Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

পূবালী ব্যাংক মতিঝিল শাখায় এলসি অনিয়ম

আব্দুল লতিফ রানা॥প্রিন্ট সংস্করণ

আগস্ট ৯, ২০১৭, ০৬:০৩ এএম


পূবালী ব্যাংক মতিঝিল শাখায় এলসি অনিয়ম

‘পূবালী ব্যাংক মতিঝিল শাখায় এলসি অনিয়ম, ১৩ বছর ধরে পথে পথে ঘুরছেন এক ব্যবসায়ী’ শিরোনামে দৈনিক আমার সংবাদের প্রতিবেদনের পর অর্থ মন্ত্রণালয় থেকে বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে পত্র প্রেরণ করা হয়েছে। জানা গেছে, পূবালী ব্যাংক মতিঝিল শাখার কতিপয় কর্মকর্তা-কর্মচারীর অনিয়মের কারণে পথে বসেছেন চৌধুরী এন্টারপ্রাইজ কোম্পানির মালিক মো. মিজানুর রহমান।

এ ঘটনায় বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষ তদন্তপূর্বক উক্ত ব্যবসায়ীকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার নির্দেশনা দেওয়ার পরও ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়নি। বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্দেশে সিআইডি পুলিশের ইকোনমিক ক্রাইম স্কোয়াডের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার মো. মাহবুবুল আলম পুনর্তদন্ত করে পূবালী ব্যাংকের অনিয়মের সত্যতা পায়। এরপর ব্যাংকের দায়ী কর্মকর্তা-কর্মচারীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সুপারিশ করা হয়। ভুক্তভোগীর এক আবেদনের পর গত ১৬ জুলাই অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের উপ-সচিব মো. রিজওয়ানুল হুদা স্বাক্ষরিত বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের কাছে এক পত্র প্রেরণ করা হয়েছে।

যার স্মারক নং- ৫৩,০০,০০০০.৩১১.৯৯.০০৯.১৭-৪৩৪। উক্ত পত্রের সূত্রে জানা যায়, মো. মিজানুর রহমান চৌধুরী এন্টারপ্রাইজের আবেদনের প্রেক্ষিতে বিধি মোতাবেক প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের উল্লিখিত বিভাগকে অবহিত করার জন্য বলা হয়েছে। ভুক্তভোগী চৌধুরী এন্টারপ্রাইজের মালিক মিজানুর রহমান মেডিকেল ইকুইপমেন্ট আমদানির জন্য সেনাকল্যাণ ভবনস্থ পূবালী ব্যাংক মতিঝিল শাখায় ২ হাজার ৯৮০ ডলারের একটি এলসি খোলেন। কিন্তু এলসির বিপরীতে বিএল ত্রুটিপূর্ণ হওয়ায় মেডিকেল ইকুইপমেন্ট বা চিকিৎসা-যন্ত্রপাতি বন্দরে না আসার পরও পূবালী ব্যাংকের তৎকালীন কর্তৃপক্ষ বিল পরিশোধ করেন। এ ঘটনার পর চৌধুরী এন্টারপ্রাইজের মালিক মো. মিজানুর রহমান চৌধুরী বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কাছে লিখিত অভিযোগ করেন।

এরপর বাংলাদেশ ব্যাংকের দৈশিক মুদ্রীতি বিভাগের (লিগ্যাল কমপ্লেয়ান্স অ্যান্ড এনফোর্সমেন্ট শাখা) উপ-পরিচালক ফারগানা আক্তার স্বাক্ষরিত এক প্রতিবেদনে গত ২০১৫ সালের ১২ মার্চ পূবালী ব্যাংক কর্তৃপক্ষের কাছে এক পত্রে মতিঝিল শাখার গ্রাহক মেসার্স চৌধুরী এন্টারপ্রাইজের অনুকূলে ইস্যুকৃত এলসির বিপরীতে ত্রুটিপূর্ণ দলিলপত্র এবং বিল অব এন্ট্রি না পেয়েই মূল্য পরিশোধ করায় পূবালী ব্যাংক, বাংলাদেশ ব্যাংকের বৈদেশিক মুদ্রানীতির ২০০৯ ভলিয়ূম ১-এর ২৬ নম্বর চেপ্টারের নির্দেশনা লঙ্ঘন করা হয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়। আর ডিজলাইন ডিউ ডিলাইন্সজ পরিচালন ব্যতীত ভুয়া জাহাজি দলিল (বিল অব লেডিং)-এর বিপরীতে মূল্য ছাড়করণ করায় আলোচ্য অনিয়ম হয়েছে মর্মে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

অপরদিকে বিল অব এন্ট্রি দাখিল না করা এবং ত্রুটিপূর্ণ আমদানি দলিল অ্যাক্সেপ্টকরণ ইত্যাদি আমদানিকারক মেসার্স চৌধুরী এন্টারপ্রাইজ কর্তৃক সংঘটিত অপরাধ। এ প্রেক্ষিতে আমদানিকারকের আর্থিক ক্ষতি পূরণের দাবির বিষয়টি পারস্পরিক সমঝোতার মাধ্যমে নিষ্পত্তি করার জন্য ২০১৫ সালের ১৫ এপ্রিল সময় দেওয়া হয়। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেই বিষয়টি সমাধান করা হয়নি।

উল্লেখ্য, গত ২৭ ফেব্রুয়ারি দৈনিক আমার সংবাদে ‘পূবালী ব্যাংক মতিঝিল শাখায় এলসি অনিয়ম, ১৩ বছর ধরে পথে পথে ঘুরছেন এক ব্যবসায়ী’ শিরোনামে প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়।