Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪,

পশু সংকটের শঙ্কা নেই কোরবানিতে

জাহিদুল ইসলাম শিহাব॥প্রিন্ট সংস্করণ

আগস্ট ৮, ২০১৭, ০৫:৪৯ এএম


পশু সংকটের শঙ্কা নেই কোরবানিতে

আর মাত্র কয়েক দিন পর কোরবানির ঈদ। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে বসবে গবাদিপশুর হাট। নানারকম পশু কিনতে ভিড় করবেন ক্রেতারা। তবে ঈদের বাজারে কোনও সংকট হবে না কোরবানির পশুর এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। কেননা প্রান্তিকপর্যায়ের খামারিরা কোরাবানির ঈদকে ঘিরে স্বপ্ন বুনছে। খামারিরা সেভাবেই প্রস্তুত করেছেন কোরবানির পশুকে।

রাজধানীর গবাদিপশু ব্যবসায়ীদের অনেকেই জানান, দেশে যেসব পশু আছে তা দিয়েই আমাদের কোরবানির চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। ভারত ও মিয়ানমার থেকে আমদানির প্রয়োজন হবে না। আবার অনেকে মনে করেন দেশে কোরবানিতে পশুর সংকট হবে। যদি ভারত থেকে গরু আসে তাহলে সংকট হবে না।

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের হিসাবে সারা দেশের ৫ লাখের বেশি খামারি এবার জোগান দেবে প্রয়োজনীয় কোরবানির পশুর। এবার কোরবানির জন্য এক কোটি ১৫ লাখ গবাদিপশু প্রস্তুত আছে। তাই ভারত বা মিয়ানমারের গরুর ওপর নির্ভর করতে হচ্ছে না। পশুর জোগানে এখন স্বয়ংসম্পূর্ণ বাংলাদেশ। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মতে, দেশের কোরবানির চাহিদা পূরণে পশুর জোগান দিতে বাইরের কোনো দেশের ওপর নির্ভর করতে হবে না। জানা গেছে গতবছর এবারের চেয়ে গবাদিপশু কম ছিল ১০ লাখ।

ইতোমধ্যে কোরবানির ঈদ উপলক্ষে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় চালানো হচ্ছে হাটের প্রস্তুতি ও প্রচারণা। জমজমাট বিশাল পশুর হাটের আয়োজন করতে চায় প্রত্যেক হাট ইজারাদার। ঈদের বেশকদিন আগে শুরু হবে পশুর হাট। তবে জমজমাট হবে ঈদের পাঁচ থেকে সাত দিন আগে।

গত বছর দেশে গবাদিপশু কোরবানি হয়েছিল ১ কোটি ৫ লাখ। সে তুলনায় এবার খামারিদের মজুদ আছে ১ কোটি ১৫ লাখ ৫৭ হাজার। এরমধ্যে কোরবানিযোগ্য হৃষ্টপুষ্ট ও লাভজনক গরু-মহিষ রয়েছে ৩৩ লাখ ৩০ হাজার এবং বৃদ্ধ বাতিল অনুৎপাদনশীল ও অলাভজনক গরু মহিষ রয়েছে ১১ লাখ ২৭ হাজার। এছাড়া প্রাপ্ত ছাগল-ভেড়া রয়েছে ২৮ লাখ ৩০ হাজার এবং বৃদ্ধ বাতিল
অনুৎপাদনশীল ছাগল-ভেড়া রয়েছে ৪২ লাখ ৭০ হাজার। দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের খামারিরা ইতোমধ্যেই শেষ মুহূর্তের যত্ন করছেন গবাদিপশুর।

জানা গেছে, গত বছর কোরবানির জন্য প্রস্তুত ছিল ১ কোটি ৫ লাখ ৫৪ হাজার পশু (গরু, মহিষ, ছাগল, ভেড়াসহ)। গত এক বছরে উৎপাদন বাড়ানো হয়েছে ১০ লাখেরও বেশি। ধারণা করা হচ্ছে এবছর কোরবানি হতে পারে এক কোটি পশু। প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ডা. মো. আ. রশিদ আমার সংবাদকে জানান, আমাদের দেশে পুষ্টি চাহিদা পূরণের জন্য খামারিরা গবাদিপশু পালনে উৎসাহিত হচ্ছে। ফলে দেশের কোরবানি চাহিদা পূরণ করেও সারা বছর মাংসের চাহিদা পূরণ সম্ভব হচ্ছে।

এ অবস্থায় ভারত ও মিয়ানমার থেকে গরু আমদানির কোনো প্রয়োজন নেই। যদি ভারত ও মিয়ারমার থেকে গরু আমদানি করা হয় তাহলে আমাদের দেশের খামারিরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তারা পশু পালনে উৎসাহ হারিয়ে ফেলবে। এতে দেশের কৃষি অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হবে। এ বিষয়ে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ডা. মো. আইনুল হক আমার সংবাদকে বলেন, বিগত বছরের গরুর যে মজুদ রয়েছে তা কোরবানি চাহিদা পূরণ করা সম্ভব। আশা করি ভারত ও মিয়ানমার থেকে গরু আমদানির প্রয়োজন হবে না। গত বছরের তুলনা এবছর ১০ লাখ পশু বেশি আছে। কোনো সংকট হবে না।

গাবতলীর গবাদিপশু ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি মজিবুর রহমান বলেন, এবার দেশে কোরবানি পশুর কোনো সংকট হবে না। যদি ভারত বা মিয়ারমার থেকে গরু আমদানি হয় তাহালে দেশের গরু ব্যবসায়ীরা ক্ষতিগ্রস্ত হবে। গাবতলী গরুরহাট পরিচালক সানোয়ার হোসেন বলেন, দেশে যে পরিমাণ গরু রয়েছে এতে কোরবানির সংকট হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে ভারত বা মিয়ানমার থেকে গরু আমদানি হলে সংকট থাকবে না। দাম বাড়ারও সম্ভাবনা নেই।