Amar Sangbad
ঢাকা বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল, ২০২৪,

অনলাইন ব্যাংকিংয়ের নামে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের প্রতারণা

আব্দুল লতিফ রানা॥প্রিন্ট সংস্করণ

সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৭, ০৫:২৩ এএম


অনলাইন ব্যাংকিংয়ের নামে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের প্রতারণা

মুখ থুবড়ে পড়েছে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক। এই ব্যাংকের কোন শাখার কার্যক্রম নেই। ২০১৪ সালে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংক কার্যক্রম শুরু হয়। কিন্তু এখনও একটি শাখার কার্যক্রম শুরু করা হয়নি। আবার ৪৮৫টি শাখার অনলাইন কার্যক্রম কাগজে কলমে চালুর কথা বলা হলেও একটি শাখায়ও ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু হয়নি। এমনকি অন-লাইনের কোর ব্যাংকিং সফটওয়ার তৈরির চুক্তিটি পর্যন্ত সম্পন্ন করা হয়নি বলেও জানা গেছে।

গত ২৪ আগস্ট অর্থমন্ত্রীকে দিয়ে অনলাইন কার্যক্রম উদ্বোধন করানো হলেও মূলত বাংলাদেশের কোথাও ৪৮৫টি শাখার ১টিতেও অনলাইন কার্যক্রম শুরু করা হয়নি। গত ৩ বছরে গাড়ির জ্বালানি, বোর্ড সদস্যদের ভাতা ও অন্যান্য ব্যাংকের তহবিল থেকে কোটি কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের সঞ্চয়ী উক্ত ব্যাংকের মূলধন। একনেকের সিদ্ধান্ত মোতাবেক সুদবিহীন ঋণ দেওয়ার কথা।

কিন্তু বর্তমান পরিচালনা কর্তৃপক্ষ ১০ শতাংশ সুদ আরোপের সিদ্ধান্ত নিয়েছে বলে জানা গেছে। এই সুদ আদায় কার্যক্রম শুরু হলে প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন ভেস্তে যাবে এবং প্রধানমন্ত্রী কর্তৃক অনুমোদিত ক্ষুদ্র সঞ্চয় ব্যাংকের মডেলটি অকার্যকর হয়ে পড়বে বলে সংশ্লিষ্টরা আশঙ্কা করছেন। উক্ত ব্যাংকের চেয়ারম্যান ড. মেহের কান্তি মজুমদার প্রকল্প ও ব্যাংক পরিচালনা নিয়ে হিমসিম খাচ্ছেন। ইতোমধ্যে তিনি প্রকল্পের সরকার প্রদত্ত বোনাস বা অর্থ হত-দরিদ্র সমবায়ীদের কাছ থেকে ফেরত আনার চেষ্টা চালাচ্ছে।

উল্লেখ্য যে, উক্ত প্রকল্পে ২২ লাখ পরিবার জড়িত। সমবায়ীদের স্বাবলম্বী করতে প্রধানমন্ত্রী উক্ত প্রকল্পের অফেরৎযোগ্য প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দিয়েছেন। অথচ ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু না হওয়ায় মোট ৮ হাজার কোটি টাকা অলসভাবে পড়ে আছে। শুধু মাত্র ব্যাংকিং কার্যক্রম চালু না হওয়ায় ১০ শতাংশ হারে সুদ আরোপ করায় ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র সঞ্চয়ীরা তাদের জমাকৃত টাকা ফেরৎ নেওয়ার জন্য চাচ্ছেন। এমনটি যদি হয়, তাহলে প্রধানমন্ত্রীর স্বপ্ন প্রসূত একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্প ও পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের মুখ থুবড়ে পড়বে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

সাতক্ষীরা এলাকার ভুক্তভোগী ও মাঠকর্মী আবু বকর আমার সংবাদকে জানান, ব্যাংকের কার্যক্রমই শুরু করা হয়নি। আবার অন-লাইন ব্যাংকিং ব্যবস্থা ! এটা প্রতারণা ছাড়া আর কিছুই নয়। তিনি জানান, এই অন-লাইন ব্যাংকিং ব্যবস্থার জন্য ‘ইরা ইনফো টেক’ নামক একটি কোম্পানি সফটওয়ারের জন্য কাজ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত তাদেরকে ওয়ার্ক ওয়ার্ডারই দেওয়া হয়নি। অথচ এই সফটওয়ার প্রস্তুত করতে অনেক সময় লাগে। গত মাসের ১০ তারিখে ব্যাংকের কার্যক্রম শুরু করার কথাছিল। কিন্তু মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে গত ২৫ আগস্ট তা অর্থমন্ত্রীকে উদ্বোধন করানো হয়েছে। গত বিষয়টি ভুক্তভোগী সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।

এ ব্যাপারে পল্লী সঞ্চয় ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. আকবর হোসেন খান-এর সেল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোনে এসব কথা বলা যাবে না বলে জানিয়ে তার কার্যালয়ে যাওয়ার জন্য প্রতিবেদককে বলেন।