Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৪,

উত্তরের কমিটি স্থগিতে সতর্ক দক্ষিণ আ.লীগ

নূরে আলম জীবন॥প্রিন্ট সংস্করণ

জুলাই ৯, ২০১৭, ০৬:৪২ এএম


উত্তরের কমিটি স্থগিতে সতর্ক দক্ষিণ আ.লীগ

সম্প্রতি ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সকল থানা ও ওয়ার্ড কমিটির পূর্ণাঙ্গ তালিকা প্রকাশ করার ২৪ ঘণ্টা অতিক্রম না হতেই দলের হাইকমান্ডের নির্দেশে স্থগিত হয়ে যায় সেই কমিটি। সূত্র বলছে, একাধিক অভিযোগের কারণে এ কমিটি স্থগিত করেন দলীয় প্রধান।

এদিকে, এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের অন্যতম শক্তিশালী ইউনিট ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগও সতর্ক অবস্থানে। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের থেকে প্রতিটি থানা ও ওয়ার্ড সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নিকট কমিটি পূর্ণাঙ্গ করার জন্য বাছাইকৃত তালিকা চাওয়া হয়েছে।

সেই তালিকা করার জন্য মহানগরের সমন্বয়ে থানাভিত্তিক পৃথক টিম করে দেওয়া হয়েছে। সেই টিম বাছাই করে সুপারিশ করবে। আর তাদের সুপারিশ বিবেচনা করবে মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের হাইকমান্ড। জানা যায়, বিগত সময়ে থানা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের স্বাক্ষরে সরাসরি ওয়ার্ড কমিটিগুলো দিতে পারলেও এবার তা আর হচ্ছে না।

এবার প্রতিটি কমিটি অনুমোদনে মহানগরের অনুমতি লাগবে। ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও ছাত্রলীগের সাবেক নেতা শাহে আলম মুরাদ দৈনিক আমার সংবাদকে বলেন, উত্তর আওয়ামী লীগের কমিটি গঠন নিয়ে যে ধরনের অভিযোগ উঠেছে আশা করি দক্ষিণ আওয়ামী লীগের থানা ও ওয়ার্ড কমিটির পূর্ণাঙ্গ করার ক্ষেত্রে তা হবে না। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, আমরা শুরুতেই থানা, ওয়ার্ড সভাপতি সাধারণ সম্পাদকদের চিঠি দিয়েছি। সেখানে উল্লেখ আছে কিভাবে, কাদের নিয়ে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করতে হবে।

শাহে আলম মুরাদ বলেন, অনুপ্রবেশকারী জামাত-বিএনপি ও মাদক ব্যবসায়ী এবং সন্ত্রাসীদের ঠেকাতে জীবন বৃত্তান্ত সংগ্রহ করা হয়েছে। যার আলোকে আওয়ামী লীগের ত্যাগী নেতাকর্মীদের মূল্যায়ন করা সম্ভব হবে বলে মনে করেন তিনি।

থানা সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক সরাসরি ওয়ার্ড কমিটি দিতে না পারার বিষয়ে মুরাদ বলেন, বিগত দিনে নানা অভিযোগ ছিল যে, সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক মিলে তাদের স্বজনদের কমিটিতে ঠাঁই দিয়েছে, আর্থিক লেনদেনেরও অভিযোগসহ ভিন্নমনাদের কমিটিতে স্থান দেওয়ার অভিযোগের প্রেক্ষিতেই এবার এ পদক্ষেপ।

শাহে আলম মুরাদ আরও বলেন, দ্রুতই আমাদের কমিটি দেওয়া হবে। জানা যায়, থানা ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি-সাধারণ সম্পাদক যাচাই-বাছাই করে নগর আওয়ামী লীগের কাছে তালিকা পাঠিয়েছে। এখন সে তালিকা আবার যাচাই-বাছাই করবে মহানগর। তার পরই দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সকল থানা ও ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হবে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগের সহ-দপ্তর সম্পাদক মিরাজ হোসেন দৈনিক আমার সংবাদকে বলেন, আমাদের যে কমিটি ঘোষণা হবে, তা নিয়ে কোনো ধরনের বিতর্ক হবে না। প্রতিটি থানা, ওয়ার্ড কমিটিতে আওয়ামী লীগের ত্যাগীদের মূল্যায়ন করা হবে। মিরাজ হোসেন বলেন, অনুপ্রবেশকারীদের বিষয়ে আমরা কঠোরভাবে যাচাই-বাছাই করছি। যাদের বিরুদ্ধে অভিযোগ পাওয়া যাবে, অবশ্যই প্রমাণস্বাপেক্ষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, কোনো ধরনের অনিয়ম মহানগর দক্ষিণ আওয়ামী লীগ সহ্য করনে না।

উল্লেখ্য, মহানগরর উত্তর আওয়ামী লীগের প্রতিটি থানা, ওয়ার্ড ও ইউনিয়নের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা হলেও একদিনের মাথায় ঘোষিত কমিটি স্থগিত করে দিয়েছেন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনা। সূত্রটি জানায়, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি এ কে এম রহমত উল্লাহ এবং সাধারণ সম্পাদক সাদেক খান নিজের পছন্দমতো লোকদের কমিটিতে ঠাঁই দিয়েছেলেন বলে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা শেখ হাসিনার কাছে অভিযোগ জানানোর প্রেক্ষিতে তিনি কমিটি স্থগিতের নির্দেশ দেন।

কমিটি গঠনের ক্ষেত্রে থানা আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের পরামর্শ নেয়ার কথা থাকলেও স্থগিত হওয়া কমিটির ক্ষেত্রে সেটি করা হয়নি। এমনকি ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সমন্বয়ক হিসাবে দায়িত্ব পালন করা দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য লে. কর্নেল (অব.) ফারুক খানকেও এসব বিষয়ে কিছুই জানানো হয়নি।