্তিযুদ্ধ ও বঙ্গবন্ধুর প্রশ্নে আপসহীন। মুক্তিযুদ্ধ ও সরকারবিরোধী গুজব, সঠিক তথ্য তুলে ধরে প্রতিহত করাই আমাদের কাজ।

কে-ফোর্স কেন : সংগঠনটির সদস্যরা জানান, ২০১২ সালে যখন বাংলাদেশ সরকার যুদ্ধাপরাধীদের বিচার শুরু করলো তখন বিএনপি-জামায়াতের অপপ্রচারের জবাব দিতে অনলাইনে সক্রিয় থাকা কট্টরপন্থি আওয়ামী সমর্থকদের নিয়ে যাত্রা শুরু হয়।

সারা দেশে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও তার পরিবারের সদস্যদের নিয়ে যে পরিমাণে ভুঁইফোড় সংগঠনের জন্ম হয়েছে আর তাদের যে লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য তা আমাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যের সম্পূর্ণ বিপরীত মেরুতে অবস্থান করে।

আর তাই আমরা বঙ্গবন্ধু বা তার পরিবারের কোনো সদস্যের নাম নিয়ে কোনো সংগঠন করবো না। আমাদের যে চিন্তা ধারা এবং লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য সেক্টর কমান্ডার খালেদ মোশাররফের সমস্ত জীবনের কার্যক্রম তার সাথে হুবহু মিলে যায় আর এই কারণেই আমরা সিদ্ধান্ত নেই এই মহাবীর, দেশপ্রেমী, নীতিবান লোকের নিজ হাতে তৈরি করা মুক্তিযুদ্ধকালীন একটি গ্রুপের নামেই কে-ফোর্স নামকরণ করা হয়।

আমারসংবাদ/এআই