Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪,

লড়াই করেই হারল শ্রীলঙ্কা

মার্চ ৮, ২০১৫, ১১:৫৫ এএম


লড়াই করেই হারল শ্রীলঙ্কা

 


৩৭৭ রানের বিশাল লক্ষ্যে খেলতে নেমে লড়াই করেই হেরেছে শ্রীলঙ্কা। কুমার সাঙ্গাকারার অসাধারণ নৈপুন্যে দু’একবার জয়ের সম্ভবনাও জাগিয়েছিল তারা। হ্যামস্ট্রিংয়ের চোটে দিনেশ চান্দিমালকে মাঠ ছাড়তে না হলে ফলাফল উল্টোও হতে পারত।
 
রোববার ‘এ’ গ্রুপের খেলায় সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে টস জিতে ব্যাট করে গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের ঝড়ো ব্যাটিংয়ের সুবাদে ৫০ ওভার শেষে ৩৭৬ রান সংগ্রহ করে অস্ট্রেলিয়া। জবাবে ৩১২ রানে শেষ হয় লঙ্কানদের ইনিংস। ৬৪ রানের জয় পায় অস্ট্রেলিয়া।
 
বিশাল লক্ষ্য তাড়া করতে গিয়ে শুরুতেই উইকেট হারায় শ্রীলঙ্কা। ব্যক্তিগত ১ রানে জনসনের বলে হাডিনের হাতে ক্যাচ দেন এই আসরের অন্যতম সফল ব্যাটসম্যান লাহিরু থিরিমান্নে। এরপর শুরু হয় সাঙ্গাকারা ও দিলশানের তাণ্ডব। দুজনে মিলে ১৯.৫ ওভার খেলে সংগ্রহ করে ১৩০ রান। দলীয় ১৩৫ রানের মাথায় ফাকনারের বলে এলবিডব্লিউ হন দিলশান। এরপর সাঙ্গাকারার সঙ্গে জুটি গড়েন জয়াবর্ধনে।

এই জুটিও অর্ধশত অতিক্রম করলে জয়ের সম্ভবনা জেগে ওঠে লঙ্কানদের সামনে। দলীয় ১৮৮ রানের মাথায় মাইকেল ক্লার্কের অসাধারণ এক থ্রো তে জয়বর্ধনে রান আউট হলে কিছুটা চাপে পড়ে শ্রীলঙ্কা। এর পরপরই ব্যক্তিগত ১০৪ রানে সাঙ্গাকারা আউট হলে অনেকটাই ম্যাচ থেকে ছিটকে পড়ে লঙ্কানরা। তবে এখানেই শেষ নয়। অধিনায়ক অ্যাঞ্জেলা ম্যাথিউসের সঙ্গে জুটি গড়ে আরেকবার জয়ের সম্ভবনা উজ্জ্বল করেন দিনেশ চান্দিমাল। শেষ ১০ ওভারে তাদের লক্ষ্য দাঁড়ায় ১০৫ রান। তবে ভাগ্য হয়তবা লঙ্কানদের পক্ষে ছিল না। দলীয় ২৮১ রানের মাথায় ব্যক্তিগত ৫২ রানে হ্যামস্ট্রিং চোটে মাঠ ছাড়তে হয় চান্দিমালকে। এখানে মূলত শেষ হয় শ্রীলঙ্কার আশা।
 
এর আগে সিডনি ক্রিকেট গ্রাউন্ডে আরো একটা রানের পাহাড় গড়ার কীর্তি গড়লো অস্ট্রেলিয়া। টস জিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৮ উইকেটে ৩৭৬ রান করেছে তারা। ওয়ানডেতে এটা অস্ট্রেলিয়ার চতুর্থ সর্বোচ্চ রান। আর এই রানের নিচে শ্রীলঙ্কাকে চাপা দেওয়ার কীর্তিতে সবার আগে আসে বিশ্বকাপের দ্বিতীয় দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়া গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের নাম। ৫১ বরে ১০০ করেছেন এই ব্যাটিং সেনসেশন।

খুব ভালো খেলছিলেন মাইকেল ক্লার্ক ও স্টিভেন স্মিথ। শ্রীলঙ্কান পেসার কিংবা স্পিনার, কাউকেই পাত্তা দিচ্ছিলেন না। দুজনেই ততক্ষণে ফিফটি করেছেন। মনে হলো, আরো বড় কিছু তাদের কাছ থেকে পাবে অস্ট্রেলিয়া। কিন্তু এমনই সময় জোড়া আঘাত করে শ্রীলঙ্কা। ৬৮ বলে ৬৮ রান করে ক্লার্ক এবং ৮৮ বলে ৭২ রান করে ফেরেন স্মিথ। তিন রানের মধ্যেই তাদের জায়গা হয় ড্রেসিং রুম। তৃতীয় উইকেটে ১৩৪ রানের জুটি গড়েছেন তারা। মনে হয়েছিলো এবার একটু থমকে যাবে অস্ট্রেলিয়া। সেট দুই ব্যাটসম্যানকেই যে হারালো তারা!

কিন্তু কোথায় কি! এরপরই না অস্ট্রেলিয়ার দাপট দেখা গেল আরো। বোলারদের ওপর ক্ষমাহীন নির্দয় হয়ে উঠলেন ম্যাক্সওয়েল। যথার্থ সঙ্গী হবার মর্যাদা ওয়াটসনের। এই দুজনের জুটিটা দ্রুত ছুটতে থাকে। লাগামটটা মোটে হাতে নিতে পারছিলো না শ্রীলঙ্কা। দেখতে না দেখতে ২৬ বলে ফিফটি হয়ে যায় ম্যাক্সওয়েলের। ওয়াটসন আক্রমণ একটু কম করেছেন। কিন্তু যতটুকু করেছেন ততটাই যথেষ্ট হয়েছে শ্রীলঙ্কানদের ভোগাতে।

এর মধ্যেই ৯০ রানের ঘরে পা রাখলেন ম্যাক্সওয়েল। ৯৩ রানে তখন তিনি। উইকেটে পেছনে একটা ক্যাচ তুলে দিলেন। দৌড়ে গিয়ে ক্যাচটা নিতে চেষ্টা করলেন সাঙ্গাকারা। কিন্তু হাতে নিয়েও তা রাখতে পারলেন না। জীবন পেলেন ম্যাক্সওয়েল। আর ঝুঁকি নিলেন না। আগের ম্যাচেই ৮৮ রান করে আউট হয়েছেন। কদিন আগে ৯৫ রানে ফিরেছেন। এবার আর সেঞ্চুরিটাকে মিস হতে দিলেন না। একটু ধীর হয়েছিলেন বলেই ৫০ বলে কেভিন ও’ব্রায়েনের দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ডটা ভাংতে পারলেন না। তবে ৫১ বলে সেঞ্চুরি করে বিশ্বকাপের দ্বিতীয় দ্রুততম সেঞ্চুরির মালিক এখন ম্যাক্সওয়েল। ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি তার চোখে এনেছে জল। আর সেঞ্চুরির পরই শেষ হয়েছে ৫৩ বলে ১০টি চার ও ৪টি ছক্কায় সাজানো তার ১০২ রানের বীরোচিত ইনিংস।

যাদুকরী এক ইনিংস খেলেছেন ম্যাক্সওয়েল। ওয়াটসনের সাথে হয়েছে ৮২ বলে ১৬০ রানের জুটি। আর কি চাই অস্ট্রেলিয়ার! শেষটায় আরো আক্রমণ চালিয়ে ৪১ বলে ৬৭ রান করে ফিরেছেন ওয়াটসন। আর তাদের আগে তো ক্লার্ক ও স্মিথ মিলে দিয়েছেন দারুণ এক ভিত্তি।

শ্রীলঙ্কা একাদশ:
অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস (অধিনায়ক), লাহিরু থিরিমান্নে, তিলকারত্মে দিলশান, কুমার সাঙ্গাকারা, মাহেলা জয়াবর্ধনে, দিনেশ চান্দিমাল, উপল থারাঙ্গা, থিসারা পেরেরা, সিকুগে প্রসন্ন, সচিত্রা সেনানায়েকে ও লাসিথ মালিঙ্গা।

অস্ট্রেলিয়া দল:
মাইকেল ক্লার্ক (অধিনায়ক), অ্যারন ফিঞ্চ, ডেভিড ওয়ার্নার, শেন ওয়াটসন, স্টিভেন স্মিথ, গ্লেন ম্যাক্সওয়েল, জেমস ফকনার, ব্রাড হাডিন, মিশেল জনসন, মিশেল স্টার্ক ও জাভিয়ার দোহার্তি।