Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল, ২০২৪,

ব্রুনাইয়ে প্রতারণা করে শ্রমিক নেয়ার অভিযোগ

প্রিন্ট সংস্করণ॥কাওসার আজম

ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৯, ০৬:৪৯ পিএম


ব্রুনাইয়ে প্রতারণা করে শ্রমিক নেয়ার অভিযোগ

*ব্রুনাইয়ে তিন হাজারেরও বেশি প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশিদের
*শ্রম উইংয়ের ব্যবস্থা গ্রহণেও বেপরোয়া দালালচক্র
*শ্রমবাজারের সামগ্রিক দিক নিয়ে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে শ্রম উইংয়ের চিঠি

ব্রুনাইয়ে বেপরোয়া বাংলাদেশি দালালচক্র। শ্রমিক হিসেবে গেলেও তারা জড়িয়ে পড়ছেন জনশক্তি ব্যবসায়। একটু পুরনো হলেই মালয়, চাইনিজ তথা স্থানীয় নাগরিকদের সামনে রেখে খুলে বসেছেন প্রতিষ্ঠান। যে প্রতিষ্ঠানের মূল ব্যবসা হলো বাংলাদেশ থেকে বেশি অভিবাসনে অল্প বেতনে শ্রমিক নেয়া। নামকাওয়াস্তে গড়ে ওঠা এসব প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ দূতাবাসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তার সিল-স্বাক্ষর জাল করে ভিসা সত্যায়নসহ নানা অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে। শ্রম উইং দালালচক্রের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করলেও বেপরোয়া তারা। স্থানীয় নাগরিকদের সাথে মিলে ক্ষমতার দাপটে তটস্থ রাখে দূতাবাস কর্মকর্তাদের। তবে শ্রম উইংয়ের কর্মকর্তারা বলছেন, দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়ায় আগের চেয়ে প্রতারণা কমেছে ব্রুনাইয়ে। এ কারণে বিদায়ী বছরে অপেক্ষাকৃত কম শ্রমিক গেছেন ব্রুনাইয়ে। জানা যায়, আগে ব্রুনাইয়ের কোনো কোম্পানি থেকে ভিসা বের করেই জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর (বিএমইটি) স্মার্টকার্ড নিয়ে শ্রমিক পাঠানো হতো। এতে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই শ্রমিকরা প্রতারিত হতেন। ঠিকমতো কাজ পেতেন না, বেতন না দেয়া, জুলুম-নির্যাতনসহ নানা প্রতারণার জাল বুঁনেছিল দালালচক্র। ব্রুনাইয়ের বাসিন্দা স্থানীয় মালয়, চাইনিজদের সহযোগিতায় বাংলাদেশি দালালচক্রের থাবায় ভাগ্যান্বেষণে যাওয়াদের জীবনে দুর্বিষহ নেমে আসে। এ অবস্থায় বিগত ২০১৭ সালের আগস্ট থেকে চালু হয় ‘ভিসা সত্যায়ন’ ব্যবস্থা। শ্রমিকের ভিসা বের হওয়ার পর তা সত্যায়নের জন্য পাঠাতে হয় ব্রুনাইস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসে। দূতাবাসের লেবার উইংয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা সংশ্লিষ্ট কোম্পানির ভালো-মন্দ যাচাই বাছাই করেন, বিশেষ করে ওই প্রতিষ্ঠানে শ্রমিক যাওয়ার পর তারা ঠিকমতো কাজ পাবেন কি না, বেতন, থাকা-খাওয়ার সুষ্ঠু পরিবেশ ও নিশ্চিয়তা আছে কি না তা দেখে ‘ভিসা সত্যায়ন’ করেন তারা। কিন্তু এরপরও থেমে নেই দালালচক্রের দৌরাত্ম্য। নানা কায়দায় ‘ভিসা সত্যায়ন’ ছাড়াই শ্রমিক যাচ্ছে ব্রুনাইয়ে। লেবার উইং কর্মকর্তার স্বাক্ষর জাল করে ‘ভিসা সত্যায়ন’ জালিয়াতি ধরা পড়ছে মাঝে মধ্যেই। ভুয়া প্রতিষ্ঠান বা কোম্পানির নামে ভিসা বের করে কিংবা প্রয়োজনের অতিরিক্ত শ্রমিক নিয়ে কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য করছে এক শ্রেণির অসাধু ব্যক্তি। বিপুল টাকা খরচ করে ব্রুনাইতে গিয়ে কাজ পাচ্ছেন না অনেকে। রাস্তায়ও ঘুমাতে হয় তাদের। বাংলাদেশি দালালচক্রের থাবায় বিপর্যস্ত সাধারণ শ্রমিকেরা। এদের নিয়ন্ত্রণে বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম উইং কঠোর হলেও ব্রুনাইয়ের স্থানীয়দের সাথে সম্পর্ক তৈরি করে বেপরোয়া আচারণ করছেন তারা। প্রতারক চক্রের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিলেও কর্মকর্তাদের হুমকি-ধামকির মধ্যে থাকতে হয় প্রতিনিয়ত।

প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়কে চিঠি
বিএমইটির তথ্যানুযায়ী, বিদায়ী ২০১৮ সালে ব্রুনাইতে কর্মী গেছে চার হাজার ৪৮০ জন। আগের বছর তথা ২০১৭ সালে গেছে আট হাজার ৫৮৭ জন, ২০১৬ সালে পাঁচ হাজার ৮৩৬ জন, ২০১৫ সালে ছয় হাজার ৬৩৩ জন। বিদায়ী ২০১৮ সালে ব্রুনাইয়ে জনশক্তি রপ্তানি কি কারণে কমেছে তার ব্যাখ্যা দিতে গত ৪ ফেব্রুয়ারি প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব খান শাহানূর আলম স্বাক্ষরিত এক চিঠিতে ব্রুনাই দূতাবাসের প্রথম সচিবের কাছে জানতে চাওয়া হয়। গত ১১ ফেব্রুয়ারি প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান সচিব বরাবর চিঠি লিখে ২০১৮ সালে ব্রুনাইতে জনশক্তি রপ্তানি কমার ব্যাখ্যা দেন প্রথম সচিব (শ্রম) জিলাল হোসেন। ওই চিঠিতে দালালদের দৌরাত্ম্যের কথাও উঠে আসে।
দুই পৃষ্ঠার এই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ‘... ব্রুনাই দারুসসালাম বাংলাদেশের জন্য একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শ্রমবাজার। প্রায় পাঁচ লাখ জনসংখ্যার তেলসমৃদ্ধ এ দেশে গত তিন বছর ধরে চলমান পাঁচ বিলিয়ন ডলারের অয়েল রিফিাইনারি প্রজেক্ট এবং ৩৭ কিলোমিটার দীর্ঘ টেম্বুরাং ব্রিজ প্রকল্পের মতো বৃহৎ প্রকল্পের কাজ বর্তমানে প্রায় শেষের দিকে। এসব বড় প্রকল্পের অর্থায়নের কারণে এবং বিশ্ববাজারে তেলের দাম কমে যাওয়ায় দেশটিতে সরকারিভাবে গৃহীত অন্যান্য উনয়ন প্রকল্পের কাজ গত কয়েক বছর বন্ধ রাখা হয়েছিল। আশা করা যায়, ২০১৯ সাল থেকে সরকার কর্তৃৃক স্থগিত উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ আবার পুরোদমে চালু হবে এবং ব্রুনাই সরকার গৃহীত ব্রুনাই ওয়ায়াসান ২০৩৫ প্রকল্প এবং চীনের সাথে চুক্তিবদ্ধ বেল্ট অ্যান্ড রোড প্রকল্পের কাজও শুরু হবে। এসব উন্নয়ন প্রকল্পে বাংলাদেশি অভিবাসীদের জন্য ব্যাপক কর্মসংস্থানর সৃষ্টি হবে।শ্রম উইংয়ের চিঠিতে ব্রুনাইয়ে বাংলাদেশি তথাকথিত ম্যানপাওয়ার ব্যবসায়ীদের নেতিবাচক দিকও উঠে আসে। চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, ‘... ২০১৪, ২০১৫ ও ২০১৬ সাল পর্যন্ত ব্রুনাইয়ে বাংলাদেশি শ্রমশক্তি রপ্তানিতে ধারাবাহিকতা লক্ষ করা যায়। বর্ণিত সময়ে বিএমইটির তথ্যমতে, বাংলাদেশ থেকে গড়ে প্রতিবছর ছয় হাজার শ্রমিক ওই দেশে কর্মসংস্থান হয়েছে। ২০১৬ সালের আগে ব্রুনাইতে কোনো বিদেশি নাগরিক ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খুলতে পারত না। ২০১৬ সালের শেষের দিকে ব্রুনাই সরকার বিদেশিদেরকে স্থানীয়দের সাথে যৌথ মালিকানায় কোম্পানি খোলা ও ব্যবসা করার অনুমতি দেয়। ফলে, অসংখ্য প্রবাসী বাঙালি ২০১৬ সালে ওই দেশে কোম্পানি চালু করে, যার সংখ্যা তিন হাজারের অধিক হতে পারে। অনেক বাঙালি মালিকানাধীন কোম্পানির পাশাপাশি অসংখ্য অবাঙালি মালিকানাধীন কোম্পানি ব্রুনাইয়ের লেবার ডিপার্টমেন্ট ও ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্টের যোগসাজসে পর্যাপ্ত কর্মসংস্থান না থাকা সত্ত্বেও প্রচুর ‘প্রবাসী শ্রমিক ভিসা’ বের করে এবং বাংলাদেশ থেকে এ দেশে শ্রমিক আমদানি করে। ফলে কর্মহীন উদ্বৃত্ত শ্রমিকের কারণে এ দেশের শ্রমবাজারে বেতন, শ্রমিক সুবিধা, ইন্স্যুরেন্স সুবিধা ইত্যাদি ক্ষেত্রে ব্যাপক ধস নামে। দালাল এবং প্রতারকচক্রের ভিসা ব্যবসা এবং মানবপাচার কর্মকা- বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষিতে ব্রুনাই শ্রমবাজারে সৃষ্ট বিশৃঙ্খলা দূর করতে মন্ত্রণালয়ের অনুমতিক্রমে ২০১৭ সালের আগস্ট মাস থেকে ব্রুনাইয়ে বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক আমদানির ক্ষেত্রে ভিসা সত্যায়ন ব্যবস্থা চালু করা। হয়। যার প্রভাব পরবর্তী বছরে পড়তে শুরু করে এবং এ দেশে বাংলাদেশের শ্রমবাজারে শৃঙ্খলা ফিরে আসতে শুরু করে। ভিসা সত্যায়ন ব্যবস্থার কারণে লাইসেন্স সর্বস্ব কোম্পানি শ্রমকল্যাণ উইং থেকে ভিসা সত্যায়ন পায়নি। ফলে শ্রমকল্যাণ উইং কর্তৃক শুধু প্রকৃত কোম্পানি; যাদের সরেজমিন উন্নয়ন প্রকল্প বা কর্মসংস্থান সুবিধা আছে তাদেরই, বাংলাদেশ থেকে শ্রমিক আমদানি করতে ভিসা সত্যায়ন করা হয়। শ্রমকল্যাণ উইং শ্রমিকদের কাছ থেকে যেসব অভিযোগ পায় তা অনুসন্ধান করে, এতে দেখা যায় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এসব শ্রমিক ভিসা সত্যায়ন ব্যতীত ওই দেশে প্রবেশ করেছেন। ভিসা সত্যায়ন ব্যতীত কি পরিমাণ শ্রমিক ২০১৮ সালে ব্রুনাইয়ে প্রবেশ করেছে তার কোনো তথ্য শ্রম উইংয়ের (ব্রুনাই) জানা নেই। তবে এ বিভিন্ন সময়ে শ্রম উইং এ শ্রমিকদের দায়েরকৃত অভিযোগ পর্যালোচনায় দেখা যায় যে, ‘ভিসা সত্যায়ন’ ব্যতীত অসংখ্য শ্রমিক ২০১৮ সালে ব্রুনাইয়ে গেছেন।’ এ বিষয়ে কয়েকটি প্রতিবেদন সচিবের অবগতির জন্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে বলেও চিঠিতে বলা হয়। চিঠিতে আরো উল্লেখ করা হয়, ‘... গত ছয় মাসে ভিসা সত্যায়নের জন্য আবেদিত বিভিন্ন কোম্পানির কাজের সাইট শ্রম উইং পরিদর্শনে যায়। এতে দেখা গেছে, আবেদিত অসংখ্য কোম্পানির বাস্তবে কোনো প্রকল্পই নেই। (এর একটি তালিকাও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে দেয়া হয়) এসব ভুতুড়ে কোম্পানির ভিসা শ্রম উইং কর্তৃক সত্যায়ন না করলেও দেখা গেছে, কর্মীরা ভিন্নভাবে দালালচক্রের মাধ্যমে ব্রুনাইতে প্রবেশ করছেন, যার তথ্য শ্রম উইং বা বিএমইটিতে সংরক্ষণের সুযোগ নেই।ব্রুনাই শ্রম উইংয়ের পক্ষ থেকে প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো চিঠিতে বলা হয়, ২০১৮ সালে চার হাজার ৪৮০ জন কর্মী ভিসা সত্যায়ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ব্রুনাইয়ে প্রবেশ করলেও প্রকৃতপক্ষে কী পরিমাণ শ্রমিক একই সময়ে ভিসা সত্যায়ন ব্যতিত ব্রুনাইয়ে প্রবেশ করেছে তার পরিসংখ্যান শ্রম উইং’র অজানা। তবে গত বছরে শ্রম উইংয়ে দায়েরকৃত শ্রম অভিযোগ পর্যলোচনায় দেখা যায়, অভিযোগ দায়েরকারীদের অধিকাংশই ভিসা সত্যায়ন ছাড়া ব্রনাইতে প্রবেশে করেছেন। ফলে, ২০১৮ সালে ভিসা সত্যায়ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আগত শ্রমিক ছাড়াও অসংখ্য শ্রমিক ভিসা সত্যায়ন ব্যতিরেকে এ দেশে কর্মের উদ্দেশে আগমন করেছেন মর্মে সহজেই অনুমান করা যায়।যেহেতু ২০১৯ সালে ব্রুনাই সরকার গৃহীত বৃহৎ প্রকল্পগুলোর কাজ শেষ হবে এবং স্থগিত সরকারি প্রকল্পগুলোর কাজ পুনরায় চালু হওয়াসহ অন্যান্য উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ শুরু হবে, সেহেতু আশা করা যায় যে ২০১৯ সাল এবং পরবর্তী বছরগুলোতে এদেশে বাংলাদেশি প্রবাসী শ্রমিকদের জন্য ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।তবে এ ক্ষেত্রে ব্রুনাই এবং বাংলাদেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত প্রথম ফরেন অফিস কনসাল্টেশনস (এফওসি) এ প্রবাসী কর্মীদের সম্পর্কিত প্রস্তাবনাটি, যা উভয় দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, সে বিষয়ে সদয় দৃষ্টিপাত করা যেতে পারে। ফরেন অফিস কনসালটেশনস এর অনুচ্ছেদ ১২.০ অনুসারে ‘... প্রতারণা, মানবপাচার এবং ব্রুনাইয়ের বাইরের (প্রবাসী) কর্মীদের বেদন সংক্রান্ত বিষয়ে বাংলাদেশ উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। উভয় পক্ষ শ্রম অভিবাসন নৈতিক ও টেকসই করতে বিশেষভাবে বাংলাদেশি শ্রমিকদের চাকরি নিশ্চিত করার জন্য প্রবাসী শ্রমিকদের সম্পর্কিত বিষয়গুলো মোকাবেলায় একত্রে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছে। বৈধ নিয়োগ এজেন্সি এবং উপযুক্ত কর্মসংস্থান ভিসার প্রস্তাবটি উভয় দেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নয়নের ব্যাপারে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে আশা করা হচ্ছে। চিঠিতে বলা হয়, ‘... রাষ্ট্রদূত স্বযং ব্রুনাইয়ের বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদের সাথে কয়েক দফা বৈঠক করছেন। ব্রুনাইয়ের পররাষ্ট্র এবং স্বরাস্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীন দপ্তরগুলো, যেমন লেবার এবং ইমিগ্রেশন ডিপার্টমেন্ট, এ ব্যাপারে এখন তৎপরতামূলক কার্যক্রম আরম্ভ করেছে। অধুনা অনৈতিক অভিবাসন এবং মানব পাচারের সাথে জড়িত কয়েকজন বাংলাদেশির বিরুদ্ধে ব্রুনাই সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হয়েছে। বিশ্ব পরিম-লে ব্রুনাই শান্তিপূর্ণ একটি দেশ হিসেবে সুখ্যাত। এই ভাবমূর্তি অক্ষুণœ রাখতে ব্রুনাই সরকারের অবস্থান অত্যন্ত দৃঢ়। ব্রুনাইতে শরিয়া আইন প্রবর্তন করা হয়েছে। অতএব, এমতাবস্থায় দুষ্টু দালালচক্রের খপ্পরে যাতে বাংলাদেশি কর্মীরা না পড়েন সে বিষয়ে জানাই সরকার রাষ্ট্রদূতকে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলেছেন, যাতে মানবপাচারের ন্যায় জঘণ্যতম অপরাধ তার উৎস্থলেই ধরা পড়ে। এদিকে ভিসা সত্যায়ন বাধ্যতামূলক হলেও সত্যায়ন ছাড়াই বিএমইটির ছাড়পত্র নিয়ে বিভিন্ন সময় শ্রমিক যাওয়ার প্রমাণ পেয়েছে ব্রুনাইতে বাংলাদেশ দূতাবাসের শ্রম উইং। শুধু তাই নয়, শ্রম উইং কর্মকর্তার সিল ও স্বাক্ষর জাল করে ভিসা সত্যায়ননের ঘটনাও ধরা পড়েছে। এসব বিষয় দূতাবাসের পক্ষ থেকে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় ও বিএমইটিকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে বলেও সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। কিন্তু, এরপরও ব্রুনাইতে অবৈধ প্রক্রিয়ায় শ্রমিক যাওয়া বন্ধ হচ্ছে না। ব্রুনাইতে গড়ে ওঠা দালালচক্র নানা কৌশলে শ্রমিক নিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। কাজ ও বেতন না পেয়ে রাস্তায় থাকতে হচ্ছে অনেক বাংলাদেশিকে। ইতোমধ্যে ব্রুনাই দূতাবাসের কর্মকর্তারা দালাল চক্রের বিরুদ্ধে সম্প্রতি কিছু ব্যবস্থাও নিয়েছেন বলে জানা গেছে। শাস্তিস্বরূপ কয়েকজনকে দেশেও পাঠিয়ে দেয়া হয়েছে। আরো কয়েকজন বাংলাদেশি দালালের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে শ্রম উইং সূত্রে জানা গেছে।