Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪,

এখনও ভিসা পাননি ৭০ হাজার হজযাত্রী

তবিবুর রহমান॥প্রিন্ট সংস্করণ

আগস্ট ৬, ২০১৭, ০৫:৫৮ এএম


এখনও ভিসা পাননি  ৭০ হাজার হজযাত্রী

এ বছর ১ লাখ ২৮ হাজার হজযাত্রী মক্কায় যাওয়ার জন্য আবেদন করলেও বাড়তি ভাড়া, ই-ভিসাসংক্রান্ত জটিলতাসহ নানা কারণে প্রায় ৭০ হাজার হজযাত্রী এখনও ভিসাই পাননি। ভিসা জটিলতার সমাধান না হলে ৭০ হাজার হজযাত্রী মক্কায় যেতে পারবে না।

এছাড়া একের পর এক হজ ফ্লাইট বাতিল, কখনও স্থগিত, কখনও ফ্লাইটের সময়সূচি নিয়ে টালমাটাল বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও ধর্ম মন্ত্রণালয়। এনিয়ে দ্বন্দ্বও সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল শনিবার তিনটি হজ ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। এনিয়ে ২০টি হজ ফ্লাইট বাতিল করা হলো। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, হজযাত্রীদের জন্য মোয়াল্লেম ফি বৃদ্ধি, মোয়াল্লেমের চুক্তি, বাড়িভাড়া, হজযাত্রীর ভিসা ইস্যু ও ভিসাপ্রাপ্ত হজযাত্রীদের বিমানের টিকিট সংগ্রহ না করায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে।

এর জন্য ধর্মমন্ত্রী দায়ী করছেন হজ এজেন্সি মালিকদের। অন্যদিকে এজেন্সিগুলো দায়ী করছেন হঠাৎ মোয়াল্লেম ফি বৃদ্ধিকে। অবশ্য একটি পক্ষ ধর্ম মন্ত্রণালয় ও মক্কার বাংলাদেশ হজ মিশনের কিছু কর্মকর্তার গাফিলতিকে এমন অবস্থার জন্য দায়ী করছেন। এব্যাপারে জানতে চাইলে বাংলাদেশ হজযাত্রী কল্যাণ পরিষদের সভাপতি ড. আব্দুল্লাহ আল নাসের বলেন, এই অল্পসংখ্যক এজেন্সি এত হজযাত্রী ম্যানেজ করতে পারছে না।

এছাড়া ভাড়া বৃদ্ধি ও ই-ভিসাসংক্রান্ত জটিলতার কারণে ভিসা পেতেও দেরি হচ্ছে। আর বিমানের দুর্নীতি অব্যবস্থাপনার কারণেই বারবার হজ ফ্লাইট বাতিল হচ্ছে। ঢাকার আশকোনায় হজক্যাম্প থেকে দিনে কয়েকবার ‘লাব্বায়েক’ ধ্বনি দিতে দিতে বিমানবন্দরের উদ্দেশ্যে যাচ্ছেন হজযাত্রীদের একেকটি দল।

তবে অনেকের অপেক্ষা শেষ হচ্ছে না। কারণ গত কয়েক দিনেই অসংখ্য হজযাত্রী ভিসা না পেয়ে এখনও যেতে পারেননি বা বিলম্বে যাত্রা করছেন। এর সাথে যোগ হয়েছে যারা গত দুবছরে হজ করেছেন তাদের ওপর সৌদি সরকারের অতিরিক্ত ২০০০ রিয়াল কর আরোপ। এক সপ্তাহ যাবত হজক্যাম্পে আবস্থাকারী শেখ নাজমুল হুদা জানান, ২০১৫ সালে একবার হজ করে আসা মি. হুদা এজেন্সিকে অতিরিক্ত দুই হাজার রিয়াল দিয়েছেন দুবার। কিন্তু ভিসা এখনও পাননি।

অন্যদিকে টাঙ্গাইল থেকে আসা হজযাত্রী আব্দুল হোসেন বলেন, বিমানের অদক্ষতা ও অব্যবস্থাপনার কারণেই এমনটা হয়েছে। নয়তো ভিসা জটিলতা হওয়ার কথা শুধু যারা দ্বিতীয় বা তার বেশিবার হজে যাচ্ছেন তাদের। সেই সংখ্যা মোট হজযাত্রীর চার ভাগের একভাগও না। কিন্তু সবাইকে ভুগতে হচ্ছে। এ অব্যবস্থাপনা এবং যাত্রীদের এই দুর্ভোগের কোনো দায় নিতে নারাজ হজ এজেন্সিগুলোর সংগঠন হাব। এব্যাপারে জানতে চাইলে সংগঠনটির মহাসচিব শাহাদাত হোসাইন তসলিম এর পুরো দায়টি চাপাচ্ছেন সৌদি আরবের ওপর। তাদের দাবি সেখান থেকে ভিসা সময়মত না আসায় এবং দেরিতে তাদের কর আরোপের কারণে এ জটিলতা হচ্ছে। অতিরিক্ত দুই হাজার রিয়াল এবং ভিসা প্রিন্টিংয়ের সমস্যা থাকবেই।

এই দুর্ভোগ যাত্রীর, দুর্ভোগ হজ এজেন্সিগুলোরও, বলেন মি. তসলিম। প্রতি বছরের ঘটনা হিসেবে হজ ফ্লাইট বাতিলকে হাব স্বাভাবিকভাবে দেখলেও, প্রতি বছর এমন দুর্ভোগ কেন হবে তার কোনও সদুত্তর নেই হাবের কাছে। এব্যাপারে বেসামরিক বিমান চলাচলমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বলছেন, সৌদি সরকারের হজের জন্য ই-ভিসা চালুর পর বাংলাদেশ ছাড়া অন্য কোনও দেশে এমন সংকট তৈরি হয়েছে বলে জানা যায়নি।
বিশ্বকবির প্রয়াণ