Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪,

আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের কাজ শুরু আগস্টে

তবিবুর রহমান ॥ প্রিন্ট সংস্করণ

জুলাই ২, ২০১৭, ১০:৪২ এএম


আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের কাজ শুরু আগস্টে

আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে ভোটের মাঠ গোছাচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। এই লক্ষ্যে চলতি বছরের আগস্ট মাস থেকে সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণের কাজ শুরু করতে যাচ্ছে সংস্থাটি। এজন্য ইতোমধ্যে আইন-বিধি আলোচন পর্যলোচনা করে রূপরেখা তৈরির কাজ করছে নির্বাচন আয়োজনকারী সংস্থাটি। আগস্ট থেকে সীমানা পুনর্র্নির্ধারণের প্রক্রিয়া শুরু করে আগামী বছরের এপ্রিলের মধ্যে তা গেজেট আকারে প্রকাশ করা যাবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানাগেছে। সংসদীয় আসনে জনসংখ্যার ভারসাম্য, প্রশাসনিক সুবিধা এবং ভৌগোলিক অখ-তার বিষয় বিবেচনা করেই এসব সীমানায় পরিবর্তন আনা হবে। এ ক্ষেত্রে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে প্রায় ৫০টি সংসদীয় আসনের সীমানায় পরিবর্তন আনতে পারে কমিশন। অন্যদিকে পটুয়াখালী ও পিরোজপুর জেলার সংসদীয় আসন কমতে পারে বলে ধারণা করছে সংশ্লিষ্টরা। এছাড়া ভোটার সংখ্যার সমতা আনতে গেলে আরও কয়েকটি জেলার সংসদীয় আসনে পরিবর্তন আসতে পারে বলে ধারণা করছে ইসি। গত ২৩ মে ইসি একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের যে রোডম্যাপ চূড়ান্ত করেছে তাতে বলা হয়েছে, প্রশাসনিক অখ-তা বজায় এবং প্রতিটি সংসদীয় এলাকার জন্য ভোটারসংখ্যার যথাসম্ভব সমতা বিধানকল্পে নির্বাচনি এলাকা নির্ধারণের উদ্যোগ নেয়া হবে। ইসি প্রদত্ত রোডম্যাপে বলা হয়েছে, আগামী আগস্ট থেকে ২০১৮ সালের এপ্রিলের মধ্যে সীমানা পুনর্নির্ধারণের কাজ সম্পন্ন হবে। এ বিষয়ে আগের নীতিমালা পর্যালোচনা করে নতুন নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে। সুধীসমাজও দীর্ঘদিন ধরে নির্বাচনি এলাকার সীমানা নির্ধারণে জনসংখ্যার বদলে ভোটারসংখ্যাকে গুরুত্ব দেয়ার পক্ষে দাবি জানিয়ে আসছে। অভিযোগ রয়েছে, এর আগে ২০১৩ সালে সীমানা নির্ধারণের সময় অনেক আসনে জনসংখ্যার বিষয়টি আমলে নেয়া হয়নি। এব্যাপারে জানতে চাইলে নির্বাচন কমিশন সচিব মোহাম্মদ আবদুল্লাহ বলেন, জাতীয় সংসদের আসন এলাকাগুলোর ভোটারসংখ্যায় ব্যাপক তারতম্য রয়েছে। নির্বাচন কমিশন এবারের সীমানা পুনর্নির্ধারণে এ তারতম্য যত দূর সম্ভব কমিয়ে আনতে চায়। এ বিষয়ে সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এটিএম শামসুল হুদা বলেন, গ্রামাঞ্চলের মানুষ তাদের কর্মসংস্থানসহ নানা কারণে শহর এলাকায় চলে আসে। এ কারণে বড় শহরগুলোর জনসংখ্যা ও ভোটার ক্রমেই বাড়ছে। বিদ্যমান আইন অনুসারে, জনসংখ্যায় সমতা এনে সংসদীয় আসন এলাকার সীমানা পুনর্নির্ধারণ করতে গেলে বড় শহর এলাকায় আসনসংখ্যা বেড়ে যাবে। কমবে গ্রামাঞ্চলের আসন। কিন্তু উন্নয়নের স্বার্থে গ্রামাঞ্চলের আসন কমানো উচিত নয়। এ সমস্যার সমাধান করার জন্য সংসদের আসনসংখ্যা বাড়ানো দরকার। এ ক্ষেত্রে যতদূর সম্ভব ভোটারসংখ্যায় সমতা বিধান করে সীমানা পুনর্নির্ধারণ করাই উচিত। কোনো আসনে দুই লাখ ভোটার, আবার কোনো আসনে পাঁচ লাখের ওপরে ভোটার– এ অবস্থা কাম্য হতে পারে না। ইসির কর্মকর্তারা বলেছেন, আগস্ট থেকে সীমানা নির্ধারণের কাজ শুরু হবে। আগামী বছরের এপ্রিলের মধ্যে এ কাজ শেষ করবে ইসি। আগস্টের মধ্যে আগের নীতিমালা পর্যালোচনা করে একটি নীতিমালা প্রণয়ন করতে চায় ইসি। সেপ্টেম্বরে সীমানা নির্ধারণে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে আলোচনা করা এবং অক্টোবর-নভেম্বরে সীমানার খসড়া তৈরি করবে তারা। ২০১৮ সালের জানুয়ারিতে খসড়া প্রকাশ, ফেব্রুয়ারিতে দাবি-আপত্তি গ্রহণ এবং শুনানি শেষ হবে। এরপর এপ্রিলের মধ্যে সীমানার গেজেট প্রকাশ করা হবে। ইসির দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, সীমানা নির্ধারণ অধ্যাদেশ-১৯৭৬ অনুযায়ী প্রশাসনিক সুবিধা, ভৌগোলিক অখ-তা ও জনসংখ্যার ভিত্তিতে ৫০ আসনে ২০১৩ সালে পরিবর্তন করা হয়। পাশাপাশি ঢাকার সংসদীয় আসনের বেশিরভাগই ২০০৮ সালের সীমানা বহাল রাখা হয়েছিল।