Amar Sangbad
ঢাকা শনিবার, ২০ এপ্রিল, ২০২৪,

কতটা পূরণ হয়েছে দাবি

রাজিবুল ইসলাম

অক্টোবর ২১, ২০২০, ০৭:৪৯ পিএম


কতটা পূরণ হয়েছে দাবি

বিভিন্ন দাবি-দাওয়া নিয়ে সংবাদ সম্মেলনে আসছেন ক্রিকেটাররা। ২১ অক্টোবর ২০১৯। হঠাৎ-ই খবরটা আসে। বোর্ডের সঙ্গে ক্রিকেটারদের বিদ্রোহ— এ গুঞ্জন চলতে থাকে সংবাদকর্মীদের মধ্যে। শেষ পর্যন্ত সংবাদ সম্মেলনে বিসিবির কাছে ১১ দাবি পেশ করে ধর্মঘটের ডাক দেন ক্রিকেটাররা। ২৪ ঘণ্টা পর যুক্ত করা হয় আরো দুই চাওয়া।

পরবর্তীতে দেশের ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিসিবির সঙ্গে আলোচনায় বসে সমঝোতা করেন ক্রিকেটাররা। দ্রুতই মাঠে ফেরেন তারা। কিন্তু গত এক বছরে ক্রিকেটারদের সেই ১৩ দফা দাবির কতটা পূরণ হয়েছে? দেখে নেয়া যাক তামিম-সাকিবদের সেই দাবিগুলো...

দাবি ১, আমাদের প্রথম দাবি হচ্ছে কোয়াব (ক্রিকেটার্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ) বিলুপ্তি করতে হবে। বর্তমানে এর কোনো কার্যক্রম চোখে পড়ে না। কোয়াব ক্রিকেটারদের প্রতিনিধি হলেও ওইভাবে কখনোই আমরা আমাদের পাশে তাদের পাইনি।

দাবি ২, গত কয়েক বছর ধরেই আপনারা জানেন প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের পরিস্থিতি কেমন। সব ক্রিকেটারই এ ব্যাপারে অসন্তোষ প্রকাশ করছে— যেভাবে প্রিমিয়ার লিগ হচ্ছে। কারণ এখানে পারিশ্রমিকের একটা মানদণ্ড বেঁধে দেয়া হচ্ছে। খেলোয়াড়রা আগে বাছাই করতে পারত, কোন দলে খেলবে, পারিশ্রমিক কেমন হবে।

দাবি ৩, আমরা জানি, এ বছর বিপিএল অন্যরকম হচ্ছে। সেটা অবশ্যই সম্মান করি। আমাদের প্রধান দাবি হলো, আগের নিয়মের বিপিএল যেন আগামী বছর থেকে চলে আসে। আর মূল দাবি হলো, বিদেশি খেলোয়াড়দের সঙ্গে আমাদের স্থানীয় খেলোয়াড়দের অনেক পার্থক্য থাকে। আগামীতে যেন সামঞ্জস্য থাকে।

দাবি ৪, আমরা সবাই মিলে মনে করেছি এটা (প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটারদের ম্যাচ ফি) এক লাখ টাকা হওয়া উচিত। আমাদের প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটারদের বেতন ৫০ ভাগ বাড়াতে হবে। খেলোয়াড়দের প্র্যাকটিস ফ্যাসিলিটিজ বাড়াতে হবে, সেটা জিম, ইনডোর মাঠ- সব জায়গাতেই।
১২ মাস কোচ, ফিজিও, ট্রেনার রাখতে হবে; তারাই আসলে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটারদের একটা পরিকল্পনা দেবেন।

দাবি ৫, আমরা যে বল দিয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলি সেটা মানসম্মত হয় না। এমন বলে খেললে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে আবার নতুন ধরনের বলের সাথে মানাতে কষ্ট হয়। ক্রিকেটারদের দৈনিক ভাতা ১৫০০ টাকা থেকে বাড়াতে হবে। কারণ বিসিবি যে ফিটনেস লেভেল দাবি করছে ১৫০০ টাকায় পুষ্টিকর খাবার সরবরাহ করা হয় না ক্রিকেটারদের।

দাবি ৬, জাতীয় দলের চুক্তিভুক্ত ক্রিকেটারের সংখ্যা বাড়াতে হবে। বিশ্বব্যাপী যদি চিন্তা করেন বাংলাদেশের চুক্তিভুক্ত ক্রিকেটারের সংখ্যা কম। আমাদের কাছে মনে হয় চুক্তিভুক্ত ক্রিকেটারের সংখ্যা ৩০ জন করা উচিত এবং তা করতেই হবে। পাশাপাশি বেতন বাড়াতে হবে।

দাবি ৭, শুধু ক্রিকেটারদের নিয়েই নয়। আপনি গ্রাউন্ডসম্যানদের কথা চিন্তা করেন। সে কী ধরনের বেতন পায় বিসিবি থেকে তার কাজ অনুপাতে। সারাদিন মাঠে কাজ করে মাস শেষে মাত্র পাঁচ হাজার টাকা বেতন পাচ্ছে। আপনি যদি দেখেন আমরা নিজেরাই বাঙালি কোচদের প্রোমোট করতে চাই না। বিদেশি একটা কোচ যে টাকা বেতন পায় আমাদের হয়তো ২০ জন কোচ তা পায় না। আম্পায়ারিং নিয়ে আমরা সবাই অভিযোগ করি। আম্পায়ারদের জীবনের নিরাপত্তা দিতে হবে টাকা দিয়ে।

দাবি ৮, আমরা দুটো চার দিনের আসর খেলি, বিসিএল এবং এনসিএল। কিন্তু প্রিমিয়ার লিগের ওয়ানডে ভার্সনে আমরা মাত্র একটি আসর খেলি (ঢাকা প্রিমিয়ার লিগ)। আমাদের আরেকটি আসর বাড়ানো উচিত। দাবি ৯, ঘরোয়া আসরের ক্ষেত্রে আমাদের একটি সুনির্দিষ্ট ক্যালেন্ডার থাকতে হবে।
তাতে আমরা যেনো প্রস্তুতি নিতে পারি সারা বছরের।

দাবি ১০, দশ নম্বর পয়েন্ট হচ্ছে বিপিএল-প্রিমিয়ার লিগের টাকাটা আমরা যেনো নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পাই। যেমন শেষ প্রিমিয়ার লিগে আমরা যারা ব্রাদার্স ইউনিয়নের হয়ে খেলেছি, এখনো ৪০ ভাগ টাকা পাই নাই। বোর্ডে অনেকবার যাওয়া হয়েছে, কোয়াবকেও অনেকবার বলা হয়েছে।

দাবি ১১, ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের একটি নিয়ম বেঁধে দেয়া আছে যে দুটির বেশি খেলতে পারব না। এখন জাতীয় দলে খেলার বাইরে যে সময়টা আমরা পাই তখন যদি আমরা ফ্রি থাকি তাহলে যেনো বাইরে খেলতে যেতে পারি, তাহলে আমাদের খেলাও হবে, অনেককিছু শেখাও হবে।

দাবি ১২, রাজস্ব আয়ে আমরা একটা স্বচ্ছ অংশ চাই। প্রফেশনাল ক্রিকেটার্স অ্যাসোসিয়েশনের সঙ্গে সমঝোতা করে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড লাভের একটা অংশ ক্রিকেটারদের দিবে।

দাবি ১৩, বাংলাদেশ নারী ক্রিকেটারা সমপ্রতি ভালো পারফর্ম করছে। পুরুষদের মতো নারীদের ক্রিকেটেও এই সংস্কারগুলো হওয়া দরকার। বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে নারীদেরও তাদের লাভের হিস্যা দিতে হবে। ক্রিকেট লিঙ্গ বৈষম্য দূর করে পুরুষ ক্রিকেটাররা যে সুযোগ-সুবিধা পেয়ে থাকে তার সব দিতে নারী ক্রিকেটারদেরকেও।

আমারসংবাদ/এসটিএম