Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

প্রার্থী তালিকা প্রস্তুত, সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধানমন্ত্রী

প্রিন্ট সংস্করণ॥মো. রফিকুল ইসলাম

ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৯, ০৬:৩৩ পিএম


প্রার্থী তালিকা প্রস্তুত, সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধানমন্ত্রী

আর মাত্র ১৯ দিন পর অনুষ্ঠিত হবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ নির্বাচন (ডাকসু)। দীর্ঘ ২৮ বছর পর অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া এ নির্বাচনের সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকা চূড়ান্ত করেছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগসহ দলটির ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ। কেন্দ্রীয় নির্দেশনা মেনেই সংগঠনটির দায়িত্বপাপ্ত নেতারা ভিপি ও জিএস পদে সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা তৈরির কাজ করেছেন। ওই তালিকা থেকে প্রার্থী নির্ধারণে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে ওই প্রার্থী তালিকার বাইরেও অপেক্ষাকৃত যোগ্য ও জনপ্রিয় কেউ থাকলেও তাদেরও প্রার্থী হিসেবে দেখা যেতে পারে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্র নিশ্চিত করেছে। আ.লীগ সূত্রে জানা যায়, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে ছাত্রলীগের প্যানেল তৈরি করাসহ নির্বাচন পরিচালনার জন্য কেন্দ্রের চারজন নেতাকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুধু দায়িত্ব দেননি, একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের মতোই ডাকসু নির্বাচনে নিরষ্কুশ বিজয় নিশ্চিত করার জন্য ওই নোতাদের সাথে একাধিক বৈঠকও করেন তিনি। দলীয় সভানেত্রীর নির্দেশনা পেয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের সভাপতি-সম্পাদকসহ ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাদের সাথে কয়েক দফা বৈঠক করেন নির্বাচনে বিশেষ দায়িত্বপ্রাপ্ত ওই নেতারা। এরপর দলীয় সম্ভাব্য প্রার্থীর তালিকা তৈরির জন্য ছাত্রলীগের নেতাদের নির্দেশ দেন তারা। সেই নির্দেশনা মেতাবেক সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা তৈরি করেছে ছাত্রলীগ। সম্ভাব্য ওই তালিকা কেন্দ্রীয় নেতাদের হাতে তুলে দেয়া হতে পারে।ডাকসু নির্বাচনে দলীয় প্রতীকে যোগ্য প্রার্থী খুঁজছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দলটি হাই কমান্ড ছাত্রলীগের বর্তমান কমিটি দায়িত্বপ্রাপ্তদের ছাড়াও আরো ছয়-সাতজন নতুন শিক্ষার্থীর সম্পর্কে খোঁজখবর নিচ্ছেন। এ জন্য প্রতিনিয়ত বিভিন্ন মাধ্যমে বিশ^বিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসে খবর নেয়া হচ্ছে দলটির পক্ষে থেকে। এবার ২৫টি পদে ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ভিপি ও জিএস ছাত্রলীগ থেকে একক প্রার্থী দেয়া হবে। বাকিগুলোতে মুক্তিযোদ্ধের সপক্ষে কয়েকটি বামসংগঠন ও টিএসসিভিত্তিক সাংস্কৃতিক সংগঠনগুলোর সাথে ছাত্রলীগের প্যানেল হতে পারে। ওই সংগঠনগুলো পাঁচ-সাতটি পদ দিয়ে প্যানেলে রাখা হবে। ছাত্রদলের প্যালেন নিয়ে ছাত্রলীগ চিন্তিত না হলেও কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীদের প্যানেল নিয়ে কিছুটা চিন্তিত ক্ষমতাসীন দলের হাই কমান্ড। যত ভয় যেন কোটা আন্দোলনকারী প্যানেল ঘিরে। তাই তাদের সাথে ছাত্রলীগের প্যানেল হতে পারে বলে আ.লীগের একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। ছাত্রলীগ সূত্র মতে, ডাকসু নির্বাচনকে কেন্দ্র করে অনেকটাই বেকায়দায় আছে ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় রাজনীতির প্রথম সারির অন্তত অর্ধশত নেতা। নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা থাকলেও সাহস দেখাচ্ছে না ওই নেতারা। যার কারণে সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা আকারে অনেক ছোট। কারণ হিসেবে জানা যায়, আ.লীগের ছাত্র সংগঠন বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি-সম্পাদকের নাম ছয় মাস আগে প্রকাশ করা হলেও এখন পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করতে পারেনি সংগঠনটির দুই শীর্ষ নেতা। একই অবস্থা ঢাকা বিশ^বিদ্যালয় শাখারও। তারাও এখনো কমিটি পূর্ণাঙ্গ ঘোষণা করতে পারেননি। কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার পূর্ণাঙ্গ কমিটি না দিতে পারাই এ নেতাদের কপাল পুড়তে পারে ডাকসু নির্বাচনে। জনপ্রিয়তার দিক থেকে সব সাধারণ শিক্ষার্থীর কাছে এগিয়ে থাকলেও সাংগঠনিকভাবে পিছিয়ে আছেন তারা। যা নিয়ে দীর্ঘদিন ছাত্রলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে। ডাকসু নির্বাচনে প্রার্থী হলে কেন্দ্রীয় কমিটিতে কপাল পুড়তে পারে এমন শঙ্কা কাজ করছে তাদের ভেতরে। এমন শঙ্কা নিয়েই দিন-রাত ঘোষিত চার নেতার পিছু ছুটছেন।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসাইন আমার সংবাদকে বলেন, ডাকসু নির্বাচনে ছাত্রলীগের দলীয় প্রতীকের সম্ভাব্য প্রার্থী তালিকা চেয়েছে আওয়ামী লীগের হাই কমান্ড। সেই তালিকা আমরা তৈরি করেছি। এখন দল সিদ্ধান্ত নেবে। দল যাকে মনোনয়ন দেবে, আমরা সবাই তার জন্য কাজ করব। কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সভাপতি রেজওয়ানুল হক চৌধুরি শোভন আমার সংবাদকে বলেন, আওয়ামী লীগের হাই কমান্ডের নির্দেশ অনুযায়ী আমরা কাজ করছি। আমাদের টার্গেট নির্বাচনে জয়লাভ করা। দল যাকে মনোনয়ন দেবে, আমরা তার জন্য কাজ করব। দলীয় প্রার্থিতা নিয়ে দলের কোনো নেতার মধ্যে মতবিরোধ নেই। আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক বি এম মোজাম্মেল হক বলেন, দীর্ঘ ২৮ বছর পর ডাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। আমরা চাই এ নির্বাচনে ছাত্রলীগের প্রার্থী জয়লাভ করবে। তাই যোগ্য প্রার্থীকেই আমরা দলীয় মনোনয়ন দেবো। যারা ছাত্রলীগের রাজনীতিতে আছে এবং আগামীতে দায়িত্বে আসবে। তাদের মধ্য থেকেই প্রার্থী দেয়া হবে। আশা করি, ডাকসু নির্বাচনে খুব ভালো এবং সবার কাছে গ্রহণযোগ্য প্যানেল হবে। আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান আমার সংবাদকে বলেন, ডাকসু নির্বাচনে দলীয় প্রার্থী চূড়ান্ত করার জন্য আমরা ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের থেকে একটি শর্ট লিস্ট চেয়েছি। আশা করি, আজ-কালের মধ্যে আমরা সেই লিস্ট পেয়ে যাবো। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রাধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতীয় নির্বাচনের মতোই ডাকসু নির্বাচনে একজন যোগ্য প্রার্থী চান। ওই তালিকাতে যদি যোগ্য প্রার্থী না থাকে, তাহলে আমরা তালিকার বাইরে থেকেও দলীয় প্রার্থী দিতে পারি। তফসিল অনুযায়ী, এ নির্বাচনে অংশ নিতে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করতে হবে ১৯ থেকে ২৫ ফেব্রুয়ারির মধ্যে। মনোনয়নপত্র জমা ও যাচাই-বাছাই হবে ২৬ ফেব্রুয়ারি, পরদিন প্রকাশিত হবে যোগ্য প্রার্থীদের তালিকা। প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ দিন ২ মার্চ। পরদিন ৩ মার্চ প্রকাশ করা হবে প্রার্থীর চূড়ান্ত তালিকা। ৫ মার্চ ভোটার তালিকা প্রকাশের পর ১১ মার্চ সকাল ৮টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত অনুষ্ঠানিকভাবে ভোট গ্রহণ চলবে।