Amar Sangbad
ঢাকা বুধবার, ২৪ এপ্রিল, ২০২৪,

নাসিরের স্ত্রীর স্বামী রাকিবের পাশে পুরুষ অধিকার সংগঠন

নিজস্ব প্রতিবেদক

ফেব্রুয়ারি ২২, ২০২১, ০৮:১০ এএম


নাসিরের স্ত্রীর স্বামী রাকিবের পাশে পুরুষ অধিকার সংগঠন

ক্রিকেটার নাসির হোসেন ও কেবিন ক্রু তামিমা তাম্মির বিয়েকাণ্ডে আগের স্বামী রাকিব হাসানের পাশে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছে ‘এইড ফর মেন ফাউন্ডেশন’।

পুরুষ অধিকার নিয়ে কাজ করা সংগঠনটির নেতৃবৃন্দ ইতোমধ্যে রাকিবের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। তাকে আইনগত সহায়তা দেওয়ার পাশাপাশি যেকোনো যৌক্তিক সহায়তায় পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছে সংগঠনটি।

এইড ফর মেন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক সাইফুল ইসলাম নাদিম গণমাধ্যমকে বলেন, রকিব হাসানের স্ত্রী তামিমা তাম্মী তার স্বামীকে ডিভোর্স না দিয়েই ক্রিকেটার নাসিরকে বিয়ে করেছেন। যা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। এ ইস্যুতে নাসির ও তামিমা প্রভাবশালী হওয়ায় রাকিবকে বিভিন্ন রকমের হুমকি ধমকি দিচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে আমরা রাকিব হাসানের পাশেই আছি।

তিনি আরো বলেন, রোববার (২১ ফেব্রুয়ারি) সন্ধ্যায় আমরা সংগঠনের পক্ষ থেকে ভিক্টিম রাকিব হাসানের সঙ্গে দেখা করি এবং তার পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছি।

ভ্যালেন্টাইনস ডেতে কেবিন ক্রু তামিমা তাম্মিকে বিয়ে করেন নাসির। কিন্তু এক সপ্তাহ পূর্ণ না হতেই জানা যায় নাসিরপত্নীর আগে আরেকটি বিয়ে হয়েছিল। ৮ বছর বয়সী মেয়ে স্বামী রাকিব হাসানকে ফেলে নাসিরকে জীবনসঙ্গী করেন তাম্মি।

রাকিবের দাবি, তামিমা তাকে ডিভোর্স না দিয়েই নাসিরকে বিয়ে করেছেন।  

এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার রাতে উত্তরা পশ্চিম থানায় একটি জিডি করেন রাকিব। উত্তরা পশ্চিম থানার ওসি শাহ মো. আক্তারুজ্জামান ইলিয়াস জিডির বিষয়টি এরই মধ্যে গণমাধ্যমকে নিশ্চত করেছেন।

জিডি সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালে তামিমা তাম্মিকে বিয়ে করেন রাকিব। দাম্পত্য জীবনে তাদের একটি মেয়ে রয়েছে। এর মধ্যেই তামিমা অন্য এক ছেলের সঙ্গে সম্পর্কে জড়ায়। সেখানে ছয় মাস সংসার করার পর ফিরে আসে।

পরে রাকিবের সঙ্গে ক্ষমা চেয়ে পার পায়। কিন্তু গত ১৪ ফেব্রুয়ারি নতুন করে ক্রিকেটার নাসিরের সঙ্গে ছবি ভাইরাল হলে রাকিব জানতে পারেন, তামিমা আবার বিয়ে করেছেন।

মুসলিম আইন অনুযায়ী, এ রকম বিয়ে বাতিল বা অবৈধ বিবাহ বলে গণ্য হবে। বিধান অনুযায়ী, ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধির ৪৯৪ ধারায় বলা আছে, পূর্বের বিয়ে থাকা অবস্থায় কোনো স্ত্রী একাধিক বিয়েতে আবদ্ধ হলে ৭ (সাত) বছর কারাদণ্ড, অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ড হতে পারে, আর ৪৯৫ ধারায় বলা আছে যদি পূর্বের বিয়ে গোপন করে তাহলে ১০ বছর কারাদণ্ড এবং অর্থদণ্ড অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হবে।

তবে ৪৯৪ ধারার একটা ব্যতিক্রম ছিল, যদি সাত বছর ধরে স্বামী নিরুদ্দেশ থাকে এবং জীবিত আছে এ রকম কোনো সন্ধান না পাওয়া যায় তাহলে দ্বিতীয় বিয়ে করতে পারবে। শর্ত হলো, নতুন বিয়েতে পূর্বের বিয়ের সকল ঘটনা সুস্পষ্টভাবে বলতে হবে।

এদিকে স্বামীও যদি একই কাজ করেন তাহলে তার জন্যও এটা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। প্রথম স্ত্রীর অনুমতি না নিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে ও তার ভরণপোষণ না দেয়া একটি ফৌজদারি অপরাধ।

মুসলিম পারিবারিক আইন অধ্যাদেশ ১৯৬১-এর ৬ ধারামতে, দ্বিতীয় বিয়ের ক্ষেত্রে সালিশি পরিষদের কাছে অনুমতি না নিলে বিয়ে নিবন্ধন হবে না। আর তাই প্রথম স্ত্রীর অনুমতি না নিয়ে দ্বিতীয় বিয়ে অবৈধ বলে গণ্য হবে।

এ অবস্থায় প্রতিকার পেতে ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দণ্ডবিধি আইন-১৮৬০-এর ৪৯৪-এর বিধানমতে মামলা করতে পারেন। এ সময় স্বামী দ্বিতীয় বিয়ের কাবিননামা আদালতে দেখাতে হবে। এক্ষেত্রে স্বামীর অপরাধ প্রমাণিত হলে সাত বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড ও অর্থদণ্ডে দণ্ডিত হবেন।

এছাড়াও ৪৯৭ ধারায় বলা হয়েছে কেউ যদি অন্যের স্ত্রীরের সাথে শারিরীক সম্পর্কে জড়িত থাকেন তাহলে এটি একটি আইনগত অপরাধ। এবং এর জন্য ৫ বছরের জেল অথবা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ড হতে পারে। অর্থাৎ যেহেতু নাসির এবং রাকিবের ফোনালাপ থেকে স্পষ্ট নাসির তামিমার আগের বিয়ে এবং সংসার নিয়ে সবই জানতেন সেহেতু ৪৯৭ ধারায় নাসিরের ৫ বছরের জেল অথবা অর্থদণ্ড বা উভয়দণ্ড হতে পারে।

আমারসংবাদ/জেআই