Amar Sangbad
ঢাকা শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪,

২৪৮ রানে অলআউট দক্ষিণ আফ্রিকা

জুলাই ২১, ২০১৫, ০৩:১৬ পিএম


২৪৮ রানে অলআউট দক্ষিণ আফ্রিকা

অসাধারণ প্রত্যাবর্তনের গল্প লিখে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকাকে মাত্র ২৪৮ রানে আটকে ফেললো স্বাগতিক বাংলাদেশ। মুস্তাফিজুর রহমান ও জুবায়ের হোসেনের দুর্দান্ত বোলিংয়ের নৈপূণ্যে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকা ২৪৮ রানে গুটিয়ে যায়।

বাংলাদেশের হয়ে মুস্তাফিজুর রহমান ৪টি ও জুবায়ের হোসেন নেন ৩টি উইকেট। সমান ১টি করে উইকেট লাভ করেন সাকিব আল হাসান, তাইজুল ইসলাম ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ।

ওয়ানডেতে বাংলাদেশ ধারাবাহিক উন্নতি করলেও টেস্টে সেই তুলনায় মুশফিকদের উন্নতি চোখে পড়ার মতো নয়। ওয়ানডের আত্মবিশ্বাসকে কাজে লাগিয়ে এবার টাইগাররা টেস্টেও জ্বলে উঠার অপেক্ষায় রয়েছে।


একসময় দক্ষিণ আফ্রিকার সংগ্রহ ছিল ৩ উইকেটে ১৭৩ রান। সেখান থেকে মুস্তাফিজ ও জুবায়েরের তোপে পড়ে ৬৫ রানে শেষ ৭ উইকেট হারিয়ে মাত্র ২৪৮ রানে গুটিয়ে যায় প্রোটিয়ারা।

প্রথমদিকে দক্ষিণ আফ্রিকার আধিপত্য থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ম্যাচের ধীরে ধীরে ম্যাচের নিযন্ত্রণ নিতে থাকে স্বাগতিক বাংলাদেশ। লাঞ্চের পর তাইজুল ও সাকিবের জোড়া আঘাতের পর চা বিরতির পর জ্বলে উঠলেন টেস্ট অভিষিক্ত মুস্তাফিজুর রহমান। এক ওভারে তিন উইকেট নিয়ে সফরকারীদের ধসিযে দেন তিনি।

এরপর সপ্তম উইকেটে টেম্বা বাভুমা ও ফিলান্ডার বিপজ্জনক হয়ে উঠার আগেই ফিল্যান্ডারকে সাজঘরে ফিরিয়ে টাইগারদের চালকের আসনে রাখেন জুবায়ের। কিছুক্ষণ পর ফের প্রোটিয়া শিবিরে আঘাত হানেন জুবায়ের। এক ওভারে দুজনকে সাজঘরে ফেরান তিনি। মুস্তাফিজ ও জুবায়েরের নৈপূণ্যে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ এখন টাইগারদের হাতে।


ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুটা দুর্দান্ত করে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকা। দুই ওপেনার স্টিয়ান ফন জিল ও ডিন এলগার ওপেনিং জুটিতে প্রোটিয়াদের ৫৮ রান এনে দেন। এরপর দ্রুত রান তুলতে থাকা দক্ষিণ আফ্রিকান ইনিংসের লাগাম টেনে ধরেন মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। ক্রমেই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠা ফন জিলকে দলীয় ১৪ ও ব্যক্তিগত দ্বিতীয় ওভারে আউট করে সাজঘরে ফেরান মাহমুদুল্লাহ।

তবে ৫৮ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর দ্বিতীয় উইকেটে ঘুরে দাঁড়িয়েছে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকা। দ্বিতীয় উইকেটে ডিন এলগার ও ডু প্লেসিসের জুটিতে ম্যাচে ফেরে সফরকারীরা। অসাধারণ জুটিতে দলকে বড় সংগ্রহের পথে নিয়ে যান এই দুজন। তবে এরপর তাইজুল ও সাকিবের জোড়া আঘাতে ম্যাচে ফেরে বাংলাদেশ।


দলীয় ৪৭তম ওভারের পঞ্চম বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন ডিন এলগার। প্রথমবার ক্যাচ ধরতে ব্যর্থ হলেও দ্বিতীয় প্রচেষ্টায় ক্যাচ লুফে নেন লিটন কুমার দাস। পরের ওভারের প্রথম বলে সাকিবের ঘূর্ণিতে নাকাল হয়ে লেগ বিফোরের ফাঁদে পড়েন ফ্যাফ ডু প্লেসিস। এলগারের (৪৭) পর প্লেসিসও (৪৮) একটুর জন্য হাফ সেঞ্চুরি মিস করেন। এর আগে ফন জিল ফিরে গেছেন ৩৪ রান করে।

এরপর চতুর্থ উইকেটে টেম্বা বাভুমা ও হাশিম আমলার জুটিতে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা করে সফরকারী দক্ষিণ আফ্রিকা। তবে টেস্ট অভিষিক্ত মুস্তাফিজুর রহমান এবার জ্বলে উঠলেন। ক্রমেই ভয়ঙ্কর হয়ে উঠা হাশিম আমলাকে ফিরিয়ে বাংলাদেশকে ফের ম্যাচে ফিরিয়ে আনেন। মুস্তাফিজের করা ৬০তম ওভারের প্রথম বলে আমলা উইকেটের পেছনে লিটন দাসকে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন প্রোটিয়া অধিনায়ক।


চমকের তখনও বাকি ছিল। দ্বিতীয় বলে জেপি ডুমিনিকে আউট করে হ্যাটট্টিকের সম্ভাবনা জাগিয়ে তোলেন মুস্তাইফজুর রহমান। তৃতীয় বলটি কোনো রকম ঠেকিয়ে মুস্তাফিজকে হ্যাটট্টিকবঞ্চিত করলেও পরের বলে আর রক্ষা হয়নি কুইন্টন ডি ককের। সরাসরি বোল্ড হয়ে তিনিও সাজঘরে ফিরলেন।

এরপর সপ্তম উইকেটে টেম্বা বাভুমা ও ফিলান্ডার মিলে ৩৫ রানের জুটি গড়েন। কিন্তু জুবায়েরের আঘাতে ফের ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ নেয় বাংলাদেশ। জুবায়েরের ফ্লাইট বলে বিভ্রান্ত হয়ে প্রথম স্লিপে ক্যাচ তুলে দেন ফিল্যান্ডার। নিচু হয়ে দুর্দান্ত দৃঢ়তায় ক্যাচটি লুফে নেন সাকিব আল হাসান।


কিছুক্ষণ পর জুবায়েরের বলে মুমিনুলকে ক্যাচ দিয়ে সাজঘরে ফেরেন সিমন হার্মার। শর্ট লেগ থেকে কভারে দৌড়ে গিয়ে অসাধারণ ‍দৃঢ়তায় ক্যাচটি লুফে নেন মুমিনুল। এরপর ক্রিজে এসে প্রথম বল থেকে ২ রান নেন ডেল স্টেইন। কিন্তু জুবায়েরের করা পরের বলেই তামিম ইকবালকে ক্যাচ দিয়ে তিনিও সাজঘরে ফেরেন। এরপর আক্রমণে এসে একপ্রান্ত আগলে রাখা বাভুমাকে আউট করে প্রোটিয়াদের ইনিংস ২৪৮ রানে আটকে রাখেন মুস্তাফিজ। মুস্তাফিজের করা বলে কাট করতে গিয়ে ডিপ মিড-উইকেটে জুবায়েরকে ক্যাচ দেন বাভুমা।


চট্টগ্রাম টেস্টের দল থেকে শুভাগত হোম চৌধুরী ও সৌম্য সরকার বাদ পড়েছেন। এই দুজনের পরিবর্তে যথাক্রমে মুস্তাফিজুর রহমান ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ দলে ঢুকেছেন। পেসার রুবেল হোসেনও একাদশে জায়গা পাননি। তার পরিবর্তে মোহাম্মদ শহীদের ওপরই আস্থা রেখেছেন নির্বাচকরা।

বাংলাদেশ দল: মুশফিকুর রহিম (অধিনায়ক) তামিম ইকবাল, ইমরুল কায়েস, জুবায়ের হোসেন, লিটস দাস, মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ, মোহাম্মদ শহীদ, মুমিনুল হক, মুস্তাফিজুর রহমান, সাকিব আল হাসান ও তাইজুল ইসলাম।

দক্ষিণ আফ্রিকা দল: ডিন এলগার, ফন জিল, ফ্যাফ ডু প্লেসিস হাশিম আমলা, টেম্বা বাভুমা, কুইন্টন ডি কক, জেপি ডুমিনি, ভারনন ফিল্যান্ডার, ডেল স্টেইন, সিমন হার্মার ও মরনে মরকেল।